Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মানুষের পাশে আছি, ছবিতে প্রমাণের চেষ্টায় ইজরায়েল

মারণ হামলা অব্যাহত গাজায়। আজও সকাল থেকে লাগাতার বোমাবর্ষণ হয়। প্যালেস্তাইনের আপৎকালীন পরিষেবা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৩০০ ছাড়িয়েছে নিহতের সংখ্যা। ইজরায়েল আজ আরও একবার জানিয়ে দিয়েছে, রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নয় তারা। বরং হামাসের গোপন সুড়ঙ্গ নির্মূল না করা পর্যন্ত তীব্র লড়াই চালিয়ে যাবে সেনা। আজও হামাসের দু’টি সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি ইজরায়েলের।

সব হারানোর কান্না। গাজার এক ত্রাণ শিবিরে। ছবি: এ এফ পি

সব হারানোর কান্না। গাজার এক ত্রাণ শিবিরে। ছবি: এ এফ পি

সংবাদ সংস্থা
গাজ়া শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

মারণ হামলা অব্যাহত গাজায়। আজও সকাল থেকে লাগাতার বোমাবর্ষণ হয়। প্যালেস্তাইনের আপৎকালীন পরিষেবা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৩০০ ছাড়িয়েছে নিহতের সংখ্যা।

ইজরায়েল আজ আরও একবার জানিয়ে দিয়েছে, রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নয় তারা। বরং হামাসের গোপন সুড়ঙ্গ নির্মূল না করা পর্যন্ত তীব্র লড়াই চালিয়ে যাবে সেনা। আজও হামাসের দু’টি সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি ইজরায়েলের।

গত কাল ঈদের দিন কয়েকশো নিরীহ মানুষের উপর বোমাবর্ষণের ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ইজরায়েলি প্রশাসনকে। আজ খানিকটা মুখরক্ষার চেষ্টায় টুইটারে আত্মপক্ষ সমর্থনে নেমেছে ‘ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স’ বা আইডিএফ। তারা যে আদৌ মানবতা বিরোধী নয়, তা জাহির করতে ভিডিও এবং ছবি আপলোড করা হচ্ছে টুইটারে। দেখানো হচ্ছে, হাসপাতাল-ধর্মস্থানের আড়ালে কী ভাবে লুকিয়ে রয়েছে হামাসের জঙ্গিরা। দেশের মানবিক মুখ তুলে ধরতে পোস্ট করা ভিডিওয়ে দেখানো হয়েছে, কী ভাবে ইজরায়েলি সেনারা রক্তাক্ত প্যালেস্তাইনিদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে মানবজাতির পাশে দাঁড়ানোই যে তাদের লক্ষ্য তা-ও জানাতে দ্বিধা করেনি তারা। স্রেফ মানবিকতার খাতিরে দিনে চার ঘণ্টা (দুপুর ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত) যুদ্ধ শিথিল করার কথা জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি এ-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গাজার যে এলাকায় সেনা অভিযান চলছে সেখান থেকে দিনের কোনও সময়েই পিছু হটবে না সেনা।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ইজরায়েল মানবিক মুখ দেখালেও গাজার পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি আজও। সকাল থেকে আইডিএফ-এর হামলায় ৫০ জন প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়েছে। গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র ভেঙে পড়ায় এখনও অন্ধকারে গোটা শহর। বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হওয়ার মুখে হাসপাতালের বিভিন্ন পরিষেবা। বন্ধ হতে বসেছে অস্ত্রোপচার। মধ্য গাজার শিফা হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, এ ভাবে চলতে থাকলে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন কয়েকশো মানুষ। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গত কাল সকালে ইচ্ছাকৃত ভাবেই গাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা করে আইডিএফ। শহরে জঙ্গিবাহিনীর কার্যকলাপ রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

আজ সকালে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ন্ত্রাণাধীন দক্ষিণ গাজার জেবালিয়ার একটি স্কুল তথা ত্রাণশিবিরে হামলা চালায় আইডিএফ। ঘটনাস্থলেই কয়েক জন শিশু-সহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার অব্যবহতি পরেই জেবালিয়ায় ভয়ানক বোমাবর্ষণ হয়। প্যালেস্তাইনের আপৎকালীন দফতরের মুখপাত্র আশরাফ আল কাদরা জানিয়েছেন, ওই এলাকার একটি বাড়িও অক্ষত নেই। দেহ উদ্ধার শুরু হয়েছে। তবে নিহতের সংখ্যা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুলে হামলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার নিন্দা করেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন। তবে ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র লেফটেন্যান্স পিটার লার্নার ওই হামলায় দায় অস্বীকার করেছিলেন। আজ জেবালিয়ার স্কুলে হামলার নিন্দা করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ ও মানবাধিকার দফতর। জানানো

হয়েছে, আজও আন্তর্জাতিক নিয়ম ভেঙে রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরে হামলা করেছে সেনা। গত কাল ইউনিসেফের একটি দফতরে দু’ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ বার হামলা হয়েছে। দু’পক্ষের কাছেই যুদ্ধের আগে মানবতাকে রাখার আর্জি জানানো হয়। ত্রাণ শিবিরে হামলাকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র ক্রিস গানেস। প্রত্যুত্তরে সুর চড়িয়েছে ইজরায়েলও। আইডিএফ-এর দাবি, গাজার স্কুল এবং ত্রাণ শিবিরগুলি প্রকৃতপক্ষে হামাসের ডেরা। ওই শিবির থেকে ছোড়া জঙ্গিরা রকেট লক্ষ্য করেই পাল্টা হামলা করা হয়েছে।

গাজা-পরিস্থিতির নিন্দা করে ইজরায়েলকে খোলা চিঠি দিয়েছেন স্পেনের কয়েক জন চিত্র তারকা। পেনেলোপে ক্রুজ, পেড্রো আমোদোভার এবং জেভিয়ার বার্ডেমের নামে ওই চিঠিটি প্রকাশ করেছে স্পেনের একটি দৈনিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

israel gaza attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE