শক্তি-জাহির: চিনের তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী। লিয়াওনিং প্রদেশের দক্ষিণে ডালিয়ান বন্দরে। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
চাপানউতোর উত্তর কোরিয়া নিয়ে কিছু কম ছিল না আমেরিকার সঙ্গে। তা ছাড়া, দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক তো রয়েছেই।
এরই মধ্যে বুধবার সামরিক শক্তি প্রদর্শনে দেশে এই প্রথম একটি বিমানবাহী রণতরী তৈরি করে আর এক প্রস্ত বিতর্কের মুখে চিন। এমনিতে ‘লিয়াওনিং’ নামে একটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে চিনের। দক্ষিণ চিন সাগরে এটিকে অনেক সময়েই সামরিক মহড়ায় দেখা যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন জমানার এই রণতরীকে ২৫ বছর আগে সংস্কার করে বানানো হয়েছিল। সেটির বিভিন্ন অংশ ইউক্রেন থেকে এনে চিনে জোড়া দেওয়া হয়। সেই তুলনায় দ্বিতীয় রণতরী অনেক বেশি আধুনিক। সামরিক বিশেষজ্ঞদের সূত্র উদ্ধৃত করে সরকারি সংবাদসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, ওই রণতরীটির এখনও নামকরণ হয়নি। লিয়াওনিং প্রদেশের দক্ষিণে ডালিয়ান বন্দরে এটি তৈরি করা হয়েছে। ২০২০-র আগে অবশ্য এর ব্যবহার সম্ভব হবে না।
তবে এটি নিয়ে চর্চা চলেছে বহু দিন ধরেই। বিদেশি সামরিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এবং চিনা সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে অনেক উপগ্রহচিত্র এবং খবর মিলেছে। সময়মতো এটিকে সামরিক মহড়ায় ব্যবহার করা হবে। ‘লিয়াওনিং’ চলে যাবে প্রশিক্ষকের ভূমিকায়। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানবাহী এই নতুন রণতরী নিয়ে আমেরিকার এখনই কোনও উদ্বেগের কারণ নেই। মার্কিন নৌবাহিনী যে দশটি বিমানবাহী রণতরী ব্যবহার করে, সেগুলির তুলনায় প্রযুক্তিগত দিক থেকে চিনা নয়া রণতরী পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু নিজের দেশে এই রণতরী নির্মাণ চিনের পক্ষে নিঃসন্দেহে বিরাট পদক্ষেপ। বিমানবাহী রণতরী নিয়ে যথেষ্ট গোপনীয়তা বজায় রাখে বেজিং প্রশাসন। তারা যে মাত্র দু’টি বিমানবাহী রণতরীতেই আটকে থাকবে, এমন ভাবারও কোনও কারণ নেই। চিনা সংবাদসংস্থা সূত্রে দাবি, ছ’টি এমন রণতরী তাদের দরকার।
বুধবার এই বিমানবাহী রণতরীর ছবি দেশের টিভি চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে। ডেক জুড়ে সাজানো লাল পতাকা। টাগ বোট টেনে নিয়ে আসছে তাকে। শ্যাম্পেনের বোতল ভেঙে চিনা সামরিক বাহিনীর ভাইস চেয়ারম্যান ফ্যান চাংলং এই রণতরীকে সাগরে স্বাগত জানান। রবিবারই ছিল চিনা নৌ বাহিনীর ৬৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। তার পরেই আত্মপ্রকাশ করল এই নয়া বিমানবাহী রণতরী।
পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু পরীক্ষা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার দ্বন্দ্ব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিনই এগিয়ে এসে তাদের উত্তেজনা কমাতে আমেরিকাকে সংযত হয়ে পদক্ষেপ করার কথা বলছে। অথচ আজ চিন এ ভাবে নিজের শক্তি জাহির করায় কপালে ভাঁজ পড়েছে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy