Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারের অভাবে বন্ধ অন্তর্বিভাগ, বিক্ষোভ

স্বাস্থ্য পরিষেবার দাবিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের তালাজুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। শেষ পর্যন্ত কাশীপুরের যুগ্ম-বিডিও পুষ্পেন দাস এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ )নেতাজী সিংহ সর্দার হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্বাস্থ্য পরিষেবা চেয়ে গ্রামবাসীদের পথ অবরোধ।— নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্য পরিষেবা চেয়ে গ্রামবাসীদের পথ অবরোধ।— নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাশীপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৮
Share: Save:

স্বাস্থ্য পরিষেবার দাবিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের তালাজুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। শেষ পর্যন্ত কাশীপুরের যুগ্ম-বিডিও পুষ্পেন দাস এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ )নেতাজী সিংহ সর্দার হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কাশীপুরের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের তালাজুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল ওই পঞ্চায়েত এলাকা-সহ পাশের সোনাথলী, বড়রা পঞ্চায়েতের একাংশ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে আট শয্যার অন্তর্বিভাগ। কিন্তু মূল সমস্যা চিকিৎসক ও নার্সের। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিন জন চিকিৎসকের বদলে রয়েছেন এক জন। নার্সের সংখ্যা মাত্র দুই। এক জন ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। ফলে, অন্তর্বিভাগ থাকলেও সেখানে রোগী ভর্তি করানো হয় না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এ দিন হাসপাতালের সামনেই কাশীপুর-বাঁকুড়া রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল সাড়ে নটা থেকে বেশ কিছু সময় অবরোধ চলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলেও অবরোধ তোলেননি গ্রামবাসীরা। পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন বিএমওএইচ নেতাজীবাবু। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘‘একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যে মানের পরিষেবা পাওয়া দরকার, সেটা কখনওই মেলে না এখান থেকে।’’ এ ছাড়াও তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের ওষুধ বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে, জীবনদায়ী ওষুধ মেলে না। সামান্য কারণেই এখান থেকে রোগীদের রেফার করে দেওয়া হয় কাশীপুর ব্লক হাসপাতালে। পাশাপাশি হাসপাতালে এক জন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক থাকলেও তিনি যেখানে বসেন, সেই ঘরটির বেহাল দশা। হাসপাতালে আরও এক চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত সংখ্যায় নার্স নিয়োগের দাবি তুলেছেন বিক্ষোভে সামিল হওয়া তালাজুড়ি, রাউতোড়া, ইন্দ্রবিল গ্রামগুলির বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে উৎসব মণ্ডল, ভোলানাথ কর্মকার, গৌতম কর্মকাররা বলেন, ‘‘একটা পঞ্চায়েতের পুরো এলাকা-সহ দু’টি পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভর করেন। কিন্তু স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়েছে এখানে।’’

ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তালাজুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিন জন চিকিৎসক থাকার কথা। বর্তমানে রয়েছেন উত্তম হালদার নামে এক ডাক্তার। ফেব্রুয়ারি মাসে দু’জন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছিল তালাজুডিতে। কিন্তু কয়েক দিন কাজ করার পরেই এক জন চলে গিয়েছেন। আর এক মহিলা চিকিৎসক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। এক জন মাত্র চিকিৎসকের পক্ষে বহির্বিভাগ সামলে অন্তর্বিভাগ চালানো সম্ভব না হওয়াতেই রোগী ভর্তি করা সম্ভব হয় না।

এ দিন চিকিৎসক উত্তমবাবু জানান, প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগে দেড়শো থেকে দুশো জন রোগী দেখা হয়। তিনি বলেন, ‘‘একা হওয়ায় সপ্তাহে পাঁচ দিন কার্যত ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি করতে হয় আমাকে। এই অবস্থায় অন্তর্বিভাগ চালানো সম্ভব নয়।” তবে হাসপাতালের ওষুধ বাইরে পাচার করার অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স না থাকাতেই তালাজুড়িতে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ব্লকের সর্বত্রই চিকিৎসকের সমস্যা রয়েছে। ফলে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কাউকে এখানে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। পুরো ঘটনাটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Kashipur Agitation Uttam Halder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE