Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইবোলার ছোবলে আরও এক, আতঙ্কে আমেরিকাও

এক, দুই, তিন... লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। টেক্সাসে এই নিয়ে তৃতীয় ব্যক্তি আক্রান্ত হলেন ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ইভিডি)-এ। তা-ও সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই। পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার ছোবলে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। সিয়েরা লিয়ন, লাইবেরিয়া ও গিনি-র মতো দেশে আদৌ চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবারই। কিন্তু এ বার একই প্রশ্নের মুখে আমেরিকাও।

সংবাদ সংস্থা
টেক্সাস শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৮
Share: Save:

এক, দুই, তিন... লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। টেক্সাসে এই নিয়ে তৃতীয় ব্যক্তি আক্রান্ত হলেন ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ইভিডি)-এ। তা-ও সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই।

পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার ছোবলে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। সিয়েরা লিয়ন, লাইবেরিয়া ও গিনি-র মতো দেশে আদৌ চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবারই। কিন্তু এ বার একই প্রশ্নের মুখে আমেরিকাও।

ঘটনার সূত্রপাত দু’সপ্তাহ আগে। জ্বর গায়ে আমেরিকা ফিরেছিলেন টমাস এরিক ডানকান। লাইবেরিয়া থেকে এসেছেন জানা সত্ত্বেও টেক্সাসের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরে বাড়াবাড়ি হলে ফের ডানকানকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। কিন্তু তত ক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। মারা যান ডানকান। ইভিডি-আতঙ্ক থেকেই যায়। এক সপ্তাহের মাথায় ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হন ওই হাসপাতালেরই এক নার্স। তার পর দু’টো দিন যেতে না যেতেই আজ ফের আরও এক নার্সের শরীরে মিলল ভাইরাস। দু’জনেই ডানকানের চিকিৎসা করেছিলেন। আপাতত তাঁদের আইসোলেশন চেম্বারে রাখা হয়েছে। ইভিডি-তে আক্রান্ত হওয়ার পর ৪৮ জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন ডানকান। আলাদা করে রেখে নজর রাখা হচ্ছে তাঁদের উপরেও। কিন্তু সে তো ডানকানকেও রাখা হয়েছিল! তাই এ ভাবে আদৌ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠছেই। প্রশাসন অবশ্য পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, এমন কথা মানতে নারাজ। বরং তাদের অভিযোগ, টেক্সাসের ওই হাসপাতালেরই গাফিলতি ছিল। আর তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ডানকানের। যদিও হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, এক বার মাত্র ডানকানের ঘরে গিয়েছিলেন আক্রান্ত প্রথম নার্স। তা-ও সুরক্ষা মুখোশ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে। তার পরেও কী ভাবে ওই মহিলার রক্তে ইবোলার জীবাণু মিলল, তা নিয়ে ধন্দে খোদ চিকিৎসকেরাই।

পরিস্থিতি এমনই জোরালো হয়ে উঠেছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আজ তাঁর নিউ জার্সি ও কানেক্টিকাট সফর বাতিল করে ক্যাবিনেটের শীর্ষ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ইভিডি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সেও বসেন। সমস্যা সামলাতে আলোচনায় বসেছে জঙ্গিযুদ্ধে বিভক্ত ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। কয়েক মাস আগে পর্যন্ত তারা বোমা-গুলিতে ঝাঁঝরা করেছে একে অপরকে। দু’দেশের সীমান্ত, নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকা এবং যে এলাকা দু’দেশই ব্যবহার করে, সেই সব জায়গায় ইবোলা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে।

রোগের সূত্রপাত জ্বর। সেই সঙ্গে চোখ-নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ, গায়ে ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা, বমি আর পেট খারাপ। ক্রমশ বিকল হতে শুরু করে লিভার, কিডনির মতো বিভিন্ন অঙ্গ। এ ভাবে কয়েক সপ্তাহ চলার পরই মৃত্যু। হু-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর আশঙ্কা ৯০ শতাংশ। ভাইরাসটির মূল বাহক এক প্রজাতির ফল-খেকো বাদুড়। তারা ভাইরাসটি বহন করে, তবে নিজেরা আক্রান্ত হয় না। পরে ওই বাদুড় থেকে বিভিন্ন প্রাণীর দেহে রোগ সংক্রামিত হয়। আর কোনও ভাবে আক্রান্ত প্রাণীদের মাংস খেয়ে ফেললে বা সংস্পর্শে এলেই ইবোলা ভাইরাসটি চুপিসাড়ে ঢুকে পড়ে মানবদেহে। তার পর সংক্রামিত মানুষের রক্ত বা দেহরস (যেমন হাঁচি, কাশি) থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে অন্য মানুষের দেহে।

গত কয়েক মাসে ইভিডি-তে মারা গিয়েছেন চার হাজারেরও বেশি মানুষ। বেশির ভাগই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা। না হলে আফ্রিকা-ফেরত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিকারের ব্যবস্থা যে হেতু নেই, তাই প্রতিরোধ ব্যবস্থাই জোরদার করা হোক। এড়িয়ে চলা হোক আক্রান্তের (মানুষ বা পশু-পাখি) সংস্পর্শ। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বহু দিন আগেই সতর্কতা জারি করলেও বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। পিছু ছাড়ছে না ইবোলা-আতঙ্ক।

নেপালে মৃত ২১ পর্বতারোহী

হুদহুদের প্রভাব পড়ল পড়শি দেশ নেপালেও। তুষারঝড়ে সেখানে প্রাণ হারালেন অন্তত ২১ জন পর্বতারোহী। মৃতদের মধ্যে এক ভারতীয়ও রয়েছেন। তবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। বুধবার নেপালের মানাঙ্গ ও মুস্তাঙ্গ জেলার সীমান্তে থোরাঙ্গ পাস এলাকার এই তুষার ঝড়ে এখনও পর্যন্ত ৮৫ জন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই নেপাল, পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইজরায়েলের বাসিন্দা। হুদহুদের প্রভাবে মধ্য ও পশ্চিম নেপালে গত দুু’দিন ধরেই ঝোড়ো হাওয়া আর ভারী বৃষ্টি চলছে। বুধবার আগাম সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ শুরু হয় তুষারঝড়। অন্নপূর্ণা সার্কিট অভিযান থেকে ফেরার পথে পর্বতারোহীরা প্রবল তুষার ঝড়ের মুখে পড়েন। সরকারি সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে সেনা কপ্টার। সরকারের দাবি, অন্তত ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধবলগিরি শৃঙ্গের কাছেও দুর্যোগের মুখে পড়েন পর্বতারোহীরা।

সূর্য-প্রণাম। তিব্বতের মানস সরোবরে। মলয়কুমার দাসের তোলা ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE