সফটওয়্যার-বিতর্কে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল মেডিক্যালে স্নাতকোত্তরে সুযোগ পাওয়া রাজ্যের ৫১৫ জন পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ।
তাঁদের ‘অনলাইন কাউন্সেলিং’-এর সময় যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছিল, তাতে ত্রুটি ছিল বলে জানিয়ে ওই কাউন্সেলিং বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। নতুন করে কাউন্সেলিং করতে বলা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী সোমবার তার প্রথম শুনানি। এ দিকে, মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে কাউন্সেলিং ও ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সব মিলিয়ে তাই অথৈ জলে পড়েছেন পড়ুয়ারা।
সফটওয়্যারে ত্রুটির অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অশোককুমার দাস অধিকারীর এজলাসে মামলা দায়ের করেছিলেন সরকারি চিকিৎসক সোমা চৌধুরী। চলতি বছরে স্নাতকোত্তর স্তরের প্রবেশিকায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন সোমা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ডিপ্লোমা দু’ধরনের পঠনপাঠনের জন্যই আবেদন করতে পারেন। কিন্তু সোমার অভিযোগ ছিল, অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের সময় তিনি যখন তাঁর পছন্দের ‘ডিপ্লোমা কোর্স’টি নির্বাচন করতে যান, তখন সফটওয়্যারটি তা নেয়নি। সোমা দাবি করেন, সফটওয়্যারটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল।
বিচারপতি দাস অধিকারী নির্দেশ দেন সফটওয়্যারটি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে, এমন কাউকে আদালতে হাজির করুন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে আসেন গ্রন্থাগারিক। কিন্তু তাঁর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়নি হাইকোর্ট। গত ৮ এপ্রিল বিচারপতি দাস অধিকারী রায় দেন, ত্রুটিপূর্ণ ছিল সফটওয়্যার। তা শুধরে নতুন করে শুরু হোক কাউন্সেলিং।
স্নাতকোত্তরে ইতিমধ্যে সুযোগ পাওয়া মেডিক্যাল পড়ুয়ারা এতে ক্ষুব্ধ। এ জন্য তাঁরা দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কেই। তাঁদের প্রশ্ন, “এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারিককে কেন পাঠাল?” পড়ুয়াদের আশঙ্কা, নতুন করে কাউন্সেলিং শুরু হলে যদি তা ১০ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ না হয় তা হলে তো সব মেহনত জলে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আশাবাদী। বললেন, “ডিভিশন বেঞ্চে নিশ্চয়ই প্রমাণ হয়ে যাবে যে সফটওয়্যার ত্রুটিপূর্ণ ছিল না।” কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের রায় কেন এ রকম হল? তা হলে কি গাফিলতির অভিযোগই ঠিক? অমিতবাবুর কথায়, “হাইকোর্ট কোনও দক্ষ কর্মীকে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছিল। আর আমাদের গ্রন্থাগারিক এ ব্যাপারে যে পারদর্শী, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।”
অমিতবাবুর আরও দাবি, সফটওয়্যারটিও ত্রুটিহীন ছিল। “নিয়ম অনুযায়ী কোনও সরকারি ডাক্তারের এক বার ডিপ্লোমা করা থাকলে, তিনি দ্বিতীয় বার ডিপ্লোমার জন্য আবেদন করতে পারেন না। সোমা ২০০১-এ ডিপ্লোমা করেছিলেন। তাই অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের সময় সফটওয়্যারটি তাঁর পছন্দ গ্রহণ করেনি।”
এত কিছুর পরেও প্রশ্ন থাকছে, ১০ জুলাইয়ের মধ্যে সব মিটে যাবে তো? না হলে কী হবে? উপাচার্য খানিকটা এড়িয়ে গিয়ে জবাব দেন, “অনুমানের মধ্যে আমরা এখনই যাব না। দেখা যাক কী হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy