আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। মোল্লা ওমরের উত্তরসূরির বৈধতা নিয়ে আফগান তালিবানে প্রবল দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে দাবি করল পাক সংবাদমাধ্যম।
একটি পাক সংবাদপত্রের দাবি, এই দ্বন্দ্বের জেরে পশ্চিম হেরাট প্রদেশে তালিবান জঙ্গিদের দু’টি দল সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। তাতে নিহত হয়েছে ৯ জন। মোল্লা ওমরের মৃত্যুর পরে তালিবানে এই ধরনের দ্বন্দ্ব বাড়লে আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া বানচাল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কূটনীতিকদের মধ্যে।
সম্প্রতি মোল্লা ওমরের মৃত্যুর কথা স্বীকার করার পরে মোল্লা আখতার মনসুরকে শীর্ষ নেতা হিসেবে ঘোষণা করে তালিবানের একাংশ। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, সেই ঘোষণা মানতে রাজি নন অনেক শীর্ষ তালিবান নেতাই। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মোল্লা ওমরের ভাই মোল্লা আব্দুল্লা মান্নান ও ছেলে ইয়াকুবও। পুস্তু ভাষায় রেকর্ড করা একটি অডিও বার্তা প্রচার করে মোল্লা আব্দুল্লা মান্নান জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের পরিবার এখনও কোনও পক্ষে যোগ দেয়নি। আমরা চাই ধর্মগুরুরা (উলেমা) সমস্যার সমাধান করুন।’’
একটি পাক সংবাদপত্রের দাবি, আখতার মনসুরের বিরোধী নেতারা একটি সমান্তরাল শীর্ষ পরিষদ (শুরা) তৈরি করেছেন। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আফগান ইসলামি আমিরশাহি’। ওই নেতাদের দাবি, আখতার মনসুরকে প্রধান ঘোষণা করার সময়ে তালিবান শুরার অধিকাংশ সদস্য ও উলেমার মত নেওয়া হয়নি। তাই এ বার এই বিষয়ে একটি সম্মেলন ডাকতে চান ওই নেতারা। মোল্লা ওমরকে শীর্ষ নেতার তকমা দেওয়ার সময়ে এই ধরনের একটি সম্মেলন ডেকেছিল তালিবান।
পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে আজ পশ্চিম হেরাটে দু’দল তালিবান জঙ্গির মধ্যে ঝগড়া বাধে। তার পরে শুরু হয় সংঘর্ষ। তাতে এক কম্যান্ডার-সহ ৯ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে।
পুরো বিষয়টি তালিবানের সঙ্গে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। এই প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করছে পাকিস্তান ও আমেরিকা। শান্তি আলোচনার স্বার্থে পুরোপুরি পাকিস্তানপন্থী অবস্থান নিয়েছেন ঘানি। এমনকী, আফগানিস্তানে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র-এর কাজকর্ম রুখতে হাত মিলিয়েছে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইএসআই। কিন্তু প্রাক্তন কূটনীতিক রুস্তম শাহ মহম্মদের মতো পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞদেরই মতে, তালিবানে সমস্যা না মিটলে আখতার মনসুরের পক্ষে শান্তি প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া কঠিন।
সম্প্রতি তালিবান কম্যান্ডারদের একাংশ আইএসে যোগ দেওয়া শুরু করেছে। এই দ্বন্দ্ব সেই প্রবণতাও বাড়াতে পারে বলে মনে করছে কোনও কোনও শিবির।
আফগানিস্তানে নৈরাজ্য বাড়ে কিনা তা জানতে সতর্ক নজর রাখছে দিল্লিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy