রুদ্রাক্ষ চিরসবুজ শ্রেনীর বৃক্ষ, উদ্ভিদ বিজ্ঞানে যার নাম ইলেইওকারপাস গ্যানিট্রাস। এই গাছের পাতা বেশ বড় এবং চওড়া ও ডিম্বাকৃতির হয়। কাঁচা অবস্থায় এর ফল দেখতে নীল রঙের হয় বলে একে “ব্লুবেরী” ও বলে। এর স্বাদ টক বলে আদিবাসীরা নানা উপায়ে এটি খেয়ে থাকে। পেকে গেলে বা পুষ্ট হলে শ্বাস ফেলে শুকিয়ে আটির উপর সরিষার দানার মত উঁচু উঁচু দেখতে লাগে, আর আঁটির উপর প্রাকৃতিক ভাবে আঁকা উঁচু দাগ যা দেখতে শিব লিঙ্গের মত; ওই দাগ একটা থাকলে একমুখী, আর দুই বা ততোধিক থাকলে সেইভাবে নামকরণ হয় যেমন, দুইমুখী, তিন মুখী ইত্যাদি। এটি দেখতে পীত বর্নের, বা হাল্কা লাল বর্নের ও শ্যামবর্নের হয়। এর মালা দ্বারা যপ করা হয় এবং তান্ত্রিকরা নানা রকম আধিভৌতিক ক্রিয়াকলাপে ব্যবহার করে থাকে ।
এবার রুদ্রাক্ষের শ্রেণীবিভাগ ও এর উপকারীতা পরপর বর্ণনা করা হল-
একমুখী রুদ্রাখঃ বাধা বিঘ্ন দূর করে ও আর্থিক উন্নতি দেয়। এইগুলি দেখতে অনেকটা কাজুবাদামের মত।
দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষঃ এটি ধারণ করলে, বিবেক জ্ঞান, বুদ্ধি, ভক্তি, মুক্তি, শ্রদ্ধা, জাগ্রত হয়। মানসিক শান্তি দেয়। পারিবারিক সম্প্রতি বৃদ্ধি পায়। ব্যবসা-বানিজ্য ভাল যায়।
ত্রিমুখী রুদ্রাক্ষঃ যারা অত্যন্ত কামপ্রবণ, অন্যের স্ত্রীর প্রতি দুর্নিবার কাম অনুভব করেন, তারা এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে তা প্রশমিত হয়। গৃহে লক্ষ্মীর কৃপা লাভ হয়।
চতুর্মুখী রুদ্রাক্ষঃ এটি ধারণ করলে ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ লাভ হয়। মানসিক ও নার্ভের রুগীর পক্ষে এই রুদ্রাক্ষ বিশেষ উপকারী।
পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষঃ এই রুদ্রাক্ষের মালা জপ কার্যবিশেষে সিদ্ধি প্রদাণ করে। এই রুদ্রাক্ষের মালা ধারণ করলে মনষ্কামনা পূরণ হয়।
ষষ্ঠ মুখী রুদ্রাক্ষঃ ষড়রিপু দমিত হয়। তাই এটি সন্ন্যাসীদের খুব প্রিয়। লেখাপড়ায় ভাল ফল করার জন্য এর মালা ধারণ করা যায়।
সপ্তমুখী রুদ্রাখঃ এই রুদ্রাক্ষ মানব শরীরে যে সাতটি সূক্ষ্ম দেহ আছে যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না, যাদের অলোক দৃষ্টি আছে তারা দেখতে পান, সেই সূক্ষ্ম শরীরের পক্ষে উপকারী।
অষ্ট মুখী রুদ্রাক্ষঃ এটি কোর্ট কাছারী, মামলা মোকদ্দমার ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারী।
নয়মুখী রুদ্রাক্ষঃ এটি কুলকুণ্ডলিনী জাগাতে ধারণ করতে হয়।
দশমুখীরুদ্রাক্ষঃ এটি ধারণে দীর্ঘ দিনের কোনও ইচ্ছা পূরণ হয়।
একাদশ মুখী রুদ্রাক্ষঃ আর্থিক লাভ ও নিঃসন্তান দম্পত্তি সন্তান লাভ করে।
দ্বাদশ মুখী রুদ্রাক্ষঃ এটি খুব শক্তিশালী ও তেজস্বী রুদ্রাক্ষ। পয়সা থাকলেও এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত না। ব্রহ্মচারী ছাড়া অন্য কারও এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত নয়।
রুদ্রাক্ষ সম্পর্কে জ্যোতিষ, তান্ত্রিক, মহাপুরুষ, সাধক, ব্রহ্মচারী প্রত্যেকের মধ্যে এত বেশী পরস্পর বিরোধী মন্তব্য রয়েছে, তা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন। বোঝা যায় না, কে ঠিক বলছে আর কে ভুল বলছে। আধ্যাত্মিক লাইনে কোনও মতে বলা হয়েছে সাংসারিক মানুষেরা যারা সহবাস করেন তারা যেন কোনও মতেই রুদ্রাক্ষ ধারণ না করেন। এটি ব্রহ্মচারীর কবচ। তুলসীর মালা পড়া উচিত, রুদ্রাক্ষের মালা পড়া উচিত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy