কালচিনির বাসিন্দা খুশবু মহরের দেহে মিলেছে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু। উত্তরবঙ্গ কলেজের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন সে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
এনসেফ্যালাইটিস মোকাবিলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি থাকলেও মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সহ বিভিন্ন হাসপাতালের পরিষেবা ঢিলেঢালা ছিল বলে অভিযোগ উঠল। এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলেনি। আলিপুরদুয়ার, মালবাজার, জলপাইগুড়ি, হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালেও ফিভার ক্লিনিক বন্ধ ছিল। সর্বত্র জ্বর নিয়ে যাওয়া রোগীদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে এ দিন জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০ জন।
এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের একজনের বাড়ি মাথাভাঙায়, এক জন নাগরাকাটার চা বাগানের বাসিন্দা। এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি হজরতপুরের বাসিন্দা এক বালকের এ দিন মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি ছুটি থাকায় এ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলেনি বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। কিন্তু এনসেফ্যালাইটিসের প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সমস্ত ধরনের ছুটি বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। তা হলে কেন ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন রোগীদের অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই রয়েছেন।
তা সত্ত্বেও সেখানে ‘ফিভার ক্লিনিক’ বন্ধ থাকল কেন? সুশান্তবাবু বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবুও ফিভার ক্লিনিক বন্ধ রাখা ঠিক নয়। এমন যাতে না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে।”
কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক অবশ্য এ দিন খোলা ছিল। সেখানে এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন সরকার পরিদর্শনে যান। সে জন্য বাড়তি সতর্কতা ছিল হাসপাতালের অন্দরে। সেখানে সন্ধ্যায় তিনি জানান, নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ জন। তাঁদের মধ্যে ৩ জন বিপন্মুক্ত। তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১১১ জন পশ্চিমবঙ্গের। বাকিরা ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে কোচবিহারে এনসেফ্যালাইটিসের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হবে।” তিনি জানান, মালদহ ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, জলপাইগুড়ি, সিউড়ি জেলা হাসপাতালে এনসেফ্যালাইটিসের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন অনেক রোগীই। রাজগঞ্জের বন্ধুনগর এলাকার আরতিদেবী তাঁর জ্বরে আক্রান্ত কিশোরী কন্যা নমিতাকে দেখাতে মেডিক্যাল কলেজে যান। ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় ফিরে যান। মালবাজারে জ্বর নিয়ে আসা রোগী মেহবুব আলির পরিবরের লোকেরা জানান, ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েন। পরে জরুরি বিভাগে দেখান তারা। ওই হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা প্রতিমা সরকার বলেন, “জরুরি বিভাগের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। তাই ফিরে যাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy