শাহিদ আব্বাসি।
তাদের একমাত্র চিন্তার কারণ ভারত। তাই স্বল্প পাল্লার পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডারে মজুত রেখেছে পাকিস্তান। আমেরিকার ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস’-এ বক্তৃতা দিতে এসে এ কথা জানালেন পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি। সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, তাঁদের পরমাণু ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’ ব্যবস্থা এতটাই সুরক্ষিত যে সন্ত্রাসবাদীরা কোনও দিনই সেই অস্ত্র ভাণ্ডারের নাগাল পাবে না।
পাক পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডারের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে নিউক্লিয়ার কম্যান্ড অথরিটি (এনসিএ)। পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তাঁদের মতো সুরক্ষিত ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’ ব্যবস্থা অন্য কোনও দেশের নেই। খকন বলেন, ‘‘অন্য দেশগুলির মতো কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র আমাদের নেই। ভারতের ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’-এর কথা মাথায় রেখেই আমরা শুধু স্বল্প পাল্লার পরমাণু ভাণ্ডার তৈরি রেখেছি।’’ খকনের আরও দাবি, গত ১৫ বছর ধরে টানা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে পাকিস্তান। তাঁরা যে দায়িত্বশীল ‘বিশ্ব নাগরিক’, এই লড়াই সেটাই প্রমাণ বলে মনে করেন তিনি।
যদিও পরমাণু অস্ত্রের ক্ষেত্রে পাকিস্তান নিজেদের যতই ‘সংযত’ বলে দাবি করুক না কেন, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের ব্যাখ্যা কিন্তু অন্য। আমেরিকার প্রথম সারির কিছু দৈনিকের বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়ার পরে পাকিস্তানই একমাত্র দেশ যারা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডারের বহর বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে কোনও শব্দ খরচ করেননি খকন। উল্টে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব পাশ করা উচিত বলে ফের দাবি তুলেছেন তিনি। প্রতি বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে এসে পাক রাষ্ট্রপ্রধানেরা এই দাবি তুলে থাকেন। খকনও ব্যতিক্রমী নন। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে বরাবর অভিযোগ করে এসেছে পাকিস্তান। একই পথে হেঁটেছেন নয়া পাক প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:ত্রাণের নৌকা আটকে ক্ষোভ মায়ানমারে
আফগান নীতি নিয়েও ভারতকে ঠুকেছেন খকন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঠিক উল্টো সুরে কথা বলেছেন খকন। সম্প্রতি তালিবানমুক্ত নয়া আফগানিস্তান গঠনে ভারতের সদর্থক ভূমিকার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। খকন বলেছেন, ‘‘আমার তো মনে হয় আফগানিস্তানে ভারতের সামরিক বা রাজনৈতিক প্রভাব শূন্য শতাংশ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভারত যদি আর্থিক সাহায্য করতে চায়, ভাল। কিন্তু তাদের সামরিক বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আফগান সমস্যার সমাধান করবে না, বরং আরও বাড়াবে।’’ আফগান নীতি ঘোষণার সময় সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে যথেষ্ট চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন ট্রাম্প। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে হক্কানি গোষ্ঠীর যোগের কথাও ফের অস্বীকার করেছেন খকন। উল্টে হাফিজ সইদের মতো জঙ্গিকে গৃহবন্দি রাখার কৃতিত্ব নিতে চেয়েছেন। সওয়াল করেছেন পাকিস্তান-আমেরিকার বন্ধুত্বের পক্ষে। খকন বলেছেন, ‘‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক ৭০ বছরের, তা আফগান নীতির ঊর্ধ্বে। এই বন্ধুত্ব এগিয়ে নিয়ে যাব।’’
পাক প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কিছুক্ষণ আগেই অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নাম না করে তোপ দাগেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, ‘‘যে সমস্ত দেশ সন্ত্রাসকে রাষ্ট্রীয় নীতি করে ফেলেছে, সেখানে সহজেই আশ্রয় পায় সন্ত্রাসবাদীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy