Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
যুদ্ধের প্রস্তুতি? চিন্তায় বিশ্ব

কিমকে রুখতে বৈঠক ট্রাম্পের

সরাসরি না বললেও তিনি যে তলে তলে যুদ্ধের প্রস্তুতিই নিচ্ছেন, পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল অনেকের কাছেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

গত সপ্তাহেই ইঙ্গিতটা দিয়ে রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইট করে বলেছিলেন, ‘একটা জিনিসেই এখন কাজ হবে’। উত্তর কোরিয়ার প্রতি বার্তাটা তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সরাসরি না বললেও তিনি যে তলে তলে যুদ্ধের প্রস্তুতিই নিচ্ছেন, পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল অনেকের কাছেই। এ বার আক্ষরিক অর্থে সেই প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষাসচিব জেমস ম্যাটিস-সহ কয়েক জন শীর্ষ স্থানীয় সামরিক উপদেষ্টার সঙ্গে গত কাল বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। যার বিষয়বস্তু ছিল, উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন এবং আমেরিকা ও তার বন্ধু দেশগুলিকে হুমকি দেওয়া থেকে আটকাতে এই মূহূর্তে ঠিক কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ম্যাটিস ছাড়াও কালকের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে মোট ১৫টি পরীক্ষায় ২২ বার পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে কিম জং উনের দেশ। পিয়ং ইয়ং থেকে সরাসরি আমেরিকায় পরমাণু হামলার হুমকিও দিয়েছেন কিম। শাস্তি হিসেবে উত্তর কোরিয়ার উপর প্রতি বারই কোনও না কোনও কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। কিন্তু কিম তাতে দমেননি। খুব সম্প্রতি জাপান উপকূলের উপর দিয়ে দু’টি অন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা করেছে তারা। পরমাণু পরীক্ষা না থামালে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চ থেকে উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। পাল্টা ট্রাম্পকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে আক্রমণ করেছেন কিমও। দু’পক্ষে বাদানুবাদ অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়েওছে। কিন্তু এত দিন শুধু মুখে যুদ্ধের কথা বললেও এ বার সরাসরি সে নিয়েই ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন ট্রাম্প।

একই সঙ্গে কাল থেকে কোরীয় উপসাগরে বেড়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর তৎপরতাও। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পিয়ং ইয়ংকে শক্তি প্রদর্শন করতে কাল কোরীয় উপসাগরের উপর দিয়ে উড়েছে দু’টি মার্কিন সুপারসনিক বোমারু বিমান। শুধু তা-ই নয়, জাপান সাগরে কাল আমেরিকার সঙ্গে যৌথ মহড়া দিয়েছে জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনীও। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মন্ত্রকের মুখপাত্র স্পষ্টই জানিয়েছেন, এই মহড়ার মাধ্যমে আমেরিকা ও তার বন্ধুপক্ষ উত্তর কোরিয়াকে দেখাতে চায়, তারা যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।

যদিও মার্কিন প্রতিক্ষাসচিব সোমবার পর্যন্ত বলে এসেছেন তাঁরা চেষ্টা করবেন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আর কূটনৈতিক আলোচনার রাস্তায় হাঁটতে। তবে সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, আমাদের সামরিক ভাবে এমন প্রস্তুত থাকতে হবে যে, প্রেসিডেন্ট চাইলেই তৎক্ষণাৎ সেই রাস্তায় হাঁটা যায়।

তবে এরই মধ্যে চিন্তা বাড়িয়েছে হ্যাকিংয়ের খবর। আমেরিকা-দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কিছু অতি সংবেদনশীল গোপন নথি উত্তর কোরিয়া হ্যাক করেছে বলে কালই অভিযোগ করেছিল সোল। দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য রি শিওল-হি জানিয়েছিলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্যভাণ্ডার থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের নথি। ফাইলগুলি যদিও গত বছর সেপ্টেম্বরের। তবু ২৩৫ জিবি-র তথ্য শত্রুপক্ষের হাতে চলে যাওয়াটা যথেষ্ট ঝুঁকির কাজ বলে মনে করছে সোল। উত্তর কোরিয়াকে আটকাতে আমেরিকা ও তার মিত্রপক্ষের কৌশল ওই সব ফাইলে নথিবদ্ধ ছিল বলে জানা গিয়েছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া নথি নিয়ে সরাসরি পেন্টাগনের তরফে সরকারি ভাবে একেবারেই মুখ খোলা হয়নি। তবে মুখপাত্র কর্নেল রবার্ট ম্যানিং বলেছেন, ‘‘আমাদের অভিযান পরিকল্পনা এতটাই সুরক্ষিত যে, উত্তর কোরিয়ার যে কোনও হুমকি তার মোকাবিলা করতে পারে। মার্কিন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু মনে করছেম, পিয়ং ইয়ংয়ের হাতে এ ভাবে তথ্য চলে গেলে ভবিষ্যতে কিমকে আটকানো আরও মুশকিল হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE