হাসপাতালের ভেতরে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় পুকুরে। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি থাকা এক রোগীর মৃতদেহ মিলল হাসপাতালের উল্টো দিকের পুকুরে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শেখ পান্না (২৫)। তাঁর বাড়ি বর্ধমান থানার মীরছোবা গ্রামে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উল্টো দিকের পুকুরে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। হাসপাতালের সামনে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা দেহটি দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটিকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরাা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী মন্তব্য শোনা গিয়েছে হাসপাতালের সুপার ও ডেপুটি সুপারের গলায়। হাসপাতালের সুপার উত্পল দাঁ বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আউটডোরে চিকিত্সা করাতে আসতেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন না।’’ অন্য দিকে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপস ঘোষ বলেছেন, ‘‘মৃত ব্যক্তি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তিন তলায় ভর্তি ছিলেন। তিনি কী করে ওয়ার্ড ছেড়ে বের হলেন, সেই সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন কী করছিল সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ মৃতের পরিবারের অবশ্য দাবি শেখ পান্না হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন।
পান্নার আত্মীয় সামসুল হোসেনের দাবি, পেশায় রাজমিস্ত্রী পান্না মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি বিবাহিত। একটি ছেলেও রয়েছে তাঁর। মাস দুয়েক আগে ব্লেড দিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গে আঘাত করেছিলেন পান্না। ফলে ক্ষত তৈরি হয়। এর চিকিত্সা করাতে মাঝে মধ্যেই হাসপাতালের আউটডোরে আসতে হতো তাঁকে। মাঝে মধ্যে ভর্তিও থাকতেন তিনি। রবিবার শেষ বার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছিল সে। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ হাসপাতালের পুকুর পাড়ে সন্দেহজনক ভাবে ওই ব্যক্তিকে ঘোবাফেরা করতে দেখেন। পুলিশকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের করে জরুরি বিভাগের তিন তলায় পৌঁছে দেন। এর পর সম্ভবত সকাল ৭টা নাগাদ ফের পুকুর পাড়ে এসে জলে ঝাঁপ মারেন পান্না।
এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর পরিজনদের ভিতর। তাঁদের প্রশ্ন, হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডের গেটে নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার কথা। কিন্তু এই ধরনের ঘটনার সময় তাঁদের দেখা যায় না। হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় নিরাপত্তারক্ষী কম রয়েছেন এই কথা স্বীকার করে সুপার তথা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সহ অধ্যক্ষ উত্পলবাবু বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনে নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা বাড়াতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy