Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
International News

লাদেন-নিকেশের রাতে কী হয়েছিল? মুখ খুললেন তাঁর চতুর্থ স্ত্রী

কিন্তু, এত বছর পর কেন? আসলে ব্রিটিশ সাংবাদিক ক্যাথি স্কট-ক্লার্ক এবং আদ্রিয়ান লেভি একটি বই লিখেছেন। ‘দ্য এক্সাইল’ নামে সেই বইয়ের জন্যই তাঁরা কথা বলেছিলেন আমলের সঙ্গে। আর সে কথা প্রসঙ্গেই বেরিয়ে এসেছে অনেক অজানা তথ্য।

ওসামা-বিন-লাদেন। ফাইল চিত্র।

ওসামা-বিন-লাদেন। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ১৫:৪২
Share: Save:

কী হয়েছিল সেই রাতে? যে রাতে নিকেশ করা হয়েছিল ওসামা বিন লাদেনকে?

পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদের গোপন ডেরায় যে দিন মার্কিন নেভি সিল অভিযান চালিয়েছিল, সে রাতে লাদেনের পাশেই ছিলেন তাঁর চতুর্থ স্ত্রী আমল। ছিলেন তাঁর এক ছেলে হুসেন। গোটা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ওই দু’জন। সম্প্রতি সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন আমল।

কিন্তু, এত বছর পর কেন?

আসলে ব্রিটিশ সাংবাদিক ক্যাথি স্কট-ক্লার্ক এবং আদ্রিয়ান লেভি একটি বই লিখেছেন। ‘দ্য এক্সাইল’ নামে সেই বইয়ের জন্যই তাঁরা কথা বলেছিলেন আমলের সঙ্গে। আর সে কথা প্রসঙ্গেই বেরিয়ে এসেছে অনেক অজানা তথ্য। খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে ‘দ্য এক্সাইল’। সম্প্রতি ওই বই নিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য সানডে টাইমস’-এ কলম ধরেছিলেন ওই দুই সাংবাদিক। সেখানে লাদেন হত্যা এবং নেভি সিলের গোপন অভিযানের কথাও উঠে আসে। তাঁরা লিখেছেন, অ্যাবটাবাদে প্রায় নিশ্ছিদ্র দুর্গে তিন স্ত্রী এবং ১৭ জন ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকতেন ওসামা। প্রায় ছ’বছর ধরে সেখানে আত্মগোপন করেছিলেন। ২০১১-র ১ মে ওই ডেরাতেই অভিযান চালান মার্কিন নেভি সিলের কম্যান্ডোরা। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র তথ্য অনুযায়ী, ওই রাতে মার্কিন সেনার দু’টি ‘ব্ল্যাক হক’ হেলিকপ্টার নামে অ্যাবটাবাদ কম্পাউন্ডে। তার মধ্যে একটি ভেঙে পড়ে। ওই বাড়িরই তিন তলায় খোঁজ মেলে লাদেনের। সেখানেই তাকে নিকেশ করা হয়।

আরও পড়ুন: হাতে হাত, না হাতাহাতি! ফের বিতর্কে ট্রাম্প

আমল ওই দুই সাংবাদিককে জানিয়েছেন, সেই রাত ছিল বিভীষিকাময়। তিন তলার বাড়িতে চার স্ত্রী-র মধ্যে তিন জন থাকতেন। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে সেখানেই থাকতেন ওসামা। রাত ১১টা নাগাদ রাতের খাওয়া ও প্রার্থনা সেরে সকলেই ঘুমিয়ে পড়েন। আচমকা একটি শব্দে আমলের ঘুম ভাঙে। উঠে বসেন ওসামাও। তাঁর মুখে ছিল আতঙ্কের ছায়া! স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের বাড়ির নীচে গোপন কুঠুরিতে চলে যেতে বলেন। আমল জানিয়েছেন, ওসামা নাকি সেই সময়ে বলেন, ‘ওরা আমাকে চায়, তোমাদের নয়।’ কিন্তু, রাজি হননি আমল। বাকিরা চলে গেলেও ছেলে হুসেনকে নিয়ে তিনি থেকে গিয়েছিলেন। ছিলেন দুই মেয়েও। পরিবারেরই কোনও বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে মার্কিন বাহিনী ওই গোপন ডেরার সন্ধান পায়, সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন আমল। এবং এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত।

ওসামা নিকেশের লাইভ চলছে হোয়াইট হাউসে। সংগৃহীত ছবি।

আমলের কথা অনুযায়ী, দুর্গের তিন তলার উঠে প্রথমেই ওসামার এক ছেলে খালিদের মুখোমুখি হয় নেভি সিলের সদস্যেরা। তাঁর হাতে ছিল একে-৪৭। খালিদকে নিকেশ করে তিন তলায় উঠে একের পর এক ঘরে তল্লাশি চালাতে থাকেন কম্যান্ডোরা। এর পর আচমকাই পর্দা সরিয়ে আমলদের ঘরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। কম্যান্ডোদের বাধা দিতে মুহূর্তের মধ্যেই তাঁদের ঝাঁপিয়ে পড়েন ওসামার দুই মেয়ে সুমাইয়া ও মিরিয়াম। এগিয়ে যান আমলও। কিন্তু, কম্যান্ডোরা তাঁর পায়ে গুলি করেন। আমলের কথায়, ‘‘পায়ে গুলি লাগার পরেই আমি পড়ে যাই। বুঝতে পারি ওরা জানে মেরে ফেলবে। তাই মরে পড়ে থাকার ভান করি।’’ সেই সময় নাকি আতঙ্কে কাঁপছিলেন ওসামার বাকি স্ত্রী ও সন্তানেরা। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ওসামাকে বুলেটে ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁরা। গুলিতে লাদেনের মাথা ফুঁড়ে দিয়েছিলেন মার্কিন নেভি সিলের কম্যান্ডোরা। এর পর তাঁর দেহ ও পরিবারের বাকি জীবিত সদস্যদের নিয়ে বেরিয়ে যান কম্যান্ডোরা। তার আগে দ্বিতীয় স্ত্রী খাইরিয়া ও দুই মেয়েকে দিয়ে ওসামার মৃতদেহ শনাক্তকরণ করিয়েছিলেন তাঁরা।

হোয়াইট হাউসে বসে পুরো অপারেশনটা নাকি লাইভ দেখেছিলেন মার্কিন শীর্ষ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা। এর পর সেই রাতের অভিযান নিয়ে, নানা রকম তথ্য উঠে আসে। আমলের বয়ান সেই তালিকায় নয়া সংযোজন। সম্প্রতি লাদেনকে একাই হত্যা করেছিলেন বলে দাবি করেন মার্কিন নেভি সিল টিমের প্রাক্তন সদস্য রবার্ট ও’নিল। সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর বই— ‘দ্য অপারেটর: ফায়ারিং দ্য শটস দ্যাট কিলড বিন লাদেন’-এ সেই রাতের খুঁটিনাটি বিবরণ দিয়ে এমনটাই দাবি করেছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE