Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অন্তঃসত্ত্বা বধূর মৃত্যু, হাসপাতালে ঘেরাও

অন্তঃসত্ত্বা বধূর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে মারা যান জবা ভৌমিক (৩৫)। মৃত সন্তান দ্রুত গর্ভ থেকে বের করে না দেওয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই চিকিৎসকের গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন মৃতার পরিবারের লোকজন। উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে।

কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।

কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০৩:০০
Share: Save:

অন্তঃসত্ত্বা বধূর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল তাঁর পরিবার। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে মারা যান জবা ভৌমিক (৩৫)। মৃত সন্তান দ্রুত গর্ভ থেকে বের করে না দেওয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই চিকিৎসকের গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন মৃতার পরিবারের লোকজন। উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে।

ওই চিকিৎসককে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করেও রাখেন তাঁরা। পরে ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ওই চিকিৎসককে ঘেরাও মুক্ত করে। যদিও চিকিৎসকের দাবি, ওই মহিলার পরিবারের লোকজন লিখিত সম্মতি না দেওয়াতেই অস্ত্রোপচার করে মৃত সন্তান বের করা যায়নি। যদিও রোগীর পরিবার তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (পূর্ব) পিনাকী মজুমদার বলেন, ‘‘মামলা হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী তদন্ত করা হবে।’’ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার সঞ্জীব মজুমদার গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে ঠিক কী হয়েছে। তারপরেই কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে।’’

দেশবন্ধুপাড়ায় স্বামীর সঙ্গে ভাড়া থাকতেন ওই বধূ। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে জয়াদেবী শিলিগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসক এস রানাকে দিয়েই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। চিকিৎসক নির্ধারিত প্রসবের সময় আসার পর তাঁকে গত সোমবার ওই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে যাওয়া হলে তিনি ওই বধূকে দেখে জানান, শিশু ভাল আছে। দুদিনের মধ্যে ভর্তি করানোরও পরামর্শ দেন বলে পরিবারের দাবি। সেইমত বুধবার সকালে তাঁকে শিলিগুড়ি হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।

পরিজনেরা জানান, এরপর আলট্রাসোনোগ্রাফি করানো হলে রিপোর্টে দেখা যায় বাচ্চাটি মৃত। মৃতার মা সন্ধ্যা দাসের দাবি, ‘‘আমরা চিকিৎসককে অনুরোধ করি মৃত বাচ্চাটি দ্রুত বের করে দিতে। কিন্তু উনি ওষুধ দিয়ে তা বের করে দিতে চান। আমরা অস্ত্রোপচারের অনুরোধ জানালেও তিনি গুরুত্ব দেননি।’’ এমনকী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যন্ত্রণায় চীৎকার করা সত্ত্বেও অস্ত্রোপচার করা হয়নি বলে অভিযোগ মৃতার বাবা দীপক দাসের। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চাটি আগেই মারা গিয়েছে। সময়মত তা বের করে দিলে আমার মেয়ে অন্তত বাঁচত। চিকিৎসকের ভুলেই এই পরিণতি হল। আমরা চিকিৎসকের শাস্তি চাই।’’ ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমি ওই পরিবারের কাছে অস্ত্রোপচারের লিখিত অনুমতি চেয়েছিলাম। ওঁরা তা না দেওয়াতেই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE