Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কুমারীত্ব পরীক্ষায় আপত্তি ইন্দোনেশিয়ায়

আইনরক্ষা তাঁদের কাজ। কিন্তু অর্থহীন নিয়মের গেরোয় পড়ে নিজেদেরই সম্মান রক্ষা করতে পারছেন না তাঁরা। এ বার তাই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইন্দোনেশিয়া সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে, পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে যাচ্ছেন এমন মহিলা প্রার্থীদের কুমারীত্বের পরীক্ষা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। অভিযোগ উঠেছিল, এর জন্য মহিলা প্রার্থীদের প্রথমে নগ্ন করা হয়।

সংবাদ সংস্থা
জাকার্তা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

আইনরক্ষা তাঁদের কাজ। কিন্তু অর্থহীন নিয়মের গেরোয় পড়ে নিজেদেরই সম্মান রক্ষা করতে পারছেন না তাঁরা। এ বার তাই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইন্দোনেশিয়া সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে, পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে যাচ্ছেন এমন মহিলা প্রার্থীদের কুমারীত্বের পরীক্ষা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। অভিযোগ উঠেছিল, এর জন্য মহিলা প্রার্থীদের প্রথমে নগ্ন করা হয়। তার পর ‘টু-ফিঙ্গার টেস্ট’ করা হয়। এক জন মহিলার পক্ষে দু’টোই যে অত্যন্ত অপমানজনক, সে কথা মনে করিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছে অবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক নিয়ম বন্ধ করুক ইন্দোনেশিয়ার সরকার।

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য প্রতিবাদ চলছে কয়েক দিন ধরেই। কিন্তু তাতেও বদলায়নি কিছু। ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসনের ব্যাখ্যা, কুমীরাত্বের পরীক্ষা শুধু মহিলাদের নয়, পুরুষ প্রার্থীদেরও নেওয়া হয়। যদিও পুরুষদের ক্ষেত্রে কী ভাবে তা সম্ভব, তা অস্পষ্ট। দু’টোর ক্ষেত্রে অবশ্য উদ্দেশ্য একটাই। প্রার্থীর শরীরে কোনও ধরনের যৌনরোগ থাকার আশঙ্কা রয়েছে কি না, তা যাচাই করে নেওয়া। কিন্তু এখন প্রশ্ন, ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’-এর মাধ্যমে যদিও বা ধরা পড়ে যে কোনও মহিলা প্রার্থীর সতীচ্ছদ (হাইমেন) নেই, তা হলে তা থেকে কী করে বোঝা সম্ভব যে তাঁর যৌনরোগ রয়েছে কি না? তা ছাড়া একমাত্র অবিবাহিত মহিলা প্রার্থীরাই পুলিশে যোগ দিতে পারবেন, এ নিয়ম কতটা যুক্তিযুক্ত?

উত্তর দিতে পারছে না ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ। তাদের মুখপাত্র রনি সম্পি এ-টুকু জানিয়েছেন, কেউ যদি কুমারী না হন, সে জন্য তাঁর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়বে না। যদিও পর্যবেক্ষক সংস্থার দাবি, চলতি মাসেই পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চাকরির বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, মহিলা প্রার্থীদের কুমারী হতেই হবে। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় জাতীয় পুলিশ হাইকমিশনার শ্রী রুমিয়াতি জানিয়েছেন, ২০১০-এ এই পরীক্ষা বন্ধের দাবি তুলেছিলেন তিনি। তাতে সহকর্মীদের কাছ থেকে পাল্টা প্রশ্ন আসে, “আমরা কি পুলিশে যৌনকর্মীদের নিয়োগ করব?”

অতএব পরীক্ষা চলছেই। যে স্মৃতির কথা মনে পড়লেই শিউরে ওঠেন উনিশ বছরের এক তরুণী। পশ্চিম সুমাত্রার পেকানবারুর ওই তরুণীর প্রশ্ন, “ওই কথা মনে করতে চাই না। ভীষণ অপমানজনক, কেন অপরিচিতের সামনে জামাকাপড় খুলতে হবে আমাদের? ”

তাঁদের এই দাবিতে পাশে দাঁড়িয়েছে মানবাধিকার সংস্থাও। তাতে কাজের কাজ কিছু হয় কি না, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE