Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International

অস্বীকার করেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক কী, বোঝাচ্ছে পাক মিডিয়া!

গত কাল গভীর রাতে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সাতটি জঙ্গি ঘাঁটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’ কার্যত মাটিতে মিশে যাওয়ায় দৃশ্যতই গুমরে মরছে পাকিস্তান! অস্বীকার করেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক কী, বোঝাচ্ছে পাক মিডিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৭:২২
Share: Save:

বাড়িতে ‘সিবিআই তল্লাশি’ চালিয়েছে, এ কথা মানতে কুণ্ঠা হচ্ছে আর তার পরের দিনই যেচে পাড়া-প্রতিবেশীকে বুঝিয়ে বলতে হচ্ছে, ‘সিবিআই তল্লাশি’র মানেটা কী, সেটা কী জিনিস!

নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সাত-সাতটি জঙ্গি ঘাঁটি বুধবার গভীর রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আচমকা হানাদারিতে গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান আর পাক সংবাদ মাধ্যমের ভাবখানা এমন যেন, কিছুই হয়নি। এমন তো হামেশাই হয়! দু’পক্ষের মধ্যে একটু গোলাগুলি চলেছে। যেমন হয়েই থাকে। আর সেই গুলি-যুদ্ধে দুই পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং ন’জন গুরুতর জখম হয়েছে। ব্যস, এই টুকুই! কোনও ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হয়নি। অথচ এই পাক সংবাদ মাধ্যমেই বৃহস্পতিবার দিনভর বোঝানো হচ্ছে, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’টা ঠিক কী জিনিস, সেটা বলতে কী বোঝায়। সেটা কোনও যুদ্ধ বা ছায়া-যুদ্ধ কি না।

যাকে নিন্দুকেরা বলছেন, ‘‘ভাবের ঘরে চুরি। যেন ঠাকুর ঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি গোছের অবস্থা!’’

গত কাল গভীর রাতে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সাতটি জঙ্গি ঘাঁটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’ কার্যত মাটিতে মিশে যাওয়ায় দৃশ্যতই গুমরে মরছে পাকিস্তান! সেটা কী রকম?

তার দু’টি ‘দৃষ্টান্ত’ তুলে ধরা যাক।

প্রথমত, পাক সেনাবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ সংক্রান্ত কর্মসূচীতে রাওয়ালপিন্ডিতে গিয়ে পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফ বলেছেন, ‘‘অনেক শক্ত শক্ত লড়াই করার ক্ষমতা ধরে পাকিস্তান। যাকে আক্ষরিক অর্থেই বলে ‘হার্ড ব্যাট্‌ল’, মাটি কামড়ে দাঁতে দাঁত চেপে সেই লড়াইটা করার ক্ষমতা যথেষ্টই রয়েছে আমাদের (পাক) সেনাবাহিনীর।’’ পাক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদটি খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, পাক রাজনীতিতে আপাতত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ঘোর বিরোধী ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ দলের প্রধান ক্রিকেটার ইমরান খান বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘প্রথমে আমার একটা কড়া বার্তা দেওয়ার ছিল প্রধানমন্ত্রী শরিফকে, যেটা আমি কাল দিয়েছি। আর আগামী কাল, শুক্রবার রাইভিন্দের সমাবেশে আরেকটা কড়া বার্তা দেব ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মোদীকে কী ভাবে সমঝে দিতে হয়, সেটা শরিফকে কাল বুঝিয়ে দেব। বুঝিয়ে দেব, জেনারেল রহিল শরিফই দেশের আদত প্রতিনিধিত্ব করছেন।’’ বেশির ভাগ পাক সংবাদ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার এই খবরটাই ‘সেকেন্ড লিড’। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ খবর।

তৃতীয়ত, পাক সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমাদের ভাঁড়ারে যে পরমাণু অস্ত্রগুলি রয়েছে, সেগুলি সাজিয়ে রাখার জন্য নয়। লোক দেখানোর জন্যেও নয়!’’ পাক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদটি খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে। সেই পরমাণু অস্ত্রগুলি কীসের জন্য তা খোলসা করে না বললেও, এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গুমরানোর ছাপটা স্পষ্টই।

পাকিস্তানের প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘ডন’ তার অনলাইন এডিশনে দিনভর বুঝিয়ে যাচ্ছে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ কী জিনিস। আর তার পাশেই ‘লি়ড নিউজ’ করেছে ‘ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দাবিকে ফালতু বলে উড়িয়ে দিল পাক সেনাবাহিনী’। একই অবস্থান পাকিস্তানের প্রথম সারির উর্দু দৈনিক ‘জং’-এর। এবং নিউজ টেলিভিশন চ্যানেল ‘জিও টিভি’র।

আরও পড়ুন- কড়া নিন্দা করেও পাক দাবি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়নি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE