পালমাইরার বেল মন্দির। ছবি: এএফপি।
ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পালমাইরা। যার প্রত্নসামগ্রীকে বাঁচাতে প্রাণ দিয়েছেন সিরিয়ার প্রবীণ প্রত্নতাত্ত্বিক খালেদ আল-আসাদ। কয়েক দিন আগেই পালমাইরার অন্যতম আকর্ষণ বালশামিন মন্দির ধ্বংস করেছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জঙ্গিরা। সোমবার খবর এল, ধ্বংস হয়ে গিয়েছে পালমিরার আর এক আকর্ষণ বেল মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বহু দূর পর্যন্ত সেই শব্দ শোনা গিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে পালমাইরার দখল নেয় আইএস।
সূত্রের খবর, পালমাইরার মাটিতে ভাঙা স্তম্ভ আর ইট পড়ে আছে। শুধু কয়েকটি দেওয়ালই এখনও দাঁড়িয়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পালমাইরা আইএস-এর দখলে আসার পরেই এই প্রত্নস্থলটি ধ্বংসের আশঙ্কা করছিলেন অনেকেই। তাই আগাম সতর্কতা হিসাবে এখানকারা অনেক প্রত্ননির্দশকে সরিয়ে ফেলা হয়। প্রবীণ প্রত্নতাত্ত্বিক খালেদ আল-আসাদের নেতৃত্বে এই কাজ হয়। পালমাইরার দখল নেওয়ার পরে তাই খালেদ আল-আসাদকে বন্দি করে আইএস। প্রায় এক মাসের অকথ্য অত্যাচারের পরেও প্রবীণ এই প্রত্নতাত্ত্বিক ওই মহামূল্যবাণ প্রত্নবস্তুগুলির কোনও সন্ধান দেননি। এর পরেই খালেদ আল-আসাদের মুণ্ডচ্ছেদ করে আইএস। প্রত্নবস্তুর খোঁজ না পেলেও পর পর ধ্বংস হয়ে গেল পালমাইরার বালশামিন ও বেল মন্দির। এর আগে ইরাকের মসুল এবং নিমরুদের প্রত্নস্থলে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল আইএস। পাশাপাশি, চোরাবাজারে প্রত্নবস্তু বিক্রি করেও প্রচুর অর্থলাভ করেছে আইএস।
বেল মন্দির প্রায় দু’হাজার বছরের পুরনো। ইউনেস্কোর মতে, এটি পালমাইরার সর্বশ্রেষ্ঠ সুসংরক্ষিত প্রত্নস্থল। বালশামিন মন্দিরের কায়দায় প্রচুর বিস্ফোরক ব্যবহার করে বেল মন্দিরও ধ্বংস করা হয়। এর প্রবেশপথের অনুকরণে আমেরিকার ক্যাপিটাল ভবনের প্রবেশপথ নির্মিত হয়েছিল।
সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে দু’শো কিলোমিটার দূরে গ্রেকো-রোমান পদ্ধতি ও পারস্যের স্থাপত্যরীতির অনুকরণে নির্মিত এই প্রত্নস্থলে এখনও প্রায় এক হাজার স্তম্ভ ও পাঁচশো সমাধি রয়েছে। তাই একে ‘মরুভূমির মুক্তো’ বলে ডাকা হয়। ইউনেস্কোর হেরিটেজের তালিকায় স্থান করে নিয়ে এই মন্দির। এখানকার সম্পদ লুঠ করতেই প্রথমে প্রত্নস্থলটির বিশেষ ক্ষতি করেনি। এমনকী এই পালমাইরার অ্যাম্ফিথিয়েটারে বন্দি সিরিয়ার সেনাদের মুণ্ডচ্ছেদও করে আইএস। কিন্তু, খালেদ আল-আসাদের থেকে কোনও খবর না পাওয়ায় অবশেষে প্রত্নস্থলটিকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে জঙ্গিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy