নেতারা ‘লোক’ নিয়ে হাসপাতালে আসায় অসুবিধায় পড়ছেন রোগীরা। অসুবিধা হচ্ছে চিকিৎসকদেরও। মঙ্গলবার এই অভিযোগে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের সামনে ক্ষোভ জানালেন শাসক দলের নিয়ন্ত্রিত জুনিয়র চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যেরা।
এনসেফ্যালাইটিস সংক্রমণ পরিদর্শনে মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র হাসপাতালে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং জীবেশ সরকার। তাঁদের হাসপাতালে আসা নিয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখান ওই চিকিৎসকেরা। সূর্যকান্তবাবু বার হওয়ার সময় তাঁরা শ্লোগান দেন। কেন তিনি লোকজন নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাসপাতাল সুপারকে দফতরে ঘেরাও করেন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ভুল করেছে দাবি করে হাসপাতাল সুপারকে ক্ষমাও চাইতে বলেন তাঁরা।
অভিযোগ শুনে একযোগে কত জন ঢুকেছে, কী ব্যাপার নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন সুপার। এমনকী বিরোধী দলনেতা পরিদর্শনের সময় মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন বলেও তিনি জানান। জুনিয়র চিকিৎসক সংগঠনের ওই সদস্যরা অবশ্য সে সব শুনতে চাননি। শেষে সংবাদ মাধ্যমের সামনে সুপার অমরেন্দ্র সরকার জানান, বিরোধী দলনেতা অবশ্যই যাবেন। তবে একযোগে বেশি লোক ঢুকে থাকলে তা ঠিক হয়নি। এ রকম যাতে না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানালে জুনিয়র ঘেরাও ওঠে।
প্রগ্রেসিভ জুনিয়র ডাক্তার সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক শুকদেব মণ্ডলবলেন, “বিরোধী দলনেতা আসতেই পারেন। তা নিয়ে আমাদের আপত্তির কিছু নেই। তবে তার সঙ্গে অশোকবাবু জীবেশবাবুর মতো অনেকেই কেন ওয়ার্ডের মধ্যে হুটপাট করে ঢুকলেন তা পরিষ্কার নয়। মহিলাদের ওয়ার্ডেও তারা এ ভাবে ঢুকেছেন। তাতে ওনাদের নিয়েই ওয়ার্ডের ডাক্তারদের ব্যস্ত হতে হচ্ছে। রোগীরা তাতে সমস্যায় পড়ছেন।’’
তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বলে অভিযোগ বামেদের। সূর্যকান্তবাবু বলেন, “এ ভাবে যাঁরা স্লোগান দেখালেন হাসপাতাল চত্বরে তা করা উচিত নয়। কোনও রাজনীতি করতে আসিনি। সরকারের উচিত ছিল আরও আগে থেকে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া। তা করা হয়নি।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যর কথায়, এত লোক মারা যাচ্ছেন শাসক দলের নেতামন্ত্রীরা সেখানে যাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এলেন অথচ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেন না। আমি হাসপাতালে যাওয়ার পর রাজনীতি করতে এরপর শাসক দলের মন্ত্রী, নেতারা কয়েকজন যাচ্ছেন।”
রোগীর আত্মীয়েরা অবশ্য অনেকেই চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের অনেকেই জানান, নেতারা আসছেন। ঘুরছেন। তাতে রোগীদের কোনও লাভ নেই। রবিবার দিনভর অনেক ওয়ার্ডে চিকিৎসক ছিলেন না। কর্তৃপক্ষ পরিষেবা দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিক। সোমবার বিজেপি’র একদল প্রতিনিধি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গেলে রবিবার চিকিৎসক না মেলার ব্যাপারে তাঁদের কাছে অভিযোগ জানান অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy