অপহরণ ও প্রকাশ্য রাস্তায় মুণ্ডচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগে এ বার সিডনিতে গ্রেফতার হল এক আইএস জঙ্গি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সিডনিতে আতঙ্ক ছড়াতে প্রকাশ্য রাস্তায় নিরীহ মানুষের মুণ্ডচ্ছেদ করার ছক কষেছিল আইএস বা ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে সিডনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর নাম খোদাই করা একটি তলোয়ার-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে ওমরজান আজারি নামে ২২ বছরের এক যুবককে। উদ্ধার হয়েছে একটি বন্দুকও। জঙ্গি যোগের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে আরও পনেরো জন।
আজ ওমরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ জানিয়েছে, আইএস গোষ্ঠীর সদস্য মহম্মদ আলি বারইয়ালেইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ ছিল ওমরের। এই বারইয়ালেই সিডনির ৩০ জন বাসিন্দাকে পশ্চিম এশিয়ায় জঙ্গিদের সাহায্য করতে নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ গোয়েন্দাদের। পুলিশের দাবি, সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে বারইয়ালেইয়ের কথা মেনেই প্রকাশ্যে মুণ্ডচ্ছেদের ছক কষে ওমর।
গত কাল রাতে পশ্চিমী দেশগুলির পাশাপাশি আরব দেশগুলোতেও জেহাদ শুরু করার আর্জি জানিয়ে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে সৌদি আরবের বাসিন্দা এক আইএস জঙ্গি। নিজেকে আইএস-এর আত্মঘাতী বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে সে। অন্য দিকে, ব্রিটেনের ইমামরা যৌথ ভাবে আজ আইএস জঙ্গিদের কাছে অ্যালেন হেনিংকে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী ডেভিড হেইনসের মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিওতে জঙ্গিরা জানিয়েছিল, ইরাক সিরিয়ায় ব্রিটেন আমেরিকাকে সাহায্য করা বন্ধ না করলে ত্রাণকর্মী অ্যালেনেরও মুণ্ডচ্ছেদ করবে তারা। ইংল্যান্ডের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত চিঠিতে ইমামরা বলেছেন, “যিনি মানবতার জন্য কাজ করেন, তাঁর স্থান সবার উপরে। ফলে অ্যালেনকে হত্যা করলে ধর্ম থেকে বিচ্যুত হবে জঙ্গিরা।”
মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, প্রকাশ্যেই আমেরিকার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে সক্রিয় হয়েছে আইএস। আর এ জন্য তারা সাহায্য নিচ্ছে ইন্টারনেটের। ইন্টারনেট থেকে বেছে বেছে কিছু মানুষকে নিয়ে তারা কয়েকটি দেশে স্লিপার সেল তৈরি করছে বলেও খবর। স্লিপার সেল তৈরির তালিয়ায় উপরের দিকে রয়েছে আমেরিকা।
প্রসঙ্গত, নাশকতা ছড়াতে বিশ্বের সব দেশেই জঙ্গিরা স্লিপার সেলের সাহায্য নেয়। স্লিপার সেল অর্থাৎ, সংগঠনের ঘুমন্ত কর্মী শাখা। যারা উপর মহলের নির্দেশ পেলে তবেই তৎপর হয়। এই স্লিপার সেলের সদস্যদের কাছে সাধারণত কোনও তথ্যও থাকে না। প্রয়োজনে টেলিফোন বা ই-মেল করে এই স্লিপার সেলকে কোনও একটি নির্দিষ্ট কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা কার নির্দেশে কাজ করছে বা কোন পরিকল্পনার অংশ, সে তথ্য তারা কখনওই পায় না। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই রকমই স্লিপার শাখার সদস্যদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জঙ্গিরা। রান্নাঘরের জিনিস দিয়ে বোমা তৈরি করা, প্রকাশ্য রাস্তায় নৃশংস কাজ করে মানুষকে ভয় দেখানো, সরকারি কর্মচারী বা পুলিশের বাড়িতে ঢুকে তাদের হত্যা করার নির্দেশও মিলছে বলে খবর। সিডনিতে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির ক্ষেত্রেও তেমন কোনও প্রশিক্ষণ কাজ করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন গোয়েন্দারা।
ওবামার জবাব
কোনও পরিস্থিতিতেই ইরাকে স্থল অভিযান চালাবে না আমেরিকা। আজ ফের এই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফসের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্টিন ডেম্পসি গত কাল জানান, প্রয়োজনে আইএসআইএস-এর (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া) সঙ্গে লড়াই করতে ইরাকের সেনা বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন সেনাও যোগ দিতে পারে। আজ পেন্টাগনের সেই দাবি উড়িয়ে দিলেন ওবামা। জঙ্গি নিধন নিয়ে অবশ্য নিজের দেশেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ওবামা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy