Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তথ্য চুরির ফন্দিফিকির

ফেসবুকের সঙ্গে যোগসাজশে অ্যাপে আকর্ষণীয় প্রশ্ন। তাতে এক জন সাড়া দিলে তাঁর সব বন্ধুর তথ্য তাদের অজান্তে নিয়ে নেওয়া

বিপাকে ফেসবুক।

বিপাকে ফেসবুক।

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৩
Share: Save:

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কারা
• ব্রিটেনের তথ্য সংগ্রাহক এবং বিশ্লেষক সংস্থা। অভিযোগ, ২০১৬ সালে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করা এবং ব্রেক্সিট গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নত্যাগপন্থীদের সাহায্য করা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কী যোগ

• ২০১৫ সালে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে কাজ করেছিল। ব্যক্তিবিশেষকে লক্ষ্য করে কীভাবে ডিজিটাল প্রচার চালানো যায়, সেই কৌশল ছিল তাদের তৈরি। ভোটের আগে মার্কিন মানসিকতায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অবিশ্বাস ও ঘৃণা

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাজের মডেল

•ফেসবুকের সঙ্গে যোগসাজশে অ্যাপে আকর্ষণীয় প্রশ্ন। তাতে এক জন সাড়া দিলে তাঁর সব বন্ধুর তথ্য তাদের অজান্তে নিয়ে নেওয়া

•সকলের প্রতি মুহূর্তের অবস্থান, খাওয়া-দাওয়া, কেনাকাটা, লাইক, শেয়ার, চ্যাট থেকে এলাকা বা বুথ ভিত্তিক তথ্যভাণ্ডার গড়া

•পক্ষের বা বিপক্ষের লোকজনের প্রবণতার উপরে নিরন্তর নজরদারি, দ্রুত বিশ্লেষণ করে তাদের মানসিকতার মানচিত্র তৈরি

•মানসিকতা বদলানোর জন্য প্রচারের বিষয় তৈরি করা, লোক বুঝে তা নিরন্তর পাঠাতে থাকা

•প্রকাশ্যে আনা হয় না এমন বিষয়ে ঘৃণার প্রকাশ ঘটাতে উৎসাহ দেওয়া। কারও ক্ষেত্রে দেওয়া হয় আনুগত্য ও সমর্থনের পাঠ

• মানসিকতা বুঝে ব্যক্তিবিশেষকে বিশেষ ওয়েবসাইট বা ব্লগ পড়তে উৎসাহ দেওয়া। এভাবে ব্যক্তিবিশেষকে বাছাই করা তথ্যের দুনিয়ায় ঢুকিয়ে দেওয়া। যা তাঁদের রাজনৈতিক পছন্দকে প্রভাবিত করবে

• বিরোধী প্রার্থীদের টেপ তৈরি করা, তাদের কাছে মহিলা পাঠিয়ে ফাঁদে ফেলা

আরও পড়ুন: দুঃখিত, সব দায় আমারই, ক্ষমা চাইলেন মার্ক

প্রথমে একটি অ্যাপ যা লোক টানে

• ২০১৪ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলেকজান্দর কোগানকে ৮ লক্ষ ডলার দেওয়া হয় অ্যাপ তৈরি করতে। দিজইজইওরডিজিটাল লাইফ নামে ‘পার্সোনালিটি টেস্ট’ অ্যাপে সাড়া দেন ২ লক্ষ ৭০ হাজার জন। তার সূত্রেই কোগানের হাতে চলে আসে ৩০ লক্ষ ফেসবুক প্রোফাইলের নাড়িনক্ষত্র। কোগান তা দেন অ্যানালিটিকাকে। অ্যানালিটিকা মোট ৫ কোটি প্রোফাইলের তথ্য জোগাড় করেছিল বলে অভিযোগ। যা দিয়ে তারা তৈরি করে মার্কিন ভোটারদের মানসিকতার মানচিত্র।

মাথাপিছু মগজধোলাই

• ট্রাম্প ও বিরোধী শিবিরের লোক জন কে কী বলছেন, ভাবছেন, শেয়ার করছেন সেই বুঝে তৈরি হয় কৌশল। পক্ষ বুঝে তৈরি হয় প্রচারের বিষয়। প্রচুর সাইট ও ব্লগ তৈরি করে ঢালা হয় সে সব। এ বার প্রত্যেকের মানসিকতা বুঝে আলাদা বিষয় পাঠানো হতে থাকে ফেসবুকে, ই মেলে বা অন্য অজস্র ভাবে। কারও মনে তৈরি করা হয় বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা। যা ট্রাম্পকে শ্বেতাঙ্গ ভোট পেতে সাহায্যও করেছে বলে অভিযোগ।

ভারতের ওবিআই-এর ভূমিকা

• কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতীয় শাখা অমরিশ ত্যাগী পরিচালিত ওভলেনো বিজনেস ইন্টেলিজেন্স (ওবিআই থেকে) জানিয়েছিল, ভারতীয়-মার্কিনরা কাজ খোয়ানোর আশঙ্কা করছেন। তবে পাকিস্তান সম্পর্কে ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব তাঁরা পছন্দ করছেন। ট্রাম্প এর পর থেকে আমেরিকার উন্নতিতে ভারতীয়দের অবদানের কথা বলতে থাকেন। বিশেষ করে হিন্দুদের তিনি পছন্দ করেন, এটাও উল্লেখ করেন। এমনকী, ট্রাম্প-কন্যা হিন্দু মন্দিরে গিয়ে দেওয়ালি উদযাপন করলে ভাল হয়, এমন পরামর্শ গিয়েছিল ওবিআই থেকে।

ফেসবুকের দায়টা কোথায়?

• ফেসবুকের বক্তব্য, তথ্যচুরির খবর জানার পর ২০১৫ সালে ওই অ্যাপটি তারা সরিয়ে দেয়। কিন্তু অভিযোগ, তারাই ওই অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের বিশেষ ব্যবস্থা করেছিল বা গোপন অনুমতি দিয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE