Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নেপালে এক হল দুই বাম দল

ভারতের নেব চিনেরও পাব!

হংকংয়ের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দু’নৌকোয় পা দিয়ে চলার এই কৌশলের কথা জানিয়েছেন ওলি। ভারত ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও খোলা সীমান্তের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘এটা ভাল।

খড়্গপ্রসাদ ওলি

খড়্গপ্রসাদ ওলি

সংবাদ সংস্থা 
বেজিং শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

আজই এক হয়েছে নেপালের দুই কমিউনিস্ট পার্টি। আজই নেপালের প্রধানমন্ত্রী খড়্গপ্রসাদ ওলি জানিয়ে দিলেন, চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে তাদের কাছ থেকে যথা সম্ভব সুবিধা পাওয়া এবং বেজিং-প্রীতি দেখিয়ে দিল্লিকে চাপে রাখা— এটাই হবে তাঁর কৌশল। যাতে ভারতের কাছ থেকে আরও বেশি সুবিধা আদায় করা যায়।

হংকংয়ের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দু’নৌকোয় পা দিয়ে চলার এই কৌশলের কথা জানিয়েছেন ওলি। ভারত ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও খোলা সীমান্তের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘এটা ভাল। এই যোগাযোগ আমরা আরও বাড়াব। তবে ভুললে চলবে না দু’টি প্রতিবেশী রয়েছে আমাদের। শুধু একটির উপরে নির্ভর করে থাকতে পারি না। (দু’টির মধ্যে) একটিই বিকল্প রাখতে পারি না।’’

ভারত সম্পর্কে ওলির বক্তব্য, ‘‘ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে কিছু অংশ রয়েছে, যারা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছিল। তবে ভারতীয় নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছেন নেপালের ঘরোয়া বিষয়ে ভবিষ্যতে নাক গলানো হবে না। সার্বভৌম অধিকারকে পরস্পর মর্যাদা দেবে।’’ নেপালিরা যে ভারতীয় সামরিক বাহিনীগুলিতে অবাধে যোগ দেন, সে বিষয়ে ওলির মন্তব্যেও কূটনীতির কাঁটা। বলেছেন ‘‘নতুন বিশ্বে বাস করছি আমরা। আর নেপাল নতুন পথে যাত্রা শুরু করেছে। যা কিছু পুরনো, দেশের ভিতরে ও পারস্পরিক আলোচনায় তা শোধরানো বা সময়োপযোগী করা যেতে পারে।

চিন সম্পর্কে ভিন্ন সুর ওলির। নেপালের পরিকাঠামো উন্নয়ন, সড়ক, এমনকী, রেল যোগাযোগের বিষয়ে অনেকটাই নির্ভর করছেন বেজিংয়ের উপরে। তাঁর কথায়, ‘‘দু’দেশের মধ্য ৩টি সড়ক তৈরি হয়ে যাবে কয়েক বছরের মধ্যেই। এর সঙ্গে চিন এক বার তিব্বতের কিইরং পর্যন্ত রেলপথ নিয়ে এলে তা নেপাল পর্যন্ত এগিয়ে নেওয়াটা সহজ হবে।’’ চিনেরও লক্ষ্য, ২০২০-র মধ্যে কিইরং থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে নেপালের রসুয়াগঢী পর্যন্ত রেলপথ নিয়ে যাওয়া। পরের নিশানা, আরও ৫০ কিলোমিটার এগিয়ে কাঠমান্ডু। ওলির দাবি, ‘‘চিন-নেপাল রেল ও সড়ক যোগাযোগ গড়ে উঠলে বিপ্লব আসবে ভারত-চিন বাণিজ্যে।’’ ২৫ কোটি ডলারের বুধি-গণ্ডকি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও ফের বেজিংয়ের দ্বারস্থ হবেন ওলি।

ওলির চিন-প্রীতি নতুন কিছু নয়। প্রথম দফায় সরকারে ছিলেন দশ মাস। তার মধ্যেই যে রকম দ্রুততার সঙ্গে তিনি চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে তৎপর হয়েছিলেন, নয়াদিল্লির কাছে তা চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছিল।

গত ডিসেম্বরের ভোটের দুই বাম পার্টি জোট বেঁধে লড়ে পার্লামেন্টের ২৭৫টি আসনের মধ্যে ১৭৪টির দখল পেয়েছে। নয়াদিল্লির কাছে স্পষ্ট, নেপালে ভারতবিরোধী প্রচার, দুই কমিউনিস্ট পার্টির জোট বাঁধা ও এখন মিশে যাওয়ার পিছনে রয়েছে বেজিংয়ের তৎপরতা। গত কাল রাতে কাঠমান্ডুতে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নেপালের দুই কমিউনিস্ট পার্টি এক হবে। সেই অনুযায়ী আজ সিপিএন-ইউএমএল এবং সিপিএন-মাওবাদী সেন্টার এক হয়ে তৈরি হল শক্তিশালী ব্লক, কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল। অভিন্ন বামপন্থী পার্টির শক্তিতে ভর করে ওলি এখন চিনের দিকে তাকিয়ে। ভারতের কাছে যা মাথাব্যথার কারণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khadga Prasad Oli Nepal India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE