তবে কি এ বার?
রাশিয়ার বায়ুসেনার বিমান হানায় প্রাণ হারিয়েছেন আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। এমনই একটি দাবি যাচাই করে দেখছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। যদিও তাদের কাছে এখনও এমন কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন সেনা। এই হামলার খবর আগে থেকে মার্কিন সেনাকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে রাশিয়া। তারা জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিকে সিরিয়ায় আইএস-এর প্রধান ঘাঁটি রাকার দক্ষিণ শহরতলিতে বিমান হানা চালায় রাশিয়া। তাদের কাছে খবর ছিল এখানে একটি গোপন বৈঠকের জন্য আইএস-এর বেশ কিছু নেতা জড়ো হবেন। ২৮ মে ড্রোন পাঠিয়ে তা যাচাই করে দেখে রাশিয়ার সেনা। খবর ছিল মধ্যরাতে বসবে এই গোপন বৈঠক। সেই মতো রাশিয়ার বায়ুসেনা আঘাত হানে।
এই হানায় বেশ কয়েক জন আইএস নেতা, ৩০ জন ফিল্ড কম্যান্ডার ও ৩০০ জন আইএস রক্ষী মারা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, এই বৈঠকে বাগদাদিও ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগুন থেকে বেঁচেও মৃতপ্রায়
কেন এই বৈঠকে এসেছিলেন বাগদাদি?
এক দিকে, রাশিয়া ও সিরিয়ার সেনার হানা। অন্য দিকে, আমেরিকার নেতৃত্বে আইএস বিরোধী জোটের হানা। এই সাঁড়াশি চাপে সঙ্কটের মুখে আইএসের অস্তিত্ব। ইরাকের মসুল শহরের একটি ছোট অংশে আইএস টিকে আছে। সিরিয়ার রাকা ও আশপাশের অঞ্চলে প্রবল আক্রমণের সামনে পড়েছে আইএস। রাকার চার পাশ অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই অবরোধ কাটিয়ে কী ভাবে পালিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে বৈঠক ছিল।
কিন্তু বাগদাদি কি সত্যই মারা গিয়েছেন?
বাগদাদি নিয়ে এমন খবর এর আগেও রটেছে। তবে সে ক্ষেত্রে হামালগুলি মার্কিন জোট চালিয়েছিল। একটি হামলায় বাগদাদির মৃত্যু না হলেও, গুরুতর জখম হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। এর পরে আইএসের ভিতরে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। কিন্তু বেশ কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় আইএস-এর নেতার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলেও বাগদাদিকে নিয়ে কিছু জানা যায়নি। তাই অনেকেই রাশিয়ার দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সিরিয়ান অবজারভেটারি ফর হিউম্যান রাইটস রামি আব্দুল রহমানের মতে খবরটি সত্য নয়। তাঁর কাছে খবর ছিল, বাগদাদি এই সময়ে রাকা নয়, ডের আল-জোর শহরের আশপাশে ছিল।
আইএসের ৪৬ বছর বয়সী নেতা ইব্রাহিম আল-সামারি ওরফে আবু বকর আল-বাগদাদি বিশ্বের অন্যতম কুখ্যাত জঙ্গিনেতা। বিন লাদেনের পরে এই স্তরের জঙ্গিনেতা বিরল। দীর্ঘদিন ধরেই বাগদাদিকে মারার চেষ্টা চলছে। আবু মুসা আল জারকায়ই-এর হাত ধরে আল-কায়দা ইন ইরাক (একিউআই) নামের যে জঙ্গি সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল তার অন্যতম সদস্য ছিলেন আবু বকর। কিন্তু বিন লাদেনের হত্যার পরে আমন আল-জাওয়াহিরির সঙ্গে মতভেদে আলাদা হয়ে যায় একিউআই। মার্কিন বিমান হানায় মৃত্যু হয় আবু মুসা আল জারকায়ই-এর। সংগঠনের নেতৃত্ব আবু বকরের হাতে আসে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দ্রুত ক্ষমতা বিস্তার করে বাগদাদির সংগঠন। জন্ম হয় ইসলামিক স্টেটের। তার পরে বাকিটা ইতিহাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy