সন্ত্রাস নিয়ে আন্তর্জাতিক আতস কাচের নীচে পাকিস্তানকে ফেলার জন্য কোমর বাঁধছে নয়াদিল্লি।
আগামী মাসে প্যারিসে বসতে চলেছে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) বৈঠক। এই আন্তর্জাতিক সংগঠনটি হাওয়ালা ও জঙ্গি সংগঠনগুলিকে অর্থ জোগান দেওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ডান হাত। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আসন্ন সম্মেলনে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা হবে। এ ব্যাপারে ভারত যাদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ এবং তথ্য আদানপ্রদানের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে অবশ্যই রয়েছে আমেরিকা। তা ছাড়া ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং রাশিয়াও ভারতের সঙ্গে যৌথ ভাবে রণকৌশল স্থির করছে বলে সাউথ ব্লক সূত্রে খবর।
এই প্রয়াস শুরু হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এফএটিএফ-এর বৈঠকে পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, হাওয়ালা এবং জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আর্থিক মদত দেওয়া রুখতে দেশের ভেতরের ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে। সতর্ক করা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না দেখে গত বছর এই সংগঠনের ‘ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন রিভিউ গ্রুপ’ এ বিষয়ে নোটিসও দেয় ইসলামাবাদকে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, এই পদক্ষেপের পিছনে প্রধান ভূমিকা ছিল ভারতেরই। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করতে এবং আন্তর্জাতিক তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠন ও ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য বন্ধ করতে পাকিস্তান যে কোনও পদক্ষেপই করেনি, তা তথ্যপ্রমাণ দিয়ে রিভিউ গ্রুপের হাতে তুলে দিয়েছিল সাউথ ব্লক।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ চিন সাগরে দিল্লির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ফের সরব হল বেজিং
গত বছর নভেম্বর মাসে আর্জেন্তিনায় এফএটিএফ-এর বৈঠকে আমেরিকা এবং রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল রকম চাপ তৈরি করে ভারত। সাউথ ব্লক সূত্রের দাবি, ইসলামাবাদকে প্রতিরক্ষা খাতে অর্থ সাহায্য বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত ট্রাম্প সরকার নিয়েছে, তার বীজ বপন হয়েছিল নভেম্বরেই। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিকে দেওয়া রিপোর্টে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ‘রাশিয়া এবং আমেরিকার সমর্থনের সুবাদে এফএটিএফ ২ নভেম্বরের বৈঠকে পাকিস্তানের কাছে রিপোর্ট চায়। বেশ কিছু জঙ্গি নেতা এবং সংগঠনকে অর্থসাহায্য বন্ধ করতে তারা কী পদক্ষেপ করেছে, সেটাও জানতে চাওয়া হয়।’ বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, লস্কর ই তইবা, জামাত উদ দাওয়া, ফালাহ ই ইনসানিয়াৎ-এর মতো রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি মহানন্দে পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। তাদের অর্থেরও কোনও অভাব হচ্ছে না। এই বিষয়গুলির কড়া নিন্দা করে স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তানের কাছেও এফএটিএফ রিপোর্ট চেয়েছে। আসন্ন প্যারিস বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে জবাব দেওয়ার কথা সে দেশের স্টেট ব্যাঙ্কের।
এফএটিএফ-এর আগের সম্মেলনে চিন কিছুটা পাকিস্তানের পক্ষ নিলেও, আমেরিকা এবং রাশিয়ার একযোগে বিরোধিতায় তারা বেশি দূর এগোতে পারেনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দীর্ঘদিন পর দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টিতে মস্কোকে পাশে পেয়েছে নয়াদিল্লি। এর আগে ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ সেনা মহড়া চালিয়েছিল রাশিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy