চিত্রসাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে এ ভাবে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছিল শিশুটি। আর এই ছবিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সৌজন্য: টুইটার।
ক্যামেরা আর বন্দুকের তফাত জানা নেই। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে গৃহযুদ্ধে দীর্ণ দেশে শুধু গোলাগুলির আওয়াজই শুনেছে সে। যন্ত্র বলতে সে বুঝেছে বন্দুকের ট্রিগার। চিত্রগ্রাহকের ঝুলি থেকে ক্যামেরা বেরোতেই বন্দুক ভ্রমে তাই দু’হাত মাথার উপর তুলে দাঁড়িয়েছে বছর তিন-চারের ফুটফুটে মেয়েটি। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। এমনই একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে।
চিত্র সাংবাদিক নাদিয়া আবু শাবান টুইটারে ওই ছবিটি পোস্ট করেছেন। ছবিটা সম্ভবত যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় কোনও গ্রামে তোলা। এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বার ‘রি-টুইট’ করা হয়েছে সেটি। ছবিতেই স্পষ্ট, সিরিয়ায় কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে শিশুরা। তাদের সকলের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে। ছোট্ট শিশুটির এই আচরণই বুঝিয়ে দিচ্ছে, সিরিয়ার পরিস্থিতি। কী ভাবে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সিরিয়াবাসী। আর কী ভাবে ওই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বিপন্ন করেছে শৈশবকে। বোমায় উড়ে গিয়েছে সিরিয়ার বহু স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল এমনকী অনাথ আশ্রমও। হিংসা-হানাহানি শিশুদের মনেও গভীর ছাপ ফেলেছে। যাদের এখন খেলনা বা পুতুল নিয়ে খেলার বয়স। কার্টুন দেখে সময় কাটানোর কথা। পরিবার ও পরিজনের সঙ্গে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করার কথা, সংঘর্ষের আগুন তার সব কিছুই গ্রাস করেছে। যুদ্ধের অভিশাপে সব স্বপ্ন অধরাই রয়ে গিয়েছে। শুধু ছবির মেয়েটিই নয়, সিরিয়ায় তার মতো অসংখ্য শিশুই আজ সব কিছু হারিয়েছে। জন্মের পর থেকেই তারা দেখে আসছে আগ্নেয়াস্ত্র। শুনেছে গোলাগুলির শব্দ। ফলে ক্যামেরা দেখেও শিউরে উঠেছে ছবির ওই শিশুটি। চোখেমুখে ফুটে উঠেছে একটাই আর্তি ‘আমায় মেরো না।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy