দৈত্যাকৃতি সেই হিমশৈল। ছবি: রয়টার্স।
অপেক্ষা ছিল অনেক দিন। এই বুঝি ভাঙে, এই বুঝি ভাঙে! বিজ্ঞানীরা তাক করেই ছিলেন। শেষমেশ পশ্চিম আন্টার্কটিকার ‘আইস শেল্ফ’ থেকে ভেঙে বেরিয়ে এল দৈত্যাকৃতি সেই হিমশৈল, ওজন এক লক্ষ কোটি টনেরও বেশি।
১০ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে কোনও এক সময়ে ভাঙন ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার উপগ্রহচিত্রে ভাঙনের শেষ মুহূর্তটি ধরা পড়েছে। ওই আইস শেল্ফটির নাম লার্সেন-সি। এটি থেকে প্রায় ৬০০০ বর্গ কিলোমিটার অংশ ভেঙে গিয়েছে। দক্ষিণ মেরুর আশপাশে যে সব জাহাজ ঘুরে বেড়ায়, প্রাথমিক ভাবে তাদের পক্ষে এটা সুখবর নয়। বিজ্ঞানীদেরও ভাবাচ্ছে, আগামী দিনে এই বিশাল হিমশৈল কত বিপজ্জনক হবে। লার্সেন সি ছোট হয়ে গিয়েছে ১২ শতাংশ। আন্টার্কটিক দ্বীপপুঞ্জের আকৃতিই বদলে গিয়েছে চিরতরে।
আইস শেল্ফ থেকে হিমশৈল ভেঙে বেরিয়ে আসা কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। তবে যতটা দ্রুত হারে এমন ঘটনা ঘটছে, তা ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। বহু দিন ধরে এর জন্য আঙুল উঠেছে বিশ্ব উষ্ণায়নের দিকে।
খুব সহজে বললে, ব্যাপারটা অনেকটা নদীর ভাঙনের মতো। বরফের ভূখণ্ডের কিনারা (আইস শেল্ফ) থেকে অতিকায় ‘পাড়’ ভেঙে ভাসতে শুরু করে সমুদ্রে। তাকেই বলে হিমশৈল। এ বারের হিমশৈলটির ওজন-আয়তন এত বিরাট যে, এটির উপরে সব সময়েই নজর রাখা হচ্ছে। এর নাম রাখা হতে পারে এ-৬৮। বিশ্বের অন্যতম বড় হ্রদ ইরির আয়তনের দ্বিগুণ এটি।
হিমশৈলটি ভাঙার আগে থেকেই জলে ভাসছিল। তাই সমুদ্রের জলস্তরে প্রভাব পড়েনি। এত ব়ড় অংশ শরীর থেকে বাদ গেলেও লার্সেন সি প্রাকৃতিক ভাবেই আবার বাড়তে পারে, বলছেন গবেষকরা। হিমশৈলটির ভবিষ্যৎ? নিজের চেহারায় এ ভাবে থাকতে পারে বা টুকরো টুকরোও হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয়টা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সে ক্ষেত্রে কয়েক দশক ধরে কিছু টুকরো রয়ে যাবে এই চত্বরেই। আর কিছু ভেসে যাবে উত্তরের দিকে উষ্ণ জলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy