Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
মহড়ায় সোল-ওয়াশিংটন

ব্যবসা ডকে, কিম যুদ্ধের মেজাজেই

বন্দর শহরের চেহারাটাই বলে দিচ্ছে— উত্তর কোরিয়ার রফতানি বাবদ অর্থনীতি ধুঁকছে। অথচ অভিযোগ, শাসক কিম জং উনের এতে বিশেষ হেলদোল নেই।

সংবাদ সংস্থা
রাসন শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
Share: Save:

আরও উঁচু হচ্ছে পাহা়ড়। কয়লার পাহাড়। খনি থেকে উঠছে, আর জমা হয়েই চলেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ তো বটেই, পিয়ংইয়ং থেকে থেকে কয়লা কেনার ক্ষেত্রে মাস চারেক আগে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে বেজিংও। উত্তর কোরিয়ার বন্দর শহর রাসন-এ আজ তাই ‘ডকে উঠেছে’ ব্যবসা। অথচ এখানকারই অন্য একটি ডক থেকে এন্তার মুনাফা কামিয়ে চলেছে রাশিয়ার একটি রফতানিকারক সংস্থা। কয়লা ছাড়া যে চলবে না চিনের!

বন্দর শহরের চেহারাটাই বলে দিচ্ছে— উত্তর কোরিয়ার রফতানি বাবদ অর্থনীতি ধুঁকছে। অথচ অভিযোগ, শাসক কিম জং উনের এতে বিশেষ হেলদোল নেই। তিনি একাগ্র শুধু পরমাণু পরীক্ষাতেই। আমেরিকাকে চাপে রাখতে এত দিন ধারাবাহিক ভাবে যুদ্ধের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছিলেন কিম। যার পাল্টা, আবার আজ থেকেই কোরীয় আকাশে যৌথ মহড়া শুরু করে দিয়েছে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার ২৩০টি যুদ্ধবিমান। যাকে সংবাদমাধ্যমের একাংশ বলছেন ‘ওয়ার গেম’। এ-ও বলা হচ্ছে যে, এত বড় মহড়া এর আগে কখনও হয়নি। কিমের তাই কপালে ভাঁজ। মুখে বলছেন, ‘যুদ্ধের উস্কানি’। একই সঙ্গে পাল্টা জবাবের প্রস্ততিও চালাচ্ছে পিয়ংইয়ং।

তা হলে কি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’-ই অবশ্যম্ভাবী? পেন্টাগনের দাবি, কিম যে ভাবে ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছেন, তাতে এমন মহড়ার দরকার ছিল। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার তো বলেই দিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়াই আমাদের কাছে সব চেয়ে বড় হুমকি।’’ তবে কিমকে রোখার ক্ষেত্রে সামরিক সংঘাতকেই একমাত্র পথ বলে বলে মানতে নারাজ তিনি।

উত্তর কোরিয়া যদিও কোনও রকম আলোচনাতেই যেতে চাইছে না। গত বুধবার কিম আরও একটি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছেন। আমেরিকার মূল ভূখণ্ড তাদের হাতের নাগালে বলে আবারও হুমকি দিয়েছে পিয়ংইয়ং। কিমের দাবি, আমেরিকাই যেচে পরমাণু যুদ্ধ বাঁধাতে চাইছে। কোরীয় উপদ্বীপে ‘পারমাণবিক জুয়া’ খেলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই প্রেক্ষিতেই আজ থেকে শুরু হওয়া আমেরিকার পাঁচ দিনের যুদ্ধ-মহড়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বার্ষিক মহড়া হিসেবে এর নাম দেওয়া হয়েছে ভিজিল্যান্ট এস। পেন্টাগন জানিয়েছে, যুদ্ধের জন্য তৈরি তাদের এফ-২২ যুদ্ধবিমান। মহড়ায় যোগ দিয়েছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও দু’দেশের প্রায় ১২ হাজার সেনা।

এ দিকে কিমের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে জাপানও। সেখানেও পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিমের দেশ আর যাতে একটিও পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করতে না পারে, সে জন্য চিনের কাছে সে দেশে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লা নেওয়া বন্ধ করলেও, চিন এটা কতটা মানবে — তা নিয়ে একটা সন্দেহ থাকছেই। কূটনীতিকদের একাংশও বলছেন, কয়লা রফতানি না হোক, জ্বালানি ছাড়া যে চলবে না উত্তর কোরিয়ার! তাদের কয়লা ব্যবসার ক্ষেত্রে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, রাসন বন্দরের দাপুটে ওই রুশ সংস্থার মাধ্যমে কেউ-কেউ বেআইনি ভাবে এখনও চিনে কয়লা পাঠাতে চাইছে। নিজের ক্ষতি করে যা করতে নারাজ ওই সংস্থাটি। আর মাথার উপর নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া তো আছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kim Jong-un US North Korea Coal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE