Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডনে অনাবাসী-সভার আয়তন কমছে মোদীর

লন্ডনে কমনওয়েলথের ৫৩টি দেশের শীর্ষবৈঠক ১৮ ও ১৯ তারিখ। তার আগে সোমবার মোদী প্রথমে যাবেন স্টকহলমে।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০১
Share: Save:

আগামী সপ্তাহে সুইডেন ও ব্রিটেন সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও ঘরোয়া বৈঠক হবে। পারস্পরিক বেআইনি অভিবাসী প্রত্যর্পণ নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে সমঝোতাপত্র (মউ) সইয়ের ব্যাপারেও খানিকটা অগ্রগতিও হতে পারে। আজই নয়াদিল্লিতে মোদী মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। তবে এর পাশাপাশি এ বারের সফরেও মোদীর নজর মূলত অনাবাসী ভারতীয়দের দিকে। বিদেশ সফরে গেলেই নিয়ম করে যাঁদের কাছে হাজির হন তিনি। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে কিছুটা তফাত আছে। গত কয়েক বছরে নিউ ইয়র্ক, সিডনি, সাংহাই, সিঙ্গাপুর, আবু ধাবি, বাহরাইন, জোহানেসবার্গ, এমনকী এই লন্ডনে যেমন বিশাল ভিড় টেনে বক্তৃতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী, এ বারে তেমনটি হচ্ছে না।

লন্ডনে কমনওয়েলথের ৫৩টি দেশের শীর্ষবৈঠক ১৮ ও ১৯ তারিখ। তার আগে সোমবার মোদী প্রথমে যাবেন স্টকহলমে। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে তাঁর বক্তৃতা শুনতে আসার কথা ১,১০০ অনাবাসীর। পরের দিন লন্ডনে ২,০০০ অনাবাসীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী কথা বলবেন প্রশ্নোত্তরের ধাঁচে। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, বড় সভা জলুস হারিয়েছে। তাই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের মতো বড় সমাবেশ নয়, মোদী নিজেই চাইছেন এ বারে একটু অন্য ভাবে হোক— ‘ভারত কি বাত, সবকে সাথ’। বিদেশনীতি থেকে জিএসটি, নানা প্রশ্ন উঠবে সেখানে। ইন্টারনেট-টিভিতে তা সরাসরি দেখানো হবে।

ভারতীয় কূটনীতিকরা জানাচ্ছেন, মোদীর এই সফরে ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে বড় কোনও পরিবর্তন হতে যাচ্ছে, এমনটা নয়। ব্রেক্সিটের জটই এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ব্রিটেন। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কেমন কী দাঁড়াবে, এখনই তা ছকে ফেলাটা কার্যত সম্ভবই নয় টেরেসা মে সরকারের পক্ষে। ভারতের তরফেও তাই বেশি কিছু আশা করা হচ্ছে না। ব্রিটেনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্যের বিষয়টিকে আপাতত অগ্রাধিকারের তালিকাতেই রাখছে না নয়াদিল্লি। তা ছাড়া, চিনা ছাত্রদের জন্য ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করলেও ভারতের ক্ষেত্রে ব্রিটেন তা করেনি। এটা মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি।

প্রশ্ন রয়েছে কমনওয়েলথের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও। অনেকেই মনে করেন, এটাকে নিজেদের এক সময়ের উপনিবেশগুলির মাথায় থাকার ব্রিটিশ চেষ্টা বলে মনে করেন। মরিশাসের নেতৃত্বে কমনওয়েলথেরই ৩৩টি দেশ ব্রিটেনকে তার অতীত দুষ্কর্মের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় তুলতে চায়। আজ তো ব্রিটেনের লেবার পার্টিই দাবি তুলেছে, ঐতিহাসিক ভুলগুলির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে টেরেসা মে সরকারকে। নেলসন ম্যান্ডেলাকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করাটা যার একটি। এই সব পুরোনো প্রশ্নকে সঙ্গী করেই ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ আগামী সোমবার পাঁচ দিনের কমনওয়েলথ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী বক্তৃতা দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলবেন, বিশ্বের অন্যতম অনুন্নত দেশের তকমা ঝেড়ে ফেলে সব থেকে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলির একটি হয়ে ওঠার কথা। জানাবেন, কী ভাবে ২০২১-এর মধ্যে মধ্য আয়ের ও ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত দেশ হয়ে ওঠার পথে এগোতে চায় বাংলাদেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Non-resident Indians London
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE