এই সেই নিজস্বী।
জাতে বাঁদর হলেও সে বাঁদর ছেলে নয়। শখের ক্যামেরাম্যান হিসেবে বিশ্বখ্যাত।
নাম তার নারুতো। বছর সাতেক আগে হাতের কাছে একটি ক্যামেরা পেয়ে সে ‘সেল্ফি’ তুলেছিল খানকতক। পান্তুয়া-রঙা চোখ, দাঁত বার করা হাসি— ইন্দোনেশিয়ার ‘ক্রেস্টেড ম্যাকাক’ প্রজাতির এই বাঁদরের নাম ছড়িয়েছিল দুনিয়া জুড়ে। কিন্তু ‘মানুষের’ আদালত এই নিয়ে দু’বার রায় দিয়েছে, নিজের তোলা নিজের ছবির উপরেও কোনও হক নেই তার। কারণ তেমন কোনও আইনই নেই। উল্টে আইন বলছে, ছবির স্বত্ব দাবি করতে পারে শুধু মানুষ। বরং পশু অধিকার রক্ষা আইনে তার জন্য কিছু করা যেতে পারে।
বাঁদর থেকেই মানুষ হওয়ার তত্ত্ব যতই থাক, নারুতোর তাই কপাল মন্দ!
বন্যপ্রাণ চিত্রগ্রাহক ডেভিড জন স্লেটার ২০১১-য় গিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ায়। সেখানেই নারুতোর সঙ্গে ‘আলাপ’। তার বয়স তখন সাত। স্লেটারের ক্যামেরা নেড়েচেড়ে দেখার ফাঁকেই নারুতোর ওই নিজস্বী তোলা। সেই ছবিগুলো পরে নিজের একটি বইয়ে ব্যবহার করেছিলেন স্লেটার।
সেখানেই গন্ডগোল। ২০১৫ সালে স্লেটার এবং ওই বইয়ের প্রকাশনা সংস্থার বিরুদ্ধে নারুতোর হয়ে মামলা করে ‘পিপ্ল ফর এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিম্যালস’ (পিটা)। তারা বলে, ছবিগুলো যে হেতু নারুতোর তোলা, তাই উপরে স্লেটারের কোনও অধিকার নেই। ব্যবসায়িক কারণে ব্যবহার করা যাবে না নারুতোর ছবি। স্লেটার এবং তাঁর দলবল যুক্তি দেন, নারুতো যে-হেতু বাঁদর, তাই ছবির উপরে তার স্বত্বাধিকার থাকার কথা নয়। ২০১৬-র জানুয়ারিতে মার্কিন আদালত স্লেটারদের যুক্তিই মেনে নেয়। ‘পিটা’ আপিল আদালতে যায়। গত সোমবার সেই আদালতেও ধাক্কা। বলা হয়, মানুষ ছাড়া কোনও জীবই ছবির স্বত্ব চাইতে পারে না।
একটি সমঝোতা অবশ্য হয়েছে। ঠিক হয়েছে, ভবিষ্যতে নারুতোর নিজস্বী থেকে আসা মুনাফার ২৫% স্লেটার দান করবেন তার জাতভাইদের, অর্থাৎ ক্রেস্টেড ম্যাকাক প্রজাতির বাঁদরদের সংরক্ষণে। ‘আবেদনকারী’ নারুতোর তা জানার কথা নয় অবশ্যই। এখন যার বয়স ১৪!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy