ডেড বাগ
১০টা-৫টার কাজ। অফিসেই বেশি সময় কেটে যায়। তাই শরীরচর্চার সময় হয়ে ওঠে না। এটা কিন্তু অজুহাত মাত্র। ইচ্ছা থাকলে এর মধ্যেও শরীরচর্চা করা সম্ভব। আপনার কি তা আছে? তবে নেমে পড়ুন। কিন্তু কেন শরীরচর্চা করবেন?
বসে বসে কাজ করলে শরীরে ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, মানসিক সমস্যা বাসা বাঁধতে পারে। এগুলি আসে অজান্তে। তবে ঘাড়ে, কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা, হজম এবং ঘুমের সমস্যা আসবে আপনাকে জানান দিয়ে। দু’ধরনের সমস্যাই জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই শরীরচর্চার দরকার।
যে কোনও সময়েই শরীরচর্চা করা যায়। অফিসের দিনগুলিতে তিন দিন রাতে শরীরচর্চা করুন। ছুটির দিন সকালে শরীরচর্চা করুন।
জোর বাড়ান কোমরের
বার্ড-ডগ: পাখি-কুকুরের ভঙ্গি মিলিয়ে এই ব্যায়াম। কুকুরের মতো হামাগুড়ির ভঙ্গি করুন। একটি পা পিছন দিকে সোজা করে তুলে উল্টো দিকের হাত কাঁধ থেকে ৪৫ ডিগ্রি কোণ বরাবর সোজা সামনে ধরে থাকুন। হাত-পা তোলার ভঙ্গি হল পাখির মতো। ২০ সেকেন্ড পর হাত-পা বদলান। এতে পিঠের গভীরের পেশির (কোর মাসল) জোর বাড়ে।
বার্ড-ডগ
প্ল্যাঙ্ক: শব্দটির অর্থ কাঠের গুঁড়ি। দু’কনুই আর পায়ের পাতায় ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শরীর শূন্যে তুলুন। লক্ষ রাখুন মাথা, পিঠ, কোমর যেন এক সরলরেখায় থাকে। প্রথাগত প্ল্যাঙ্ক যাঁরা পারবেন না, তাঁরা দু’হাঁটু ভেঙে মাটিতে রেখে সহজ পদ্ধতিতে করুন। এই ব্যায়ামটির সময়ে পেট মেরুদণ্ডের দিকে টেনে রাখুন। ২০ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এতে পেটের সামনের দিকের গভীরের পেশির জোর বাড়ে।
প্ল্যাঙ্ক
ডেড বাগ: চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। একটি হাঁটু ভাঁজ করে কোমরের উপরে তুলুন। ঠিক সেই দিকের হাতটি হাঁটু স্পর্শ করে থাকবে। অন্য দিকের পা মাটি থেকে সামান্য উঁচুতে তুলে রাখুন। ওই দিকের হাত থাকবে মাথার পিছনে। ব্যায়ামটি শুরু হলে ডান হাত ও ডান পা সামনে আসবে, আর বাঁ হাত ও বাঁ পা পিছনে। এই ব্যাপারটি পর্যায়ক্রমে চলবে।
প্রথম ব্যায়াম দু’টি দু’বার ২০ সেকেন্ড করে। তৃতীয় ব্যায়ামটি দু’দিকে ১২ বার করে দু’বার।
হাঁটুর যত্ন নিন
টুল স্পর্শ করে স্কোয়াট: দু’হাতে দু’লিটারের দু’টি জলভর্তি বোতল নিন। পাশে রাখুন একটি টুল বা চেয়ার। টুল থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে বৈঠক দেওয়ার মতো কোমর মাটির দিকে নামান। নিতম্ব টুল স্পর্শ করলেই উঠে দাঁড়ান। এ ভাবে স্কোয়াটে পসচার ভাল হয়। নতুন যাঁরা শুরু করছেন তারা সহজে করতে পারবেন। হাঁটুর পেশির জোর বাড়ে এই ব্যায়ামে।
চেয়ারে পা রেখে কোমর তোলা: একটি চেয়ার নিন। মাটিতে চিৎ হয়ে শুয়ে একটি পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে চেয়ারে তুলুন। ভাঁজ বলতে সিন বোন আর থাইয়ের হাড়ের মধ্যে ৯০ ডিগ্রি কোণ। অন্য পা শূন্যে রাখুন। এ বারে চেয়ারে রাখা পায়ে চাপ দিয়ে কোমর তুলুন আর নামান। দু’পায়েই ব্যায়ামটি করবেন। হ্যামস্ট্রিং পেশির শক্তি বাড়ে এই ব্যায়ামে।
পাশাপাশি শুয়ে পা তোলা: কাত হয়ে শুয়ে কনুইয়ে ভর রেখে পাশাপাশি পা তুলুন। মোটামুটি ৩০ ডিগ্রি তুললেই হল। এর বেশি উঁচুতে ওঠাবেন না। পা তুলে মনে মনে পাঁচ গুনুন। এতে কোমরের পাশের গ্লুটিয়াস পেশি শক্তিশালী হয়।
পাশাপাশি শুয়ে পা তোলা
তিনটি ব্যায়াম ১০ বার করে করুন। তিন বার রিপিট করুন।
সুস্থ রাখুন কাঁধ
উপুড় হয়ে শুয়ে থুতনিতে ভর দিন। দু’হাত সোজা করে কাঁধের সরলরেখায় মাটিতে রাখুন। উপর থেকে দেখতে ইংরেজির ‘T’ অক্ষর মনে হবে। এ বার দু’হাত এক সঙ্গে মাটি থেকে ইঞ্চি দুয়েক তুলুন আর নামান। মোট ১২ বার। এর পরে দু’হাত মাথার সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রি কোণ বরাবর রেখে মাটি থেকে ইঞ্চি দুয়েক তুলুন আর নামান। উপর থেকে দেখলে মনে হবে ইংরেজি ‘Y’ অক্ষর। ১২ বার করুন। দু’টি ব্যায়ামই ২-৩ বার রিপিট করুন। কাঁধের খুব উপকার হবে।
হৃদযন্ত্র ভাল রাখতে
আপনার ক্ষমতা অনুযায়ী হাঁটা, জগিং বা দৌড় বেছে নিন। হাঁটার জন্য বাড়ি, পার্ক, রাস্তা ঠিক আছে। জগিং বা দৌড় মাঠে বা পার্কে করুন।
• এক মিনিট জোরে হাঁটুন বা জগিং করুন। এক মিনিট আস্তে হাঁটুন।
• দু’সপ্তাহ বাদে দু’মিনিট জোরে হাঁটুন বা জগিং এক মিনিট আস্তে।
• দু’টি পদ্ধতিই ১০-১৫ মিনিট চালান।
সাপ্তাহিক রুটিন
সোমবার: কোমরের ব্যায়াম। তার পরে হাঁটা বা জগিং।
মঙ্গলবার: কাঁধ আর পায়ের ব্যায়াম।
বৃহস্পতিবার: কোমর আর পায়ের ব্যায়াম।
শনিবার: কাঁধের ব্যায়াম। তার পরে হাঁটা বা জগিং।
রবিবার: কোমরের ব্যায়াম। তার পরে হাঁটা বা জগিং
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy