সাংবাদিক জন ক্যান্টলি
তিনি নিখোঁজ প্রায় দু’বছর। সম্প্রতি ইউটিউবের একটি ভিডিওতে হঠাৎ তাঁর মুখ। তিনি এখন পণবন্দি আইএস জঙ্গিদের হাতে।
মার্কিন সাংবাদিক স্টিভেন সটলফ এবং ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড হেইনসের নামে এক মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার আইএস জঙ্গিরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে ওই জঙ্গি দলের হয়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক জন ক্যান্টলি কিছু বার্তা দিচ্ছেন। তাঁর পরনে কমলা শার্ট। পিছনে কালো পর্দা। ভিডিওতে এটা পরিষ্কার যে, জন বন্দি অবস্থাতেই ওই বার্তা দিয়েছেন। দেখা গিয়েছে, ৪৩ বছরের ওই চিত্রসাংবাদিকের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে অনেক রোগা হয়ে গিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলির মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিওতে সম্প্রতি সাড়া পড়ে যায় বিশ্বে। জেমস ফোলিরই বন্ধু এই ক্যান্টলি। তিনি ব্রিটিশ রাজকুমার উইলিয়াম ও হ্যারিরও বন্ধু। ২০১২ সালে সিরিয়ার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কভার করতে গিয়ে ফোলির সঙ্গে অপহৃত হন তিনি। আইএস জঙ্গিদের হাতে পড়ার আগে তাঁদের বন্দি করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে চলে অত্যাচার।
বন্দিদের রাখা হয়েছিল সিরিয়ার এক গোপন ডেরায়। সেখানে নৃশংস অত্যাচার করত জঙ্গিরা। তাঁদের জলে ডুবিয়ে জেরা শুরু করে জঙ্গিরা। বৈদ্যুতিক শকও দেওয়া হতো। মাঝেমধ্যে নিয়মকানুন না মানলে জেলের ভিতর থেকে বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে টেসার্স নামের এক ধরনের বন্দুক দিয়ে গুলি করা হত তাঁদের। তার ফলে কিছু ক্ষণের জন্য পঙ্গু হয়ে যেতেন বন্দিরা। বন্দিদের বক্তব্য, জঙ্গিদের মধ্যে ব্রিটিশ জঙ্গিরা সব চেয়ে বেশি নৃশংস ও বিকৃতমনস্ক। ফোলি ও ক্যান্টলিকে অপহরণ করার পর আরও কয়েক জন বন্দিকে ওই গোপন ডেরায় নিয়ে যায় জঙ্গিরা। জঙ্গিরা মনোরঞ্জনের জন্য বন্দিদের মধ্যে এক নতুন খেলা চালু করে। চার জন বন্দিকে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে বাধ্য করা হতো। ওই লড়াইয়ে যারা হেরে যেত, তাদের ওপর অত্যাচার বাড়াত জঙ্গিরা। যা হার মানায় মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও। তবে মুক্তিপণ পেয়ে অনেক বন্দিদেরই ছেড়ে দেয় জঙ্গিরা। কিন্তু ব্রিটেন ও আমেরিকা বন্দিদের মুক্তির জন্য মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করেছে। ভিডিওটিতে তাই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে আক্রমণ করে জন বলেন, “দেশের সরকার আমাকে ত্যাগ করেছে। আমার ভাগ্য ইসলামিক স্টেটের হাতে। হয়তো আমি মারা যাব। হয়তো বাঁচব। আমার হারানোর কিছু নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy