ক্যান্সারের চিকিৎসায় ‘টার্সিয়ারি কেয়ার সেন্টার’ গড়তে রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি পাঠাতে চেয়েছিল কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল। নয়াদিল্লি দূর, ১৪ মাস পর সেই আবেদনপত্র পড়ে রয়েছে অসমের সচিবালয়েই। দিন তিনেক আগে বিভাগীয় প্রধান সচিব সঞ্জীব কুমার এমন কোনও ফাইলের কথা জানা নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন। গত কাল তিনি বলেন, “ফাইল এখানেই রয়েছে। কিন্তু অনুমতি পেতে অনেক দেরি। আগে আবেদনপত্র খুঁটিয়ে দেখা হবে। তার জন্য থাকবে কমিটি। তাঁদের রিপোর্টের পরই কেন্দ্রের কাছে ফাইল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।”
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানায়, দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশে ২০টি ‘স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউট’ এবং ৫০টি ‘টার্সিয়ারি কেয়ার ক্যানসার সেন্টার’ তৈরি করা হবে। যে কোনও মেডিক্যাল কলেজ বা সরকারি হাসপাতাল আবেদন জানাতে পারে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত হাসপাতালগুলিও আবেদন করার যোগ্য। তবে আর্জি পাঠাতে হবে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে। কেন্দ্র অনুমোদন দিলে ‘স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউট’ পাবে ১০০ কোটি টাকা, ‘টার্সিয়ারি কেয়ার ক্যান্সার সেন্টার’-এর জন্য মিলবে ৪৫ কোটি টাকা। অসম সরকারের কাছে এ নিয়ে কোনও আবেদন জমা পড়েনি জেনে কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল তৎপর হয়। ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি ওই হাসপাতালের তরফ থেকে সরকারের কাছে আর্জি পাঠানো হয়।
বরাক উপত্যকায় ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভিন্রাজ্যে চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে অনেক পরিবার। সে দিকে তাকিয়ে কয়েক জন সমাজসেবী একটি অ-লাভজনক সমিতি গড়েছিলেন। সেখানে ক্যান্সার রোগীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হতো। পরবর্তী কালে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে শিলচরে আসার জন্য কয়েক জন চিকিৎসকের সঙ্গে সমিতির চুক্তি হয়। রাজ্য সরকারের দেওয়া ১১ বিঘা জমিতে ১৯৯৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল গঠিত হয়। বর্তমানে ৬৩ শয্যার ওই হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে। হাসপাতালের ডিরেক্টর রবি কন্নান জানান, সেখানে মূলত দুঃস্থ রোগীরা যান। অধিকাংশই দিনমজুর, চা শ্রমিক, কৃষক। বরাক উপত্যকা ছাড়া ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর ও মেঘালয় থেকেও ভিড় জমে। বছরে আসেন প্রায় ৩ হাজার নতুন রোগী। পুরনোদের সংখ্যা ১৪ হাজার। তিনি বলেন, “টার্সিয়ারি সেন্টারের অনুমোদন পেলে হাসপাতালের অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে। তাতে উপকৃত হবেন স্থানীয় মানুষ।” হাসপাতাল পরিচালন সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ রায় বলেছেন, “এত দিন ধরে ওই ফাইল ফেলে রাখাটা রহস্যজনক।” উপ-সভাপতি দিলীপকুমার দে-র বক্তব্য, “এ বিষয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy