প্রতি বছর বহু পর্যটক কায়রোর মিউজিয়ামে ভিড় জমান। মূল আকর্ষণ মিশরের ফ্যারাও তুতানখামুনের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরনো ‘ডেথ মাস্ক’। তুতানখামুনের মমির বাক্সের এক দম ভিতরের প্রকোষ্ঠে ছিল ফারাওয়ের ‘ডেথ মাস্ক’ মৃত্যুর পরে নেওয়া তাঁর মুখের আদলে তৈরি খাঁটি সোনার মুখোশ। প্রাচীন মিশরের প্রতীক হয়ে উঠেছে সেই মুখোশ। আর সেটি পরিষ্কার করতে গিয়েই যত বিপত্তি।
অভিযোগ, গত বছর মিউজিয়ামের এক সাফাইকর্মীর ভুলে খুলে বেরিয়ে আসে মুখোশের দাড়িটি। নীল ও সোনালি রঙের বিনুনি করা ওই দাড়িটি খুলে যেতেই জরুরি তলব করা হয় মিউজিয়ামের তিন সংরক্ষণকর্মীকে। তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত হয়, খুলে যাওয়া অংশটি আঠা দিয়ে জুড়ে দেওয়া হবে। ইপোক্সি নামে এক রাসায়নিক আঠা ব্যবহার করেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। আর সেই আঠার ব্যবহার নিয়েই তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ইপোক্সির মধ্যে যে রাসায়নিক উপাদান থাকে, তার সাহায্যে কোনও ধাতু ও পাথরের বস্তু জোড়া যায়। তবে তুতানখামুনের মুখোশটি তো সোনার তৈরি। ফলে সেটির ভাঙা অংশ জুড়তে ইপোক্সি কতটা কার্যকর, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংরক্ষণকর্মীদের মধ্যেই। চাকরি হারানোর ভয়ে কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি। ১৯২২ সালে দুই ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হওয়ার্ড কার্টার এবং জর্জ হারবার্ট তুতানখামুনের সমাধি ও সেখানে তাঁর মমি আবিষ্কার করেছিলেন।
মুখোশটি মেরামতির সময়ে উপস্থিত এক সংরক্ষণকর্মী বলেন, “ফ্যারাওয়ের মুখোশটি ঠিক মতো জোড়ার আগেই ব্যবহৃত ইপোক্সি শুকিয়ে গিয়েছিল। আমার এক সহকর্মী সেটিকে ছোট্ট একটি চামচ দিয়ে পরিষ্কার করতে গিয়েছিলেন। তার ফলে মুখোশটির উপর আঁচড়ের দাগ পড়ে গিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ওই মুখোশটির মুখ এবং দাড়ির মাঝখানে একটা ফাঁক রয়ে গিয়েছে। দাড়ি খুলে যাওয়ার পরেই সেটিকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণের জন্য গবেষণাগারে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তবে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ তা করেননি। তড়িঘড়ি তা পর্যটকদের সামনে প্রদর্শনের জন্যই রাসায়নিক আঠা দিয়ে কোনও রকমে মেরামত করে দায় সারার চেষ্টা করেছেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। মিউজিয়ামের এক কর্মচারী জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। গতকাল একটি বৈঠকও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy