বন্ধ হোমিওপ্যাথি কলেজ। —ফাইল চিত্র
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ খোলার বিষয়ে নড়াচড়া শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলে।
২০০৮ সাল থেকে বন্ধ হয়ে থাকা ওই কলেজ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে রিপোর্ট পাঠাল জেলা প্রশাসন। এই কলেজটি খোলার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ এবং নানা সংগঠন। মানভূম জেলা থেকে ভাষা আন্দোলনের ভিত্তিতে যে লোকসেবক সঙ্ঘ পুরুলিয়াকে ১৯৫৬ সালের নভেম্বরে বাংলার সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিল, সেই সংগঠনও এই কলেজ খোলার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।
জেলা প্রশাসন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে পাঠানো রিপোর্ট উল্লেখ করেছে, ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী জেলার হুটমুড়ায় প্রকাশ্য প্রশাসনিক সভা থেকে এই কলেজটিকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৮০ সালে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে দুলমি এলাকায় এই কলেজটি চালু হয়। এই কলেজের সঙ্গে একটি হোমিওপ্যাথি হাসপাতালও চালু রয়েছে। তবে সেই হাসপাতালে বর্তমানে শুধু আউটডোর পরিষেবাই চালু রয়েছে। ইন্ডোরে ৫০টি শয্যা থাকলেও ২০০৮ সালে কলেজ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিষেবাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
হোমিওপ্যাথি কলেজের অধ্যক্ষ মণীন্দ্রনাথ জানা বলেন, “কলেজে পড়াশোনার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। এই যুক্তি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ‘আয়ুষ’ কলেজ বন্ধ করে দেয়। তার পর থেকে কলেজ খোলার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জায়গায় চিঠি লেখা হয়েছে। অবস্থা পাল্টায়নি।” তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ‘আয়ুষ’ রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে জানায়, রাজ্য সরকার পড়াশোনার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে দিতে পারলে কলেজ খোলার অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নে তাদের আপত্তি নেই। অধ্যক্ষ বলেন, “কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠনের পর আমরা তাদের কাছেও এই কলেজ খোলার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা একটি জেলায় গরিব লোককে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার প্রশ্নে এই কলেজটি অতীতে কী ভূমিকা গ্রহণ করেছে, সে কথাও জানিয়েছিলাম। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে তিন দিন আগে ‘আয়ুষ’-এর পক্ষ থেকে ওই চিঠি আমরা পেয়েছি। এ বার আমরা রাজ্য সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।”
‘আয়ুষ’-এর চিঠি পেয়ে কলেজ খোলার বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। জেলার তথা জঙ্গলমহলের একাধিক বিধায়কও মুখ্যমন্ত্রীকে এই কলেজ খোলার বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেন। সম্প্রতি জেলাশাসক রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে লেখা চিঠিতে কলেজটিকে পুনরায় খোলার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। এই রিপোর্টের সঙ্গে তিনি জেলার হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল অফিসার, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হোমিওপ্যাথি বিভাগের পরিদর্শক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের রিপোর্ট এবং কলেজের পুনরুজ্জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যও পাঠিয়েছেন। জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কলেজ সম্পর্কে রিপোর্ট পাঠিয়েছি। এ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।” এ রাজ্যের ‘আয়ুষ’ দফতররে ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই কলেজটিকে সরকার পুনরুজ্জীবিত করতে চাইছে। তিনি শীঘ্রই কলেজ পরিদর্শন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy