Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কানাডার হামলার পিছনে কারা, ধোঁয়াশা

ধোঁয়াশা কাটেনি। কে বা কারা, কেন কানাডার পার্লামেন্টে হামলা চালাল, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে মাইকেল জেহাফ বিবিউ নামে এক ব্যক্তির নাম। মার্কিন প্রশাসন সূত্রের দাবি, কানাডার নাগরিক মাইকেলের আসল নাম ছিল মাইকেল জোসেফ হল। পরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

পার্লামেন্ট হামলায় নিহত সেনাকে শ্রদ্ধা জানাতে সস্ত্রীক উপস্থিত কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার। ছবি: রয়টার্স

পার্লামেন্ট হামলায় নিহত সেনাকে শ্রদ্ধা জানাতে সস্ত্রীক উপস্থিত কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
অটোয়া শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

ধোঁয়াশা কাটেনি। কে বা কারা, কেন কানাডার পার্লামেন্টে হামলা চালাল, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে মাইকেল জেহাফ বিবিউ নামে এক ব্যক্তির নাম। মার্কিন প্রশাসন সূত্রের দাবি, কানাডার নাগরিক মাইকেলের আসল নাম ছিল মাইকেল জোসেফ হল। পরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

চলতি সপ্তাহের সোমবারই দুই কানাডীয় সেনাকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করেছিল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। এক সেনার মৃত্যুও হয় পরে। ওই ঘটনাতেও সন্দেহের তালিকায় ছিলেন এক জন ধর্মান্তরিত ব্যক্তি। এই মিলটাই ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের একটা মার্কামারা কর্মপদ্ধতি হল, অন্য ধর্মের লোকেদের ধর্মান্তরিত করিয়ে নিজেদের দল ভারী করা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার আইএস-সহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর কড়া সমালোচক বলেই পরিচিত। কতকটা সেই কারণেই সন্দেহের তিরটা আরও বেশি করে আইএস-এর উপরে গিয়ে পড়ছে।

গত কাল পার্লামেন্টে হামলার ঘণ্টা দশেক পরে আজ প্রথম মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী হারপার। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এ ধরনের হামলা চালিয়ে কানাডাকে ভয় দেখানো যাবে না। “আমি ভয় পাব না। কানাডা ভয় পাবে না। বরং সন্ত্রাস রোধে আমাদের সংকল্প আরও দৃঢ় হবে” সংবাদমাধ্যমকে বলেন হারপার। পার্লামেন্টে হানার ঘটনাকে ‘ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত খুন’ বলেছেন তিনি।

তবে একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সপ্তাহের দু’টি হামলাই স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে, অন্যান্য দেশের মতো হামলা যে কানাডায় হবে না, এটা মনে করার কোনও কারণ নেই।” তাঁর বক্তব্য, এই হামলা কানাডার মূল্যবোধে ঘা দিয়েছে। আঘাত করেছে সমগ্র কানাডাবাসীকেই।

কানাডার পার্লামেন্টে হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেছেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দু’দিন আগেই কানাডার এক সেনা মারা গিয়েছেন গাড়ি চাপা পড়ে। কাল আরও এক জনের মৃত্যু হল। আমেরিকার তরফে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।” কানাডাকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “ঘটনার আকস্মিকতা আমাদের কাঁপিয়ে দিয়েছে। এই কঠিন সময়ে কানাডার পাশে আছি।”

ওবামা এ-ও বলেছেন, ঘটনার পেছনে কার বা কাদের মাথা আছে, তা এখনও পরিষ্কার নয় ঠিকই। তবে এই ঘটনা বেশ ভাল বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আরও সজাগ থাকতে হবে। হারপারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরিও।

কানাডার হামলা গত কালই উস্কে দিয়েছিল ২০০১ সালে ভারতের সংসদ হানার স্মৃতি। সেই কথা উল্লেখ করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বলেছেন, “যে কোনও দেশের সংসদ ভবনই সে দেশের গণতন্ত্রের দেবালয় স্বরূপ। আমরাও এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি অতীতে। কানাডার সমব্যথী আমরা।” সন্ত্রাসবাদ রুখতে কানাডার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মোদী।

সন্ত্রাসবাদ রুখতে সারা বিশ্বের দেশগুলিকে একজোট হওয়ার কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপক্ষেও। এর আগে কানাডা একাধিক বার বুঝিয়েছে, জঙ্গি দমনে শ্রীলঙ্কার কার্যকলাপে মোটেই সন্তুষ্ট নয় তারা। এমনকী, গত বছর কলম্বো আয়োজিত কমনওয়েলথ সম্মেলনেও যোগ দেননি কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার।

আজ কিন্তু টুইট করে রাজাপক্ষে বলেছেন, “বিশ্ব জুড়ে জঙ্গি হানা বেড়েই চলেছে, বিষয়টি খুবই দুশ্চিন্তার। এখন কানাডাকেও ছুঁয়ে ফেলেছে সন্ত্রাসের হাত। আমাদের জোট বাঁধতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

canada terror attack parliament shootings
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE