Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জঙ্গি ভাঁড়ারে পাক-অর্থ কী ভাবে, দেখাবে দিল্লি

আগামিকাল থেকে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় শুরু হচ্ছে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে তৈরি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ‌্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর বৈঠক। চলবে ২৩ তারিখ জুন পর্যন্ত। ১৯৮টি দেশ নিয়ে তৈরি এই টাস্ক ফোর্স-এর সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর প্রধান কার্নাল সিংহের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যাচ্ছে।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০৩:১২
Share: Save:

আর কয়েক ঘণ্টা পরেই লন্ডনের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাইশ গজের যুদ্ধে নামবে ভারত। আর প্রায় একই সময়ে লন্ডন থেকে তেরোশো কিলোমিটার দূরে স্পেনের মাটিতে ইসলামাবাদকে সন্ত্রাস প্রশ্নে বেঁধার প্রস্তুতি নিচ্ছে নয়াদিল্লি।

আগামিকাল থেকে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় শুরু হচ্ছে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে তৈরি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ‌্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর বৈঠক। চলবে ২৩ তারিখ জুন পর্যন্ত। ১৯৮টি দেশ নিয়ে তৈরি এই টাস্ক ফোর্স-এর সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর প্রধান কার্নাল সিংহের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যাচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, জামাত উদ দাওয়া, লস্কর ই তইবা, জৈশ ই মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে পাকিস্তানের অর্থসাহায্য দেওয়া নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করেছে ভারত। আগামিকাল ১৯৮টি দেশের প্রতিনিধিদের সামনে সেই রিপোর্ট পড়ে শোনানো হবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই আলোচনাচক্রে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রপুঞ্জ, আইএমএফ-এর প্রতিনিধিরাও।

আরও পড়ুন: মানব-ঢাল পদ্ধতি নয়

কী থাকছে ওই রিপোর্ট?

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, তথ্য ও নথি সহযোগে বলা হবে, গত ১৫ বছরে জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের জেইউডি-র মুখ্য শাখা সংগঠন ফালাহ-ই-ইনসানিয়াৎ-এর ৬৯টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ইসলামাবাদ, যা কিনা নেহাতই লোকদেখানো। নামে-বেনামে তাদের অন্তত ১০০০টি অ্যাকাউন্ট চালু রয়েছে, যেখানে নিয়মিত ভাবে টাকা জমা পড়ে। বারবার বলা সত্ত্বেও জঙ্গি সংগঠনটির টাকার জোগান বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া তো দূর, বরং তাদের শ্রীবৃদ্ধির জন্যই আরও বেশি করে টাকা জোগানের ব্যবস্থা করে গিয়েছেন পাক রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটি অংশ! বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ‘‘লোক দেখানোর জন্য কাগজে-কলমে লস্কর বা জেইউডি-র বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তান। কিন্তু সেটা গোটা দুনিয়াকে ধোঁকা দেওয়া ছাড়া কিছু নয়। মূলত পাক মদতেই ইয়েমেন, সোমালিয়া, শ্রীলঙ্কার মতো দেশে শাখা ছড়াচ্ছে জেইউডি।’’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হচ্ছে, জেইউডি-র হাফিজ সইদ, আব্দুল রেহমান মক্কি এবং অন্যান্য জঙ্গি নেতারা পাক সমর্থনে প্রকাশ্যেই সভা করছে, মিছিল করছে, টাকা তুলছে, যুবদের নিয়োগ করছে। আর এই সব কিছুর উদ্দেশ্যই হল ভারতের মাটিতে নাশকতা ছড়ানো। এদের উদ্যোগেই ভারতীয় সেনার হাতে গুলি খেয়ে মরা জঙ্গিদের শেষকৃত্য ঘটা করে করা হয়েছে বলেও প্রমাণ রয়েছে দিল্লির হাতে। ২৬/১১-র মুম্বই হামলা এবং পঠানকোট আক্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া সত্ত্বেও তারা যে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি, সে কথাও আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলতে চলেছে ভারত।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত বছর এই এফএটিএফ-এর বৈঠকে জঙ্গি সংগঠনগুলির অর্থের জোগান বন্ধ না করার জন্য সমালোচিত হয়েছিল পাকিস্তান। এক ভারতীয় কর্তার কথায়, ‘‘পাকিস্তান যদি এ বার জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্য বন্ধ করা নিয়ে কোনও নক্সা তুলে ধরতে না পারে, তবে আন্তর্জাতিক ভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE