Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কিমকে নিয়ে চাপে ব্রিক্‌স-ও

আজ থেকে চিনের শিয়ামেনে শুরু হয়েছে ৫টি দেশের শীর্ষ সম্মেলন ব্রিক্‌স। যার উদ্বোধন করেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। চিন যে হেতু উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধু, তাই ব্রিক্‌সের আসরেও ছায়া ফেলে গেল পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় কিমের বেপরোয়া মনোভাব।

কিম জং উন।

কিম জং উন।

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

ফের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তোড়জোড় চালাচ্ছে কিম জং উনের দেশ। তাদের গোয়েন্দারা পড়শি দেশের তরফে আসা এমনই কিছু সঙ্কেত উদ্ধার করেছেন বলে আজ জানাল দক্ষিণ কোরিয়া।

সোলের দাবি, হাইড্রোজেন বোমায় গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে এ বার আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকেই (আইসিবিএম) পাখির চোখ করছেন বেপরোয়া কিম। সেই হামলা থেকে বাঁচতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় আমেরিকা যে ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ‘থাড’ ব্যবস্থা (টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স) মোতায়েন করেছে, তা আরও শক্তিশালী করারও পরামর্শ দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তাঁদের দেশে এই মুহূর্তে যে সব মার্কিন সেনা ঘাঁটি রয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের প্রস্তুতির মোকাবিলায় সেখানে আরও চারটি রকেট লঞ্চার বসানোর কথাও বলেন সোলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পরিস্থিতির পর্যালোচনায় আজই জরুরি বৈঠক ডেকেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। কিমকে নিয়ে নিন্দার ঝড় ব্রিক্‌সের মঞ্চেও।

আজ থেকে চিনের শিয়ামেনে শুরু হয়েছে ৫টি দেশের শীর্ষ সম্মেলন ব্রিক্‌স। যার উদ্বোধন করেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। চিন যে হেতু উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধু, তাই ব্রিক্‌সের আসরেও ছায়া ফেলে গেল পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় কিমের বেপরোয়া মনোভাব। গত কাল চাপের মুখে পড়েই কড়া ভাষায় হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার নিন্দা করেছিল বেজিং। আজ অবশ্য চিনের পরিবেশ মন্ত্রক দাবি করেছে, ওই বিস্ফোরণের জেরে তেমন কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ তাদের যন্ত্রে ধরা পড়েনি।

আরও পড়ুন: চিনের মুখেও পাক-সন্ত্রাস

গত মে মাসে বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডেকেছিলেন চিনফিং। সে বারও এক প্রস্ত পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং। তাই ব্রিক্‌সের কথা মাথায় রেখেই কালকের ওই হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা কি না— উঠে গেল সেই প্রশ্নটাও। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, কতকটা প্ররোচনার মতো করেই চিনের উপর পরোক্ষে চাপ বাড়িয়ে চলেছে পিয়ংইয়ং। উদ্দেশ্য একটাই— আমেরিকা যাতে সরাসরি তাদেরকে নিয়ে আলোচনায় বসে। চিনফিং তাঁর বক্তব্যে আজ উত্তর কোরিয়ায় প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও, কূটনৈতিক আলোচনার পক্ষে মত দিয়েছে ব্রিক্‌সের মঞ্চও।

কিন্তু এমনটা কি আদৌ সম্ভব? আমেরিকা যে ভাবে গত কাল থেকেই ফুঁসছে, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলেই মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁরাই আবার বলছেন, এই সমস্যাটা আজকের নয়। গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে আমেরিকা, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া যে ভাবে একের পর এক ভুল পদক্ষেপ আর অঙ্কে ভুল করে গিয়েছে, এখন তারই খেসারত দিতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উচ্চপদস্থ এক সরকারি কর্তা বলেন, ‘‘জর্জ ডব্লিউ বুশ থেকে শুরু করে বারাক ওবামা— বেপরোয়া কিমকে ঠেকাতে প্রায় কিছুই করেননি কেউ।’’

তা হলে ‘ট্রাম্পোচিত’ পাল্টা যুদ্ধের হুমকিই কি পথ? উত্তর নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE