ফেসবুকে পোস্ট করা একটা নিজস্বী!
আর এই একটামাত্র সূত্র ধরেই দু’বছর আগের একটা খুনের রহস্যের কিনারা হল! প্রিয় বন্ধুকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হল কানাডার এক তরুণী। সোমবার শ্যেন রোজ আঁতোয়ান নামে বছর একুশের ওই তরুণীকে সাত বছরের কারাবাসের সাজা দিয়েছে একটি আদালত।
২০১৫ সালের মার্চ মাসে খুন হয়েছিলেন ব্রিটনি গার্গল নামে বছর আঠারোর এক তরুণী। সাসকাটুনে রাস্তার ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তার দেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি বেল্ট। জানা যায়, শ্বাসরুদ্ধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে ব্রিটনির।
কিন্তু কে বা কারা খুন করেছে ব্রিটনিকে, তা নিয়ে অথৈ জলে পড়েন তদন্তকারীরা। সে রকম কোনও সূত্রও মেলেনি। ওই রহস্যের কিনারা করতে পুলিশ কথা বলেন ব্রিটনির বান্ধবী আঁতোয়ানের সঙ্গে। তখন সে জানিয়েছিল, ওই রাতে ব্রিটনির সঙ্গেই ছিল সে। তারা বেশ কয়েকটি পানশালায় গিয়েছিল।
এর পরে আঁতোয়ান জানায়, টরোন্টোর দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির হাতেই খুন হন ব্রিটনি। কিন্তু তার দেওয়া তথ্যে অসঙ্গতি পান তদন্তকারীরা। আর তাঁরা যে পানশালায় গিয়েছিলেন, সেখানে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ফলে তদন্ত সেই তিমিরেই রয়ে যায়।
প্রায় দু’বছর ধরে রহস্যের কিনারা করতে না পেরে তদন্তকারীরা শেষে ফেসবুক ঘাঁটতে শুরু করেন। সেখানে আঁতোয়ানের অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে তাঁরা একটি নিজস্বী পান। যেটি ব্রিটনির দেহ মেলার ঠিক ছ’ঘণ্টা আগেই পোস্ট করা হয়েছিল। ওই ছবিটিতেই তদন্তকারীরা দেখতে পান, ব্রিটনির দেহের পাশে যে বেল্টটি উদ্ধার হয়েছে, সেই বেল্টটিই ওই নিজস্বীটিতেই রয়েছে।
এর পরে আঁতোয়ানের এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারে, ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় তাঁর বাড়িতে এসেছিল আঁতোয়ান। সে পাগলের মতো করছিল আর বলছিল, মাদকাসক্ত অবস্থায় কথা কাটাকাটির পরে সে তার বন্ধুকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। এর পরেই পুলিশ আঁতোয়ানের বিরুদ্ধে মামলা সাজায়। এর পরে সে অপরাধ কবুল করে। কিন্তু মামলা চলাকালীন সে জানায়, কী ভাবে সে ব্রিটনিকে খুন করেছিল, মনে নেই। তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে পালক বাবা-মায়ের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আঁতোয়ান।
প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে এখন আঁতোয়ানের আক্ষেপ, ‘‘আমি এর জন্য নিজেকে কখনও ক্ষমা করতে পারব না। এখন কিছু বললে বা করলেও ও আর ফিরে আসবে না। আমি খুবই দুঃখিত। এটা কখনওই হওয়া উচিত ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy