ম্যাঞ্চেস্টার এরিনায় জঙ্গি হামলার পর টানা দু’দিন দম ফেলার ফুরসত পাননি নভিদ ইয়াসিন। বিস্ফোরণে হাত-পা উড়ে যাওয়া মানুষগুলোর ক্ষত সারিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন দিন-রাত এক করে। অথচ সেই লন্ডনেই ‘জঙ্গি’ তকমা পেলেন বছর সাঁইত্রিশের এই পাকিস্তানি চিকিৎসক। নিঃস্বার্থ সেবার বিনিময়ে শুনলেন পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার হুমকিও।
গত সপ্তাহে ম্যাঞ্চেস্টার এরিনায় হামলার পর থেকে হাসপাতালই তাঁর ঘর-বাড়ি। হাড়ের চিকিৎসক নভিদ এই এক সপ্তাহে যে কত মানুষের হাত-পা জুড়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। সোমবার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাজ সেরে সালফোর্ড রয়্যাল হাসপাতাল থেকে ফিরছিলেন তিনি। এমন সময় গাড়িতে তাঁর পাশেই উঠে বসেন মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি। বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎই সে গালাগালি দিতে শুরু করে নভিদকে। ‘কালো’ বলে কটূক্তি করে রীতিমতো হুমকির সুরে বলে ওঠে, ‘‘তোমরা জঙ্গি। নিজের দেশে ফিরে যাও। তোমাদের এ দেশে দেখতে চাই না।’’
পশ্চিম ইয়র্কশায়ারে জন্ম নভিদের। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে এখন ট্র্যাফোর্ডে থাকেন। তিন পুরুষ ধরে লন্ডনে থাকার পর এই দেশকেই নিজের করে নিয়েছে ইয়াসিনের পরিবার। ব্রিটেনের মাটিতে ইসলামি জঙ্গি হানার ক্ষত সারাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। তার পরেও শুনতে হল ‘জঙ্গি’ ডাক! নভিদ বলেছেন, ‘‘আমার গায়ের রঙের জন্য ওর চোখে যে পরিমাণ ঘৃণা জমেছিল তা অসহনীয়।’’
ইয়াসিন জানিয়েছেন, সে দিনের হামলা শিকার হতে পারত তাঁর মেয়ে অ্যামেলিয়াও। পরের দিন স্কুল থাকায় মেয়েকে আরিয়ানার কনসার্টে যেতে দেননি তাঁর স্ত্রী।
এই এক সপ্তাহ আর নিশ্চিন্তে বসার অবকাশ পাননি নভিদ। কারওর ক্ষতবিক্ষত পা অস্ত্রোপচার করে বাদ দিয়েছেন তো কারও দেহ থেকে বার করে এনেছেন কাচের টুকরো।
যদিও ‘জঙ্গি’ তকমার জ্বালা বোধহয় তার থেকেও অনেক বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy