Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চাভেস-পত্নী, ইভাঙ্কার বন্ধু!

কে এই মাদাম গিসেল? কখনও তাঁর দাবি তিনি মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফতেহ আল সিসি-র স্ত্রী। কখনও আবার ভেনিজুয়েলার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উগো চাভেসের পত্নী! কখনও শোনা যায়, হোয়াইট হাউসে তাঁর অফিস!

মাদাম গিসেল

মাদাম গিসেল

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

বাড়ির নম্বর ৭১৩— ওয়াশিংটন ছাড়িয়ে মেরিল্যান্ডের চেভি চেজ-এর অভিজাত বহুতল। ওটাই মাদাম গিসেলের ঠিকানা!

কে এই মাদাম গিসেল? কখনও তাঁর দাবি তিনি মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফতেহ আল সিসি-র স্ত্রী। কখনও আবার ভেনিজুয়েলার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উগো চাভেসের পত্নী! কখনও শোনা যায়, হোয়াইট হাউসে তাঁর অফিস! ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কার পাশেই নাকি বসেন। আল সিসির সঙ্গে ট্রাম্পের আলাপের পিছনেও নাকি তিনি। এই সব গপ্পো তিনি অকাতরে বলে বেড়ান! সুযোগ পেলে ঠকিয়েও নেন লোকজনকে!

সম্প্রতি দুই ‘প্রতারিত’ প্রতিবেশীর কাহিনি প্রকাশ পেয়েছে সংবাদমাধ্যমে। ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনীকে টি-শার্ট বিক্রি করার বুদ্ধি দু’জনকেই বাতলেছিলেন গিসেল! সেই সূত্রে হাতিয়ে নেন প্রচুর ডলার। বব আন্ডারউড আর সাদি, দুই পড়শি পরস্পরকে চিনতেনও না। মাদাম গিসেলের (এই নামে ডাকতেন ওঁকে) সূত্রেই জানতে পারেন, কী ভাবে প্রতারিত হয়েছেন তাঁরা।

মার্কিন দৈনিকের হাতে থাকা অসংখ্য টেক্সট মেসেজ থেকে গিসেলের কীর্তির মণিমুক্তো বেরিয়ে এসেছে। মাদাম সব অভিযোগই উড়িয়েছেন। দৈনিকের সঙ্গে কথা বলবেন বললেও শেষমেশ অবশ্য তা হয়নি। পরিবারের কাছেও তিনি দুঃস্বপ্ন। সন্তানরা গিসেলের থেকে দূরে থেকেই স্বচ্ছন্দ।

পঞ্চাশ ছোঁয়া এই মহিলা নিজের পরিচয় দিতেন গিসেল ইয়াজজি নামে। ওই অ্যাপার্টমেন্টে কখনও লবি, কখনও লিফটে ‘রূপের’ ছটা ছড়িয়ে মাদাম আলাপ জমাতেন প্রতিবেশীদের সঙ্গে। বছর ৫৩-র ববের ৭ বছরের কন্যার সঙ্গে ভাব জমিয়ে ২০১৫ সালের গোড়ার দিকে মাদাম ঢুকে পড়েন আন্ডারউড পরিবারে। ববকে বলেছিলেন, তাঁর জন্ম লেবাননে। সারা বিশ্ব ঘুরেছেন। মাসে রোজগার ২১ লক্ষ ডলার! পাকিস্তান নীতি নিয়ে তিনি নাকি ওবামা প্রশাসনকে ‘গোপন পরামর্শ’ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সন্তানদের কাছ থেকে দূরে থাকতে কষ্ট হয়। ববের মেয়েকে তাই এত পছন্দ তাঁর!

চাভেসের সঙ্গে বিয়ের গল্পটাও শুনেছিলেন বব-ই। অসুস্থ চাভেসের সঙ্গে কী ভাবে গিসেল কিউবা যান, সেখানকার ডাক্তাররা কী বললেন, রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎ— সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ছিল মাদামের বয়ানে। এমন অনর্গল বলতেন তিনি, যে পলকে বিশ্বাস হতো তাঁর কথা। যেন চলন্ত একটা বিশ্বকোষ!

বিবাহবিচ্ছেদের পরে একটু টানাটানি ছিল ববের। টি শার্ট বেচে লাভের গল্প তখনই এল। ২০১৫-র শেষ দিকে রাজি হলেন বব। দিনে দিনে পুঁজির চাহিদা তুঙ্গে উঠল। গুনেগেঁথে বব দেখছেন, ৫০ হাজার ডলারেরও বেশি বেরিয়ে গিয়েছে তাঁর। এর পরে এ বছর জুনে বব দেখা পান সাদি-র। বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় তখনই।

সাদিও স্বপ্ন দেখতেন, বড় বাড়ি, পিএইচ ডি ডিগ্রির। টি শার্ট বেচার গল্প শুনে বিনা কাগজে ৫ হাজার ডলার গিসেলকে দেন। পরে সাদি গুগলে জানতে পারেন, গিসেল কে। কলম্বিয়ায় বেশ পরিচিত একটা নাম, গিসেল জালার। তিনিই মাদাম। ওখানেই প্রতারণায় হাত পাকানো। জেল খাটা। আদালতের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়া। আর কলম্বিয়ায় ফেরেননি। সে দেশ তাঁকে চেনে ‘বিখ্যাত ফেরার’ হিসেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE