Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কষ্ট হলেও মানতে হবে, মত ইইউ-এর

হাওয়া যে উল্টো পথে, বোঝেননি অনেকেই। শেষমেশ ব্রেক্সিটের পক্ষে যখন ৫২ শতাংশ ভোট পড়ল, তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কোন পথে ব্রিটেনের সমঝোতা এগোবে, উঠে পড়ল সেই প্রশ্নও।

এর পর কী? ফল ঘোষণার পরে পার্লামেন্ট স্কোয়ারে। ছবি: এপি।

এর পর কী? ফল ঘোষণার পরে পার্লামেন্ট স্কোয়ারে। ছবি: এপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৯:৫৪
Share: Save:

হাওয়া যে উল্টো পথে, বোঝেননি অনেকেই। শেষমেশ ব্রেক্সিটের পক্ষে যখন ৫২ শতাংশ ভোট পড়ল, তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কোন পথে ব্রিটেনের সমঝোতা এগোবে, উঠে পড়ল সেই প্রশ্নও।

ইইউ-এর শীর্ষ নেতারা সাফ বলছেন, ‘‘পুনর্সমঝোতার জায়গা নেই। আমরা চাই ব্রিটেন দ্রুত গোটা বিষয়টির নিষ্পত্তি করুক, সেটা যত যন্ত্রণাদায়কই হোক না কেন।’’ ইউরোপীয় কাউন্সিল, কমিশন ও পার্লামেন্টের তিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক, জঁ ক্লদ জুনকার এবং মার্টিন শুল্জদের বক্তব্য, ‘‘এই বেরিয়ে যাওয়ায় দেরি ঘটলে সেটা সে দেশকেই অনিশ্চিতের দিকে ঠেলে দেবে।’’ ব্রাসেলসে জরুরি আলোচনা শেষে তাঁরা বলেছেন, এটা ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি। খারাপ লাগলেও ব্রিটেনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছি।’’

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

এখন ইইউ-এর অন্য দেশগুলোয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ১২ লক্ষ ব্রিটেনবাসী। আবার ইইউভুক্ত দেশের ৩০ লক্ষ অব্রিটিশ নাগরিক বাস করেন ব্রিটেনে। ইইউ-এর আইনের সুবাদে এত দিন তাঁরা জটিলতা ছাড়াই সহজে এ দেশ-ও দেশ করতে পারতেন। সেই অবাধ যাতায়াত এ বার প্রশ্নচিহ্নের মুখে। ভবিষ্যতে ব্রিটেন ও ইইউ-এর মধ্যে অবাধ যোগাযোগ নিয়ে নতুন চুক্তি করতে পারে। কিন্তু ইইউভুক্ত অভিবাসীদের (বিশেষত লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ডের মতো গরিব দেশের বাসিন্দারা) প্রবেশে আপত্তি তুলে ব্রেক্সিটপন্থীরা পালে হাওয়া কেড়েছেন। তাঁদের আন্দোলনের হাতিয়ার ছিল অভিবাসী-সমস্যা। তাই সে নীতি ফের পাল্টাতে গেলে চাপে পড়বে ব্রিটেনের নয়া সরকার।

উচ্ছ্বসিত বিচ্ছেদপন্থীরা। শুক্রবার লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে। ছবি: রয়টার্স।

এর ফলে ব্রিটেন থেকে আসতে হলে বা সেখানে পৌঁছতে এ বার ইইউভুক্ত দেশের মানুষকে পাসপোর্ট নিয়ে ভাবতে হবে। তা হলে এখন ব্রিটেনে যে ইউরোপীয় অভিবাসীরা রয়েছেন, তাঁরা বসবাসের এবং কাজের অধিকার হারাতে পারেন। তাঁদের ব্রিটেন থেকে নিজের দেশে ফেরত পাঠিয়েও দেওয়া হতে পারে।

কূটনীতিকরা বলছেন, যে চার দেশ অর্থাৎ ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে ‘সংযুক্ত’ ব্রিটেন গড়ে উঠেছে, এ বার আঁচ পড়তে পারে সেখানেও। ব্রেক্সিট ভোটের প্রণবতা থেকে দেখা গিয়েছে, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষ ইইউ-য়ে থাকতে আগ্রহী। দু’বছর আগেই স্বাধীনতার জন্য সওয়াল করে গণভোট পেরিয়ে এসেছে স্কটল্যান্ড। উত্তর আয়ারল্যান্ডও সে পথে হাঁটতে আগ্রহী। আরও একটা কথা ভাবাচ্ছে কূটনীতকদের। যে বিচ্ছেদের ইতিহাসে নাম লেখাল ব্রিটেন, তা অনুসরণ করতে এ বার অন্য অনেক দেশের দক্ষিণপন্থীরা ইইউ ছাড়ার ধুয়ো তুলবেন। তাই ইইউ-এর দেওয়াল থেকে আরও কত ইট খসে পড়বে, জোর চর্চা এখন তা নিয়েও।

এই সব আশঙ্কা থেকেই ব্রিটেনের সিদ্ধান্ত দুঃখজনক বলে জানান জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল। তাঁর মতে, ইইউ যেন এখনই দ্রুত সিদ্ধান্তে না পৌঁছয়। তাতে বিভাজনের ইতিহাস দীর্ঘ হবে। ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে সরব ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদও বলেছেন, এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপ আর আগের মতো হাঁটতে পারবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Brexit EU Britain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE