Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ইজরায়েলেও ‘তাপস পাল’, দাওয়াই সেই ধর্ষণ

হামাসের রকেট হানা ঠেকাতে এ বার সেনা পাঠিয়ে ‘রেপ’ করাবার হুমকি দিলেন এক ইজরায়েলি শিক্ষক! সম্প্রতি ইজরায়েলের একটি রেডিওতে হামাসের রকেট-হানা ঠেকাতে এই ‘ধর্ষণ-অস্ত্র’ প্রয়োগের পরামর্শ দেন বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের শিক্ষক মোরদেচাই কেদর। তিনি বলেন, “অস্ত্রে যুদ্ধ অনেক হয়েছে। এ বার বরং গাজায় ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করতে শুরু করুক সেনা! কোনও হামাস সদস্যের মা-বোন-স্ত্রীকে যেন বাদ না দেওয়া হয়!” এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সংবাদমাধ্যমে। একজন শিক্ষকের এমন ধর্ষণ-মন্তব্য নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে স্থানীয় সংবাদপত্রে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৭
Share: Save:

হামাসের রকেট হানা ঠেকাতে এ বার সেনা পাঠিয়ে ‘রেপ’ করাবার হুমকি দিলেন এক ইজরায়েলি শিক্ষক!

সম্প্রতি ইজরায়েলের একটি রেডিওতে হামাসের রকেট-হানা ঠেকাতে এই ‘ধর্ষণ-অস্ত্র’ প্রয়োগের পরামর্শ দেন বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের শিক্ষক মোরদেচাই কেদর। তিনি বলেন, “অস্ত্রে যুদ্ধ অনেক হয়েছে। এ বার বরং গাজায় ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করতে শুরু করুক সেনা! কোনও হামাস সদস্যের মা-বোন-স্ত্রীকে যেন বাদ না দেওয়া হয়!” এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সংবাদমাধ্যমে। একজন শিক্ষকের এমন ধর্ষণ-মন্তব্য নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে স্থানীয় সংবাদপত্রে।

সম্প্রতি বিরোধীদের সতর্ক করতে একই ভাষায় হুমকি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল। গলার নলি কেটে দেওয়া থেকে ধর্ষণের হুমকি বাদ দেননি কিছুই। বিরোধীদের হুঁশিয়ার করতে হুবহু সেই ঢঙেই এ বার তোপ দেগেছেন কেদর। বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ করা খবরের দৌলতে কেদর-মন্তব্য ছড়িয়েছে ফেসবুক-টুইটারে।

গত রবিবার রাতে অ্যারন শল নামে এক ইজরায়েলি সেনাকে অপহরণ করার কথা জানিয়েছিল হামাস। ওই রাতেই সরাসরি সম্প্রচারিত কেদরের রেডিও-সাক্ষাৎকারে উঠে আসে গাজা-পরিস্থিতির কথা। বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করে কেদার সে রাতে বলেছিলেন, “জঙ্গিদের ভয় দেখানোর একটাই রাস্তা আছে। যারা আমাদের সেনাকে অপহরণ করছে, তাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করা হলেই তারা চুপ করে যাবে।” কেদরের কথায় অস্বস্তি এড়াতে পারেননি অনুষ্ঠানের সঞ্চালকও। কেদারকে কার্যত থামিয়ে দিয়ে সঞ্চালক ওশি হাদার জানান, সেনাবাহিনী এমন ‘পরামর্শ’ মানতে পারে না! তাতেও ক্ষান্ত দেননি কেদর। তিনি জানান, সেনা কি করবে বা করবে না, সেটা তিনি বলছেন না। তিনি শুধু পথ দেখাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, পশ্চিম এশিয়ায় এমনটাই নাকি রীতি!

সরকারি সংবাদমাধ্যমে এক জন শিক্ষকের এমন মন্তব্যে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে নারী সুরক্ষা সংগঠনগুলি। কেদরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চিঠিও দিয়েছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তবে তাতে কর্ণপাত করতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, কেদরের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে।

সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে ভারতে এসে পৌঁছতেই কেদরের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূল সাংসদের নাম। তাপস-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে পরিচিত হয়েছেন কেদর। তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে এক ফ্রেমে শেয়ার হচ্ছে তার ছবিও। মন্তব্যের মিল তো বটেই, অনেকেই অবশ্য প্রশ্ন করছেন, কেদরকে শাস্তি না দিয়ে ক্ষমা করে দেওয়াটাও কি বাংলার সঙ্গে অবিশ্বাস্য ভাবে মিলে যাচ্ছে?

গাজায় নিহত বেড়ে ৭৭০

গাজায় মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। ইজরায়েলি সেনার হামলায় গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭০। বুধবার রাতে জেনিভায় গাজা-পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ। সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করতে না চাইলেও রাষ্ট্রপুঞ্জে যুদ্ধ বন্দের পক্ষেই ভোট দিল ভারত। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, ইজরায়েল বা প্যালেস্তাইনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না ভারত। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে মানবাধিকারের বিষয়ে যুদ্ধ বিরতির পক্ষেই সায় ভারতের। তাৎপর্যপূর্ণ, গত কয়েক দিন ধরে মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি বিরতি-প্রস্তাব নিয়ে শান্তি বৈঠক করলেও বুধবার ইজরায়েলের পক্ষে ভোট দেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন প্রতিনিধি। ৪৫টি দেশের মধ্যে ২৯টি দেশ যুদ্ধ বিরতির পক্ষে মত দিলেও ১৭টি দেশ ইজরায়েলের পক্ষ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথা নোয়াতে অস্বাকীর করেছে ইজরায়েলি প্রশাসনও। বৃহস্পতিবার মধ্য, দক্ষিণ ও উত্তর গাজায় লাগাতার হামলা চালিয়েছে ‘ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স’ (আইডিএফ)। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ন্ত্রাণাধীন স্কুলে ইজরায়েলি হামলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়। হতদের মধ্যে এক জন রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য। বৃহস্পতিবার এর তীব্র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE