Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Vada Pao

চাকরি যাওয়ার পর বড়া পাও বেচে কোটিপতি হলেন এঁরা!

শুরুটা অবশ্য মোটেই খুব একটা সহজ হয়নি। প্রচারের স্বার্থে আর বিক্রি বাড়াতে লন্ডনে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিনামূল্যে বড়া পাও মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন সুজয় আর সুবোধ। শুরুটায় অনেকেই খেতে রাজি হননি, হোক না যতই ‘ফ্রি কা মাল’!

নিজেদের রেস্তোরাঁর সামনে সুজয় আর সুবোধ। ছবি: সংগৃহীত।

নিজেদের রেস্তোরাঁর সামনে সুজয় আর সুবোধ। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ১২:০২
Share: Save:

প্রায় সাত বছর আগের কথা। সে সময় আর্থিক মন্দার চোটে বহু কোম্পানির ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। অনেকের মতোই কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন লন্ডনের একটি পাঁচতারা হোটেলে কর্মরত এক ভারতীয় যুবক। নাম সুজয় সোহানি। আদপে মুম্বইয়ের বাসিন্দা সুজয় ওই হোটেলে ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ’ বিভাগের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। বিপাকে পড়ে সুজয় ফোন করেন লন্ডনে তাঁর এক ভারতীয় বন্ধু সুবোধ জোশীকে। সুবোধও তখন বেকার। দুই বন্ধুর আলোচনায় মুম্বইয়ের বিখ্যাত বড়া পাও বিক্রির ভাবনা উঠে আসে। অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করেন লন্ডনেই বিক্রি করবেন বড়া পাও। এখানকার মানুষকে ভারতীয় ‘স্ট্রিট ফুড’-এর স্বাদ বোঝাবেন। কিন্তু ভারতীয় ‘স্ট্রিট ফুড’ বলে সে তো আর লন্ডনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্রি করা চলে না! অনেক খোঁজ খবরের পর একটি আইসক্রিম ক্যাফে তাঁদের জন্য খানিকটা জায়গা ছেড়ে দিতে সম্মত হল। তবে ওই জায়গার জন্য সুজয় আর সুবোধকে যা ভাড়া দিতে হবে প্রতি মাসে তা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। তাতেই রাজি হয়ে যান দু’ জন। শুরু করেন বড়া পাও বিক্রি। দাম ১ পাউন্ড।

আরও পড়ুন:
আমাজন থেকে ৮ কোটি টাকার পণ্য হাতিয়ে অবশেষে গ্রেফতার দম্পতি

যুবককে পেট্রোল পাম্পে ধূমপানের ‘উচিত শিক্ষা’ দিলেন পাম্প কর্মী! দেখুন ভিডিও

শুরুটা অবশ্য মোটেই খুব একটা সহজ হয়নি। প্রচারের স্বার্থে আর বিক্রি বাড়াতে লন্ডনে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিনামূল্যে বড়া পাও মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন সুজয় আর সুবোধ। শুরুটায় অনেকেই খেতে রাজি হননি, হোক না যতই ‘ফ্রি কা মাল’! কিন্তু হাল ছাড়েননি দুই যুবক। তার পর দেখতে দেখতে স্থানীয় মানুষজনের পছন্দের তালিকায় ঠাঁই করে নিল ভারতীয় ‘স্ট্রিট ফুড’ বড়া পাও। একই সঙ্গে খদ্দের আর বিক্রি বাড়তে লাগল সুজয় আর সুবোধের। ক্যাফের জায়গাও তখন ছোট মনে হতে লাগল। ফলে ক্যাফের পাশেই আরও একটি ছোট ফুড স্টল খোলেন তাঁরা। তত দিনে স্থানীয় মানুষের কাছে বেশ পরিচিত দুই ভারতীয় যুবকের উদ্যোগ ‘শ্রীকৃষ্ণ বড়া পাও’। মাস খানেকের মধ্যে একটি পঞ্জাবী রেস্তোরাঁ তাঁদের এক সঙ্গে ব্যবসার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান তাঁরা। এর পর আর ভাবতে হয়নি সুজয় সোহানি আর সুবোধ জোশীকে।

তাঁদের ‘শ্রীকৃষ্ণ বড়া পাও’-এর স্টল বর্তমানে একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁয় পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় লন্ডনে এই রেস্তোরাঁর তিন তিনটি শাখাও রয়েছে। বড়া পাও তো আছেই, তার সঙ্গে আরও সাত রকমের ভারতীয় মুখরোচক ‘স্ট্রিট ফুড’ পাওয়া যায় এখানে। ছোট বড় নানান অনুষ্ঠানে খাবারের অর্ডারও নেওয়া হয় এই ব্যস্ত ‘স্ট্রিট ফুড’-এর রেস্তোরাঁয়। একটা সময় যেখানে মাসে ৩৫ হাজার টাকা দোকানের ভাড়া গুনতে বেগ পেতে হয়েছিল সুজয় আর সুবোধকে আজ তাঁদেরই তিনটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন ৩৫ জন কর্মী, বছরে উপার্জন প্রায় ৪.৪ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE