Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রুদ্রাক্ষের স্বরূপ ও রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলাফল সম্পর্কে জেনে নিন

সকল প্রকার রুদ্রাক্ষের জন্ম ভগবান শিবের মাধ্যমেই হয় তবুও রুদ্রাক্ষের প্রকারভেদে ধারকের ফলপ্রাপ্তি কিন্তু বিভিন্ন হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রকৃতি ভেদে রুদ্রাক্ষের স্বরূপও বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে।

পার্থপ্রতিম আচার্য
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:০০
Share: Save:

‘বিবেক চিন্তামণি’’ নামক মহা গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, জগতের উদ্ধারের জন্য ভগবান শিবের নেত্র থেকে রুদ্রাক্ষের উৎপত্তি হয়েছে, যার মহিমা বর্ণনা করা খুবই কঠিন। যদিও সকল প্রকার রুদ্রাক্ষের জন্ম ভগবান শিবের মাধ্যমেই হয় তবুও রুদ্রাক্ষের প্রকারভেদে ধারকের ফলপ্রাপ্তি কিন্তু বিভিন্ন হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রকৃতি ভেদে রুদ্রাক্ষের স্বরূপও বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। রুদ্রাক্ষের স্বরূপ ও ফলাফল গুলি দেখে নেওয়া যাক -
১। একমুখী রুদ্রাক্ষ( শিবের স্বরূপ) - এই রুদ্রাক্ষ ধারণে ব্রহ্ম হত্যার মত পাপও বিনাশ হয় ও তার থেকে মুক্তি লাভ করাও সম্ভব হয়।
২। দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষ (হরগৌরীর স্বরূপ) - এই রুদ্রাক্ষ ধারণে হরগৌরী সদাই সন্তুষ্ট থাকেন, আয়ু বৃদ্ধি পায় এবং সাধনায় সিদ্ধি লাভ করা যায় ও গো-হত্যা জনিত পাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
৩। তিন-মুখী রুদ্রাক্ষ (অগ্নিদেবতার স্বরূপ) - এই রুদ্রাক্ষ ধারণে স্ত্রী হত্যা জনিত পাপ থেকে মুক্তি মেলে।
৪। চারমুখী রুদ্রাক্ষ( সাক্ষাত ব্রহ্ম স্বরূপ) - এই রুদ্রাক্ষ ধারণে শ্রী-বৃদ্ধির সঙ্গে সকল প্রকার রোগের থেকে আরোগ্য লাভ ও জ্ঞানের বৃদ্ধি ঘটে। সেই সঙ্গে চিত্ত প্রসন্ন থাকে ও নর হত্যার পাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
৫। পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ (কালাগ্নি রুদ্র স্বরূপ ) - ধারণে অখাদ্য বস্তুর আহারে হওয়া পাপের বিনাশ ঘটে।
৬। ছয়-মুখী রুদ্রাক্ষ (সাক্ষাত কার্তিকের স্বরূপ) - ধারণে গণহত্যার পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ‘কার্তিকের’ ব্রত পালনে ধর্ম-কর্মে মতি আসে।
৭। সাতমুখী রুদ্রাক্ষ (অনন্ত স্বরূপ) - ধারণে সর্ব প্রকার পাপ থেকে মুক্ত হয়ে দারিদ্র দূরীকরণ ঘটে থাকে।
৮। আট-মুখী রুদ্রাক্ষ(গণেশের স্বরূপ) - ধারণে সর্বপ্রকার দোষ খণ্ডন এবং সকল বাধা বিঘ্ন দূর হয়ে গিয়ে পরম পদের প্রাপ্তি ঘটে থাকে।
৯। নয়-মুখী রুদ্রাক্ষ (দুর্গা স্বরূপ) - ধারণে সকল প্রকার দুঃখ কষ্টের বিনাশের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ওপরে ভক্তি বৃদ্ধি এবং মুক্তি লাভ সম্ভব হয়।
১০। দশ-মুখী রুদ্রাক্ষ (বিষ্ণু স্বরূপ) - এই রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলে ভূত, প্রেত, ব্রহ্মদৈত্য, পিশাচ ইত্যাদির ভয় দূর হয়।
১১। এগারো-মুখী রুদ্রাক্ষ (রুদ্র, ইন্দ্র স্বরূপ) - স্ত্রীদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বামীর সুরক্ষা, উন্নতি, সৌভাগ্য তথা দীর্ঘায়ু দানে এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত। সন্তান সুখের ক্ষেত্রেও এই শ্রেণীর রুদ্রাক্ষ উপকারী।
১২। বারো-মুখী রুদ্রাক্ষ( সূর্য স্বরূপ) - ধারণে চেহারায় তেজস্বী ভাব আসে। হীনবল হয়ে পড়লেও এই রুদ্রাক্ষ ধারণে সুফল মেলে। মান, প্রতিষ্ঠা, দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতেও এই রুদ্রাক্ষ সাহায্য করে। রূপ, লাবণ্য বৃদ্ধিতে এবং ধারককে সদা প্রসন্ন রাখতে এই শ্রেণীর রুদ্রাক্ষ খুবই সিদ্ধ হয়।
১৩। তেরো-মুখী রুদ্রাক্ষ (কামদেবের স্বরূপ) - ধারণে মনের বাসনা পূর্ণ হয় এবং কোনও প্রকারের অকল্যাণ হয় না।
১৪। চৌদ্দমুখী রুদ্রাক্ষ (শিব, হনুমান স্বরূপ) - জীবনে সুখ সমৃদ্ধির বৃদ্ধি ঘটে থাকে। সর্বপ্রকার সম্মান প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে সকল সুখ-শান্তি এবং আয়ু বৃদ্ধি ঘটে থাকে। এই প্রকার রুদ্রাক্ষ ধারণকারী ব্যক্তি শিব-রূপী হয়ে থাকেন। এই রুদ্রাক্ষ সর্বরোগে বিনাশের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিকে নীরোগ রাখতে সাহায্য করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE