Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভূমিকম্পের পর বুট পায়ে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ছে ফ্রিডা

মেক্সিকো সেনার ক্যানি ইউনিটের (কুকুর বিভাগ) সদস্য এই ফ্রিডা। পাঁচ বছরের ‘চাকরি জীবনে’ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ইতিমধ্যেই ৫২ জনকে উদ্ধার করেছে সে। মেক্সিকোয় মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পরে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনার ১৫টি কুকুর।

প্রস্তুত: টুইটারে ফ্রিডার এই ছবিটিই পোস্ট করেছে সেনা।

প্রস্তুত: টুইটারে ফ্রিডার এই ছবিটিই পোস্ট করেছে সেনা।

সংবাদ সংস্থা
মেক্সিকো সিটি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

সামনের দু’পায়ে বুট, জ্যাকেট, চোখে গগলস। ভেঙে পড়া সিমেন্টের চাঁইয়ের ফাঁকে নাক ঢুকিয়ে এক মনে প্রাণের খোঁজ করছে ফ্রিডা। বছর সাতেকের গোল্ডেন ল্যাবরাডরটির সতর্ক নজর, কোথাও কি নড়ে উঠল মাটি? মঙ্গলবার মেক্সিকোয় ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকারীদের সঙ্গে পা মিলিয়ে নাগাড়ে ছুটে চলেছে সে-ও।

মেক্সিকো সেনার ক্যানি ইউনিটের (কুকুর বিভাগ) সদস্য এই ফ্রিডা। পাঁচ বছরের ‘চাকরি জীবনে’ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ইতিমধ্যেই ৫২ জনকে উদ্ধার করেছে সে। মেক্সিকোয় মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পরে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনার ১৫টি কুকুর। সেই দলেরই তারকা ফ্রিডা। গত সপ্তাহে টুইটারে তার বেশ কিছু ছবির কোলাজ পোস্ট করেছে সেনা। তার পরেই হু হু করে বাড়ছে ফ্রিডার ভক্ত সংখ্যা। ৪ হাজার বার রিটুইট হয়েছে তার ছবি। সঙ্গে ঢালাও প্রশংসা। এক ভক্ত লিখেছেন, ‘‘ওর কাজটা মোটেই সহজ নয়। ওর বিশ্রাম দরকার। ভগবান ওকে রক্ষা করুক।’’ আর এক জনের কথায়, ‘‘এই জন্যই বলে কুকুর মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু।’’ ফ্রিডার নরম থাবা জোড়া রক্ষা করতে তার জন্য জুতো পাঠানোর কথাও বলেছে কেউ কেউ।

আরও পড়ুন:আজ ভোট, পাল্লা ভারী মের্কেলেরই

মঙ্গলবারের পর থেকে ভূমিকম্পে গুঁড়িয়ে যাওয়া মেক্সিকো সিটির এনরিক রেবসামেন প্রাথমিক স্কুলেই ঘাঁটি ফ্রিডার। প্রশিক্ষক আরাউজ সালিনাস জানিয়েছেন, বুধবার স্কুলে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছিল সে। তবে জল খেয়ে আর সামান্য বিশ্রামেই কেটে যায় ক্লান্তি। গত কাল ফের প্রাণের সন্ধানে দুই সহকর্মী এভিল ও ইকোর সঙ্গে স্কুলের একটি ভাঙা ঘরে ঢোকে সে। দেড় মাস বয়সের এই দুই সহকর্মী ফ্রিডার তুলনায় বেশ খানিকটা ছোট হওয়ায় প্রথমে ধ্বংসস্তূপের ভিতর ঢোকে তারাই। তারা প্রাণের আঁচ পেলে তবেই ঢোকে ফ্রিডা। মিনিট কুড়ির মধ্যে পাকা খবরটি দেয় সেই। সালিনাস জানিয়েছেন, কোনও দেহে প্রাণের সাড়া পেলে এক সঙ্গে চিৎকার শুরু করে তিন জন। আর দেহটি প্রাণহীন টের পেলেই চুপ করে যায় তারা। ধ্বংসস্তূপের গভীরে অনেক সময়ই বুকে হেঁটে ঢুকতে হয় ফ্রিডাদের। যা সচরাচর পারেন না উদ্ধার কর্মীর।

কী ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই চারপেয়েদের? সালিনাস জানিয়েছেন, দু’মাস বয়স থেকেই শুরু হয় প্রশিক্ষণ। তখনই ঠিক হয়ে যায় কার কাজ কী হবে। কারও কাজ হয় মাদক উদ্ধার, কারও বিস্ফোরক, কেউ আবার খুঁজে বার করে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের। কেউ ফ্রিডার মতো সাহায্য করে উদ্ধারকাজে। প্রাথমিক ভাবে বল বা খেলনা লুফতে শেখানো হয় তাদের। তার পর দৌড়। কাজে নামার আগে এক বছর ধরে প্রতি দিন তিন ঘণ্টা চলে প্রশিক্ষণ। মেক্সিকোর আগে ২০১৬ সালে ইকুয়েডরের ভূমিকম্পের সময়েও উদ্ধারকাজে সাহায্য করেছিল ফ্রিডা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE