নির্দেশ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। তাই বেরিয়েছিলেন শুয়োর ধরতে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে এলাকায় মশা মারার তেল ছড়িয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হলেন হাওড়া পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র-পারিষদ গৌতম চৌধুরী।
৪-৫ জন পুরকর্মীকে নিয়ে গৌতমবাবু রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ শুয়োর ধরার জন্য লিলুয়া বেলগাছিয়া ভাগাড়ে পৌঁছে যান। ওখানে হাওড়া পুরসভার জঞ্জাল ফেলা হয়। আর অবাধে চরে বেড়ায় শ’পাঁচেক শুয়োর। তাদের ধরতে যে এ ভাবে নাস্তানাবুদ হতে হবে, বুঝতে পারেননি গৌতমবাবুরা। ধরতে গেলেই
জঞ্জালের পাহাড়ে উঠে যাচ্ছে শুয়োরের দল। এই ধরপাকড় খেলা দেখতে ভিড় জমে যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে শুয়োরের পিছনে দৌড়ে ঘেমেনেয়ে একটিকেও বাগে আনতে না-পেরে এলাকায় মশা মারার তেল ছড়িয়ে ফিরে যান মেয়র-পারিষদ!
শুয়োর ধরা গেল না কেন?
পরে গৌতমবাবু জানান, হাওড়া পুরসভায় শুয়োর ধরার পরিকাঠামোই নেই। অভাব রয়েছে দক্ষ লোকেরও। শুয়োর ধরে নিয়ে যাওয়ার গাড়িও নেই। ধরলেও সেগুলোকে কোথায় রাখা হবে, তার ঠিক নেই।
পরিকাঠামোই যদি না-থাকে, তাঁরা শুয়োর ধরতে বেরোলেন কেন?
মেয়র-পারিষদের জবাব, “খালি হাতে ধরা যায় কি না, এ দিন সেটা দেখতে গিয়েছিলাম। আর দেখতে চেয়েছিলাম পরিস্থিতিটা। তো চেষ্টা করেও খালি হাতে একটাও ধরা গেল না।” তিনি জানান, কী ভাবে শুয়োর ধরা যায়, সেই বিষয়ে আজ, সোমবার পুরসভার বৈঠকে আলোচনা হবে।
মেয়র-পারিষদ পরিকাঠামোর অভাবের কথা বললেও কৃষি বিপণন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি অরূপ রায় বলেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রশাসন ও পুরসভা মিলিয়ে আমরা শুয়োর ধরতে প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ। তাই হাওড়ায় শুয়োর ধরা হবেই।” হাওড়া পুরসভার বেশ কিছু এলাকায় শুয়োরের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে শালকিয়া, হাওড়া রেল ইয়ার্ড, তিলখানা, বেলিলিয়াস রোড, ভট্টনগর ইত্যাদি।
হাওড়া শহরকে আদৌ শুয়োর-মুক্ত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে বাসিন্দারা অবশ্য সংশয়ে আছেন। এ দিনের ঘটনা তাঁদের মোটেই স্বস্তি দিতে পারেনি। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার লোকজন কখনওই মশা মারার তেল ছড়াতে আসেন না। কালেভদ্রে এলেও সেই তেলের কোনও গন্ধ পাওয়া যায় না। “এ দিন ওঁরা তো শুয়োর ধরতে পারলেনই না। সেই ব্যর্থতা ঢাকতে মশা মারার তেলের নামে কী যে সব ছড়িয়ে গেল, জানি না,” বললেন এক নাগরিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy