ডেঙ্গি আক্রান্ত দুই রোগীকে মশারি ছাড়া অন্য সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ, ডেঙ্গি আক্রান্ত দুই রোগীকে মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগে অন্য সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। যে কোনও সময় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হঠাৎ আইসিইউ বা ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হলে নতুন ভবনে সে সুবিধা রয়েছে। তাই ওই দু’জনকে ওখানে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার থানার বনপাশ গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের মানসকুমার ঘোষ গত মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর পরিজনেরা জানান, বিএসএফের অ্যাকাউন্টস বিভাগের কর্মী মানসবাবু কলকাতার বাবুঘাট অফিসে কর্মরত। সপ্তাহ খানেক আগে জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। জ্বর না কমায় কলকাতায় একটি বেসরকারি বিধাননগরে নার্সিংহোমে চিকিৎসাও করান। পরীক্ষা করে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান ডেঙ্গি হয়েছে তাঁর। এরপরে জ্বর নিয়েই ভাতারে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। মানসবাবু বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে জ্বর বাড়ে। তাই এখানে ভর্তি হয়েছি।’’ অন্য দিকে আসানসোলের বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক ব্যবসায়ী সন্তোষকুমার বনোয়ার জানান, এক মাস ধরে জ্বর নিয়ে ভুগছেন। রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। তারপর থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ডেঙ্গি আক্রান্ত ওই দুই রোগীকে নতুন ভবনের দোতলায় নাক-কান-গলা বিভাগে অন্য রোগীদের সঙ্গে রাখা নিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘‘সাধারণ রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গি আক্রান্তেরা থাকায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। কিন্তু কিছু বলতে পারছি না।’’
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহার অবশ্য দাবি, ওই দুই রোগী নিরাপদেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জরুরি ওষুধপত্র দিয়ে ওঁদের চিকিৎসা চলছে। তবে হঠাৎ যদি আইসিসিইউ কিংবা ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে ওই ভবনে জরুরি চিকিৎসা পরিকাঠামো রয়েছে। সে জন্যই ওই দু’জনকে ওখানে রাখা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। কিন্তু মশারি নেই কেন? অমিতাভবাবুর দাবি। ‘‘সংক্রমণ যাতে কোনও ভাবে না হয় তার জন্য ওঁদের মশারির মধ্যে রাখার কথা। কেন রাখা হয়নি সেই ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য ও জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিসও বলেন, ‘‘হাসপাতালে ডেঙ্গি ওয়ার্ড বলে আলাদা কিছু নেই। রোগীরা আক্রান্ত হলে তাদের সাধারণ ওয়ার্ডের এক পাশেই বিশেষ ভাবে রাখা হয়। ওই রোগীদের অবস্থা ভাল বলেই জেনেছি। তবু সব সময় পর্যবেক্ষণে রেখে ওঁদের চিকিৎসা চলছে বলে জেনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy