Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International

অভাবে হার বেচতে এসে ‘ঈশ্বর’-এর দেখা পেলেন আমেরিকার মা!

পেটের দায়ে মায়ের দেওয়া সোনার চেন বেচতে চেয়েছিলেন তিনি। ডলার না পেলে দুই ছেলেমেয়েকে খাওয়াবেন কী ভাবে? কিন্তু মওকা পেয়েও, ঝকঝকে দুর্লভ, দুর্মূল্য সেই সোনার চেনটা নিতে চাইলেন না সোনার দোকানি!

ছবি-ইন্টারনেট।

ছবি-ইন্টারনেট।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ১৭:৪০
Share: Save:

পেটের দায়ে মায়ের দেওয়া সোনার চেন বেচতে চেয়েছিলেন তিনি। ডলার না পেলে দুই ছেলেমেয়েকে খাওয়াবেন কী ভাবে? কিন্তু মওকা পেয়েও, ঝকঝকে দুর্লভ, দুর্মূল্য সেই সোনার চেনটা নিতে চাইলেন না সোনার দোকানি!

যিনি বেচতে চেয়েছিলেন, তিনি বহু বার অনুরোধ-উপরোধ করলেন। বোঝাতে চেষ্টা করলেন, তাঁর সোনার চেনটা মোটেই ঝুটা নয়। বললেন, মোটামুটি কিছু পেলেই ওই দুর্মূল্য সোনার চেনটা তিনি দিয়ে দেবেন। দোকানি তাতেও রাজি হল না!

গল্প নয়, সত্যি। বিপদে-আপদে মার্কিনদের পাশে দাঁড়ান আমেরিকায় থাকা মুসলিমরা। আরব দুনিয়ার মানুষ। এখনও। সোনার দোকানি সিরিয়ার মানুষ।

ডালাসের এক মার্কিন মহিলার কাহিনী। ঘরে ডলার নেই একটিও। কয়েক দিন খাওয়াতে পারেননি দুই সন্তানকে। তারা কান্নাকাটি করছিল। আর সহ্য করতে পারছিলেন না ওই মহিলা। ঘরে আর এমন কিছু ছিলও না, যা বেচে ছেলেমেয়েদের মুখে কিছু তুলে দেওয়ার জন্য কয়েকটা ডলার জোগাড় করা যায়! মহিলার হঠাৎই মনে পড়ে গেল আলমারির লকারে রাখা তাঁর সোনার চেনটার কথা। দুর্লভ, দুর্মূল্য ওই সোনার চেনটা তাঁকে মা দিয়ে গিয়েছিলেন, মৃত্যুর আগে। রাখার জন্য।

দেখুন সেই ঘটনার ভিডিও।

ঝট্ করে মহিলার মনে পড়ে গেল, ওই দুর্মূল্য সোনার চেনটা ছাড়া তো তাঁর হাতে লড়াই করার আর কোনও হাতিয়ার নেই!

যে-ই ভাবা, সে-ই কাজ। আলমারি থেকে ভারী সোনার চেনটাকে বের করে নিয়ে দুই ছেলেমেয়ের হাত ধরে সোজা ছুটলেন সোনার দোকানে। দোকানিকে দেখালেন, তাঁর দুর্মূল্য সোনার চেনটা। বললেন, বেচতে চান। কেন বেচতে চান, সেটাও বললেন। এও বললেন, কম ডলার পেলেও তিনি সেটা বেচে দেবেন।

সব শুনে মুখটা গোমড়া হয়ে গেল সোনার দোকানির। মহিলাকে বললেন, ‘‘কেন এটা বেচবেন, বলুন তো? আরও এক বার ভাবুন।’’ কথাটা শুনে মুখ কালো হয়ে গেল মহিলার। হতাশ গলায় বললেন, ‘‘আমার যে আর কিচ্ছু করার নেই। আর একটা মাস চালানোরও ডলার নেই আমার হাতে। দু’টো ছেলেমেয়েকে খাওয়াতে পারছি না।’’ তাতেও সন্তুষ্ট হলেন না সোনার দোকানি। জানতে চাইলেন, ‘‘চেনটা বেচার জন্য এটাই একমাত্র কারণ?’’ এ বার আরও ভেঙে পড়লেন ওই মহিলা। চোখের জল মুছতে মুছতে বললেন, ‘‘মৃত্যুর আগে আমার মা সোনার চেনটা আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন। এত দিন অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হলেও, ওটাকে আঁকড়ে রেখেছিলাম। আর পারছি না। ডলার না পেলে আমার সংসার যে আর চলবে না!’’

না, তাতেও ‘বরফ’ গলল না! সোনার চেনটা ওই মহিলাকে ফেরত দিয়ে দিলেন দোকানি। সঙ্গে দিলেন ওই চেনটার যা দাম হয়, সেই পরিমাণ ডলারও! তার পর দোকানি বললেন, ‘‘এই যে বলছিলেন, ওটা (সোনার চেন) আপনার মা আপনাকে উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন! কেউ মায়ের দেওয়া উপহার কখনও বেচে? খুব দরকার যখন, তখন এই ডলারগুলো রাখুন।’’

এ কথা বলে একটা কাগজে নিজের টেলিফোন নম্বরটাও লিখে দিলেন সোনার দোকানি। বললেন, ‘‘এই নম্বরটা রাখুন। আরও কিছু (ডলার) লাগলে, বলবেন।’’ আর ওই মহিলার দুই ছেলেমেয়েকে বললেন, ‘‘তোমরাও মায়ের জন্য ভাবো।’’

মধ্য জুলাইয়ের ওই ঘটনার পর আলাদা একটা ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছিল। ‘আমেরিকা ফর আরবস’। পেজটা দেখা হয়েছে ৯৫ লক্ষ বার, দু’সপ্তাহে। শেয়ারের সংখ্যা তিন লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে।

ভাবুন!

আরও পড়ুন- বারাক ওবামার মেয়ে রেস্তোরাঁ কর্মী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Broke Mom Chain Shopkeeper
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE