Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ব্রিজিতকে ব্যঙ্গ করে বিতর্কে শার্লি এবদো

ব্যঙ্গচিত্র ছেপে সন্ত্রাসহানার শিকার হয়েছিল তারা। তখন বিস্তর সহানুভূতিও কুড়িয়েছিল ফরাসি ব্যঙ্গচিত্র পত্রিকাটি।

সংবাদ সংস্থা
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০৩:৪৮
Share: Save:

ব্যঙ্গচিত্র ছেপে সন্ত্রাসহানার শিকার হয়েছিল তারা। তখন বিস্তর সহানুভূতিও কুড়িয়েছিল ফরাসি ব্যঙ্গচিত্র পত্রিকাটি। কিন্তু এ বার সদ্য নির্বাচিত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্‌রঁ-র স্ত্রী ব্রিজিতের ‘কুরুচিকর’ ব্যঙ্গচিত্র ছাপায় কেউই আর সুনজরে দেখছে না ‘শার্লি এবদো’-কে।

দেশের কনিষ্ঠতম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ শপথ নিয়েছেন ৩৯ বছরের ইমানুয়েল মাক্‌রঁ। আর দিন চারেক আগেই মাক্‌রঁ আর তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাক্‌রঁ-র একটি ব্যঙ্গচিত্র ছেপেছে ফরাসি পত্রিকা শার্লি এবদো। পত্রিকার প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে হাত দিয়ে আছেন মাক্‌রঁ। প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে লেখা, ‘‘ইনি মির‌্যাকল ঘটাতে চলেছেন।’’ দেশের ভাবী ফার্স্ট লেডি সম্পর্কে এই ধরনের ব্যঙ্গচিত্র কুরুচিকর বলে মনে করছেন অনেকেই। বিতর্ক এতটাই গড়িয়েছে যে, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ব্রিজিতের প্রথম পক্ষের মেয়ে তিফেইন ওজিয়ের। টুইট করেছেন খোদ ব্রিজিতও।

ইমানুয়েল-ব্রিজিতের অসম বয়সের প্রেম নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ আগে কম হয়নি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সৌজন্যে গত কয়েক মাস ধরেই ইমানুয়েল খবরের শিরোনামে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তখন থেকেই চলছে কাটাছেঁড়া। ১৫ বছরের কিশোর ইমানুয়েলের ৪০ বছরের শিক্ষিকার প্রেমে পড়ার গল্প সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে বলতেন প্রেসিডেন্টই। কিন্তু তাঁর ‘প্রৌঢ়া’ স্ত্রীকে নিয়ে গোড়া থেকেই হাসি-মশকরা চলছে ফরাসি সংবাদমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন মাক্‌রঁ দম্পতিও। গত মাসে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েও ব্রিজিত বলেছিলেন, ‘‘আমি জানি আমি মহিলা বলেই বয়স নিয়ে আমাদের এত কথা শুনতে হয়। ট্রাম্প দম্পতির মধ্যেও তো বয়সের এতটাই ফারাক। তবু ওঁদের আক্রমণ করা হয় না, কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প এক জন পুরুষ। মেলানিয়া যদি বয়সে বড় হতেন, আমি নিশ্চিত ওঁকেও কেউ ছাড়ত না।’’

শার্লি এবদো-র সেই ব্যঙ্গচিত্র।

শার্লি এবদোর সাম্প্রতিক ব্যঙ্গচিত্র নিয়েও মুখ খুলেছেন ৬৪ বছরের ব্রিজিত। নাম না করে ওই পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘‘প্রযুক্তিগত ভাবে যা সম্ভব, তা সব সময় কাঙ্খিত না-ও হতে পারে।’’ নিজের টুইটের সঙ্গে ‘জে স্যুই শার্লি’ কথাটিও হ্যাশট্যাগ দিয়ে জুড়েছেন ব্রিজিত। ২০১৫ সালে পত্রিকার অফিসে যখন জঙ্গি হামলা হয়েছিল, সেই সময় এই হ্যাশট্যাগ কার্যত স্লোগানের জায়গা নিয়েছিল। এ বার অবশ্য বেশির ভাগ নেটিজেনই পাশে দাঁড়িয়েছেন ব্রিজিতের। একজন লিখেছেন, ‘‘পাঁচ বছর প্রেসিডেন্ট মাক্‌রঁ-র পাশে না-থাকলেও কেউ নারী-বিদ্বেষী মন্তব্য করলেই আমি ফার্স্ট লেডির পাশে সব সময় থাকব।’’ অনেকে আবার শার্লি এবদো-র এই সংস্করণকে নারী বিদ্বেষী, কুরুচিকর পর্যন্ত বলেছেন।

মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুলেছেন ব্রিজিতের বড় মেয়ে তিফেইন-ও। স্ত্রীর প্রথম পক্ষের তিন সন্তানকেই বিয়ের পরে দত্তক নিয়েছিলেন ইমানুয়েল। বড় মেয়ের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের বয়সের ফারাক ৬-৭ বছরের। ৩২ বছরের তিফেইন একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় এটা নিয়ে আর উদাসীন থাকাটা ঠিক হবে না। তবু ২১ শতকের ফ্রান্সে এই ধরনের মন্তব্য যাঁরা করছেন, তাঁদের বেশি গুরুত্বও দেওয়াটাও উচিত বলে মনে হয় না। আমি জানি, যাঁরা এ সব কথা বলছেন, হিংসা থেকে বলছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE