ধারাবাহিক জঙ্গি হামলায় ফের বিধ্বস্ত নাইজেরিয়া। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহান্তেই দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের অন্তত ১৬টি শহর ও গ্রামে ব্যাপক তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাগা শহর। প্রশাসনের দাবি, জঙ্গিদের সাম্প্রতিক হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রথম দিনেই ১০০। ক্রমশই বাড়ছে। ঘরছাড়া কয়েক হাজার।
সন্ত্রাসের রেশ অব্যাহত গত দু’দিনেও। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, ঘরবাড়ি জ্বালানোর পাশাপাশি নির্বিচারে চলেছে গুলি। ফেটেছে পেট্রোল বোমাও। প্রাণের ভয়ে সপরিবার বাগা শহর থেকে পালিয়ে বর্নোর রাজধানী মাইদুগুরিতে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মহম্মদ বুকার। তাঁর কথায়, “পালানো ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। রক্তের নেশায় উন্মত্ত ওরা। রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে লাশ। শিশু, মহিলা কাউকে রেহাই দেয়নি। রাস্তার উপরেই আর্তনাদ করছে কয়েকশো মানুষ। এ সব দৃশ্য আর চোখে দেখা যায় না।”
শনিবারই বাগা শহরের দখল নেয় জঙ্গিরা। কব্জা করে স্থানীয় সেনা শিবিরও। স্থানীয় সূত্রের খবর, তার পরই শুরু হয় তাণ্ডব। বছর দু’য়েক ধরেই দেশ জুড়ে সন্ত্রাস ছড়িয়েছে বোকো হারাম। স্থানীয় এক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি। শুধু গত বছরেই ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন জঙ্গিহানায়। ঘরছাড়া অন্তত দেড় লাখ।
জঙ্গি অধ্যুষিত দেশের তিনটি প্রদেশে প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন জরুরিকালীন শাসন জারি করার পর থেকেই হামলা আরও বেড়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই ঠিক তার আগেই জঙ্গিহানার বাড়বাড়ন্তে চিন্তিত সরকার। সমালোচনা আসছে বিরোধীদের তরফেও। জঙ্গি মোকাবিলায় সরকারের হাতে যথেষ্ট আগ্নেয়াস্ত্র নেই বলেও অভিযোগ।
অন্য দিকে, অস্ত্রে এবং অর্থে ক্রমশই আড়েবহরে বাড়ছে বোকো হারাম। খুন, লুঠপাটের পাশাপাশি ২০০-রও বেশি স্কুলছাত্রী অপহরণের অভিযোগ উঠেছে জঙ্গি গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে। গত ছ’মাসে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে ২৪টিরও বেশি গ্রাম-শহরের দখল নিয়েছে জঙ্গিরা। থাবা বসিয়েছে বর্নো রাজ্যেও। জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্তি পেতে রোজই বাড়ি ছাড়ছেন শতাধিক। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, বাগা-সংলগ্ন গ্রাম থেকে পালিয়ে মাইদুগরি আসার পথে পাঁচশোরও বেশি মানুষ চাড-এর একটি দ্বীপে আটকা পড়েছেন। শনিবার থেকেই খাবার জোটেনি তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy