গত সোমবার সকাল থেকে আবুজার আসোকোরো হাসপাতালে ভর্তি ছিল দশ মাসের শিশুটি। সে দিনই জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজার শহরতলির ওই বাসস্ট্যান্ডটি। শতাধিক আহতের সঙ্গে গুডনেসও সেই সময় ভর্তি হয়েছিল আবুজার ওই হাসপাতালে। হাসপাতালের নার্স থেকে চিকিৎসক, সকলেই প্রায় ধরে নিয়েছিলেন বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির মায়ের।
কিন্তু মিলল সুখবর। গুডনেসের পরিবারের লোকজন এই ক’দিনে শহরের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল চষে ফেলেছেন। অবশেষে আসোকোরোয় এসে জানতে পারেন, বেঁচে রয়েছে তাঁদের পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যটি। তার চোটও তেমন মারাত্মক নয়। একটা চোখ শুধু ফুলে রয়েছে। পরিবারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, গুডনেসের মা গ্লোরিয়া অ্যাডামস গুরুতর আঘাত নিয়ে অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা আর্জি জানান, দশ মাসের শিশুটিকে যেন অবিলম্বে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এখন তোড়জোড় শুরু করেছেন গ্লোরিয়ার হাসপাতালে ওই শিশুটিকে পাঠাতে। মায়ের সঙ্গে তার পুনর্মিলন হল অবশেষে। এত দিন গুডনেসের দেখভাল করা নার্সরা তাই বেজায় খুশি।
আঘাত গুরুতর হলেও এখন জ্ঞান ফিরেছে গ্লোরিয়ার। তিনিও ধরে নিয়েছিলেন বিস্ফোরণই হয়তো কেড়ে নিয়েছে সন্তানকে। কিন্তু তাকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আত্মহারা মা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই গ্লোরিয়া সাংবাদিকদের শুনিয়েছেন সে দিনের অভিজ্ঞতার কথা। জানিয়েছেন, শিশুটিকে কোলে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। একটি বাসে উঠতে যাবেন এমন সময় আচমকা বিকট শব্দ। পর পর দু’-দু’টো বিস্ফোরণ। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে ছিটকে পড়েছিলেন গ্লোরিয়া। “আমি কী ভাবে হাসপাতালে এলাম জানি না। যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম। দেখলাম গুডনেসকে কারা যেন নিয়ে গেল। ওইটুকুই। আর কিছু মনে নেই। বিস্ফোরণে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আমি ইশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন”, সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে এ বার গলা ধরে আসল গ্লোরিয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy