Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সুপারের বদলি, ফের আন্দোলনের হুমকি

নাগরিক মঞ্চ গড়ে হাসপাতাল সুপারের বদলি রোখার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন বাসিন্দারা। তাঁর বদলি হবে না, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এই আশ্বাস পেয়ে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। মাস দু’য়েক পরে তাঁর বদলি হওয়ার খবর পেয়ে ফের আন্দোলনের ‘হুমকি’ দিল চাঁচল নাগরিক মঞ্চ। চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুবর্ণ গোস্বামী সোমবার বাঁকুড়ায় অতিরিক্ত সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পদে যোগ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

নাগরিক মঞ্চ গড়ে হাসপাতাল সুপারের বদলি রোখার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন বাসিন্দারা। তাঁর বদলি হবে না, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এই আশ্বাস পেয়ে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। মাস দু’য়েক পরে তাঁর বদলি হওয়ার খবর পেয়ে ফের আন্দোলনের ‘হুমকি’ দিল চাঁচল নাগরিক মঞ্চ।

চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুবর্ণ গোস্বামী সোমবার বাঁকুড়ায় অতিরিক্ত সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পদে যোগ দেন। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে নাগরিক মঞ্চ। ওই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক দেবব্রত ভোজ ও মনওয়ারুল আলম বলেন, “আমাদের আন্দোলনের সময়ে বলা হয়, বদলির নির্দেশ রদ করা হবে। কিন্তু সেই আশ্বাস যে মিথ্যে তা বোঝা গেল। ভোটের পরে আমরা অবরোধ, বন্ধ-সহ নানা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” সুবর্ণবাবু বলেন, “সরকারি কর্মী হিসেবে নির্দেশ পালনে আমি বাধ্য।”

গত বছর অক্টোবর মাসে চাঁচল হাসপাতালে সুপার পদে কাজে যোগ দেন সুবর্ণবাবু। মাস তিনেক বাদে তাঁর বদলির নির্দেশ ঘিরে আন্দোলনে নামে নাগরিক মঞ্চ। বদলি রুখতে জাতীয়, রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়। গত ৭ ফেব্রুয়ারি চাঁচল হাসপাতালে এসিএমওএইচ, বিএমওএইচকে ঘেরাও করে টানা বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই রাতে স্বাস্থ্যভবন থেকে বদলির সিদ্ধান্ত রদ করার কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। সেই সিদ্ধান্তের কথা মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মাইকে ঘোষণা করার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এখন প্রশাসন কী বলছে? মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন বদলি নিয়ে যা বলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলবেন।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডলের বক্তব্য, “আমরা কিছু করিনি। সুপারের বদলি রদ ও পরে বদলি, যা করার স্বাস্থ্য ভবন থেকেই করা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন থেকেই শুনেছি, চাঁচলে সুপার পদের অনুমোদন ছিল না। তাই তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কোনও নথিপত্র নেই। যা বলার স্বাস্থ্য অধিকর্তাই বলতে পারবেন। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বিএমওএইচ-ই হাসপাতালের কাজ চালাবেন।”

২০১০ সালে এটি মহকুমা হাসপাতাল হয়েছে। এতদিনেও সুপার পদের অনুমোদন হয়নি শুনে বিস্মিত চাঁচল (১) ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের হাল যে কী তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট।” সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সম্পাদক হামেদুর রহমান জানান, পদ না থাকলেও সেই পদে একজন ছ’মাস কাজ করেছেন কী ভাবে সেটা বোঝা জরুরি। চাঁচল (১) ব্লক তৃণমূল সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, “পদ না থাকলে একজনকে সুপার পদে পাঠানো হল কী ভাবে? বদলি আড়াল করতে স্বাস্থ্য দফতর মনগড়া কথা বলছে কি না তা নির্বাচন ফুরোলেই খোঁজ নেব।”

চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক আসিফ মেহবুব ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “হাসপাতালে সুপার পদ না থাকলে ওঁকে চাঁচলে পাঠানো হতো না। যাই হোক সুপারকে আপাতত বদলি করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। এর পরেও তাঁর বদলির নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। বাসিন্দারা কেউ যদি এটাকে মিথ্যাচার বলেন তা হলে অন্যায়ের কিছু নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

super transfer chachal state hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE